২৯ বছরের শ্যানটেল ব্রোটন, এপ্রিল মাসে জন্ম দেন দুই যমজ সন্তানের। এক ছেলে, এক মেয়ে। অয়ন ও আজিরা। অয়নের গায়ের রং ফর্সা, ধবধবে। নীলচে চোখের মণি। মেয়ে আজিরা শ্যামবর্ণা, চোখের মণি খয়েরী। ছেলে-মেয়ের গাত্রবর্ণে এমন ফারাক দেখে চোখ কপালে জন্মদাত্রীর। ভাবতে বসেছিলেন, এও কী ভাবে সম্ভব? বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন, ১০ লক্ষ মানুষের মধ্যে মাত্র ১ জোড়া যমজের মধ্যে গায়ের রং-এ এরকম ফারাক দেখা যায়। শ্যানটেলের গাত্রবর্ণ ফর্সা। তবে তাঁর মায়ের পরিবার নাইজেরিয়ান। ফলে তিনিও মিশ্র জাতি। শ্যানটেলের সঙ্গী অ্যাশটন, বয়স ২৯। তিনিও অর্ধেক জামাইকান আর অর্ধেক স্কটিশ।
জন্মের সময় অবশ্য শ্যানটেল বুঝতে পারেননি যে আজিরার গাত্রবর্ণ তুলনায় অনেকটাই চাপা হতে পারে। তবে যত দিন গড়িয়েছে তত যেন মেয়ে আজিরার গায়ের রং প্রকট হয়েছে। সেই সঙ্গে দুজনের স্বভাবেও রয়েছে বৈপরীত্য। মা শ্যানটেল জানান, আজিরা স্বভাবে ভীষণই শান্ত। নিজের খেয়ালে থাকেয যেখানে অয়ন সব সময় কারোর না কারোর মনযোগ চায়। সব সময় ঘুরতে চায়। সঙ্গে এটাও চায় যে কেউ না কেউ তার সঙ্গে যেন কথা বলে। আজিরার চুলের প্রকৃতি কালো কোঁকড়ানো। অন্যদিকে অয়নের চুল সম্পূর্ণ আলাদা, সোনালি রঙের। শ্যানটেল এবং অ্যাশটন দুজনেই কিন্তু তাঁদের সন্তানকে নিয়ে খুশি। তাঁদের কথায়, আমাদের ছোট সুখী পরিবার। দুই সন্তান যে ভাবে নিজের মত করে থাকতে চাইবে সেই ভাবেই থাকবে। তাঁরা কোনও বাধা দেবেন না।
জন্মের পর ভাই-বোনকে দেখতে একই রকম ছিল। তবে যত দিন গড়িয়েছে ততই যেন আজিরার গায়ের রং চেপে গিয়েছে। বন্ধুবান্ধব বা পরিবারের বাকি সদস্যদের একথা জানালেও প্রথমে কেউই মানতে চাননি। এমনকী মা শ্যানটেলকে অনেকেই প্রশ্ন করেছিলেন, সত্যিই কি তাঁর যমজ সন্তান? তাঁর উত্তর শুনে সকলেই অবাক হয়েছেন। তবে আজিরাকে কেউই প্রথমে সহজে মেনে নিতে পারেননি। বরং কী ভাবে আজিরা শ্যামবর্ণের হল তাই নিয়েও চোখ কপালে তুলেছেন অনেকেই। তবে বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন এমনটা হতেই পারে। উভয়ের শরীরেই জিন এক। একই শুক্রাণু থেকে জন্ম হলেও বেড়ে উঠেছে দুটি আলাদা ডিম্বাশয়ে। যে কারণে তাদের মধ্যে এতটা বৈপরীত্য। দেখে মনে হতে পারে জাতিগত ফারাকও রয়েছে। তবে ১০ লাখে মোটে ১ জনের ক্ষেত্রে এমনটা ঘটে। এমন ঘটনা খুবই বিরল। সোশ্যাল মিডিয়ায় ছবি শেয়ার পরও অনেকেই নানা মন্তব্য করেছেন। কেউ যেমন তাঁদের কিংবদন্তি বলেছেন তেমনই একজন মজা করে লিখেছেন- ‘রসগোল্লা’ আর ‘পান্তুয়া’।