ছবি শুধু ছবি নয়, কেউ বলছে বাস্তবের জ্বলন্ত নিদর্শন আবার কারও মতে একপাক্ষিক মত। তবে দর্শকের উৎসাহ ১১দিনেও একই রকম। অষ্টম দিনে বাহুবলী ও দঙ্গলের রেকর্ড চূর্ণ করেছিল বিবেক অগ্নিহোত্রীর দ্য কাশ্মীর ফাইলস। এবার দ্বিতীয় সপ্তাহে স্পাইডারম্যানকেও ছাপিয়ে গেল ছবিটি।
শুধু স্পাইডারম্যানই বা কেন, সূর্যবংশী, ৮৩-এর দ্বিতীয় সপ্তাহের সংগ্রহের প্রায় দুই গুণ অর্জন করেছে ওই ছবিটি। ওই তিন ছবির দ্বিতীয় সপ্তাহে আয় ছিল ৭০ কোটি ১৫ লক্ষের কাছাকাছি। সেখানে দাঁড়িয়ে কাশ্মীর ফাইলসের ২০০ কোটি ছুঁতে আর ২০ কোটির অপেক্ষা। ১১ দিন পর ওই ছবি সংগ্রহে ১৮০ কোটির কাছাকাছি।
ট্রেড অ্যানালিস্ট তরণ আদর্শ এই প্রসঙ্গে মঙ্গলবার একটি টুইট করেছেন। সেখানে তিনি লেখেন, পোস্ট প্যান্ডেমিক সময়ে দ্বিতীয় সপ্তাহে সবচেয়ে বেশি আয় করেছে এই ছবি। শুধু রবিবারেই ওই ছবি আয় করেছে ২৬ কোটি ২০ লক্ষ টাকা। সোমবার, কাজের দিন তা সত্ত্বেও ছবির সংগ্রহে ১২ কোটি ৪০ লক্ষ টাকা।
১৯৯০ সালে কাশ্মীর উপত্যকা থেকে কাশ্মীরি পন্ডিতদের উচ্ছেদের পটভূমিকায় গঠিত ছবিটি। মুক্তির পর থেকেই ছবিটির পক্ষে-বিপক্ষে নানা মন্তব্য প্রতিদিনই সামনে আসছে। পরিচালককে দেওয়া হয়েছে ওয়াই ক্যাটাগরির নিরাপত্তা। তাঁর দাবি, তিনি খুনের হুমকি পাচ্ছেন ক্রমাগত। এরই পাশাপাশি কেন্দ্রীয় সরকার সরাসরি এই ছবি পক্ষেই মুখ খুলেছেন, অন্য দিকে বিরোধী রাজনৈতিক নেতাদের এই ছবি নিয়ে ব্যক্তি ও দল বিশেষে ভিন্ন সুর শোনা গিয়েছে। মুখ খুলেছেন ন্যাশানাল কনফারেন্স নেতা তথা কাশ্মীরের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী ওমর আব্দুল্লাহ।
শুক্রবার ওমর আব্দুল্লাহ বলেন, এই ছবিতে প্রচুর মিথ্যা তথ্য রয়েছে। সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে “এটা যদি কোনও তথ্যচিত্র হত তবে কোনও সমস্যা নেই, তবে ছবির নির্মাতারাই দাবি করেছেন সত্যের ওপর নির্ভর করেই এই সিনেমা তৈরি করা হয়েছে। আসলে এই ছবিতে অনেক মিথ্যা দেখান হয়েছে এবং সবথেকে বড় মিথ্যা এটাই যে এখানে যে সময়ের কথা তুলে ধরা হয়েছে তাতে বলা হয়ছে, সেই সময়ে কাশ্মীরে ন্যাশানাল কনফারেন্সের সরকার ছিল।” ওমর বলেন, “ছবিতে দেখান হয়েছে কাশ্মীরি পণ্ডিতদের ওপর অত্যাচারের সময় আমাদের দল সরকারে ছিল। কিন্তু ১৯৯০ সালে ন্যাশানাল কনফারেন্স ক্ষমতায় ছিল না। কিন্তু সেই সময় বিজেপির সমর্থনের থাকা প্রধানমন্ত্রী ভিপি সিংয়ের প্রতিনিধি তথা রাজ্যপালের হাতে রাজ্যের শাসনভার ছিল।”
অন্যদিকে দিন কয়েক আগে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী সিনেমাটির দেখার পক্ষে মুখে খুলেছিলেন। তিনি বলেছিলেন, “বাকস্বাধীনতার ধ্বজাধারী জামাতরা ক্ষেপে রয়েছে বিগত পাঁচ – ছয় দিন ধরে। তথ্য ও সত্যের ভিত্তিতে সিনেমাকে মূল্যায়ন না করে, এটিকে খাটো করার জন্য এক প্রচার চলছে। পুরো ব্যবস্থাটাই এমন যে কেউ সত্য দেখানোর চেষ্টা করে, তার বিরোধিতা করে। তারা (দ্য কাশ্মীর ফাইলস) সত্য হিসাবে যা দেখতে চায়, তা উপস্থাপন করার চেষ্টা করেছেন। সত্য কেউ যাতে না দেখে, সে জন্য গত কয়েকদিন ধরে ষড়যন্ত্র চলছে।” পক্ষে-বিপক্ষে চলছে নানা কথা। তবে ছবি মুক্তির আগে এই ছবির প্রচার সেভাবে হয়নি। তবু দর্শক উৎসাহী। দুশো কোটি ছুঁতে আর বেশি দেরি নেই।