Oppenheimer: সঙ্গমের সময় প্রেমিকার বক্ষদেশ জুড়ে গীতা, ‘ওপেনহাইমার’-কে তুলোধনা অনুরাগ ঠাকুরের

TV9 Bangla Digital | Edited By: বিহঙ্গী বিশ্বাস

Jul 24, 2023 | 7:17 PM

Oppenheimer: কোন দৃশ্য নিয়ে এত ধুন্ধুমার? ছবিতে দেখা যাচ্ছে, সিলিয়ান মার্ফি ওরফে ওপেনহেইমারের প্রেমিকা জিন ট্যাটলক সঙ্গমের ঠিক পরেই আলমারি থেকে একটি বই বার করেন, নগ্ন অবস্থাতেই তা মেলে ধরেন ওপেনহেইমারের সম্মুখে।

Oppenheimer: সঙ্গমের সময় প্রেমিকার বক্ষদেশ জুড়ে গীতা, ওপেনহাইমার-কে তুলোধনা অনুরাগ ঠাকুরের
তুলোধনা অনুরাগ ঠাকুরেরও

Follow Us

 

হলিউডের গণ্ডি পেরিয়ে এ দেশেও ভাল ব্যবসা করছে পরিচালক ক্রিস্টোফার নোলানের ছবি ‘ওপেনহেইমার’। তবে ছবির একটি দৃশ্য নিয়ে শুরু হয়েছে নানা বিতর্ক। ছবিটিকে বয়কটের ডাকও দেওয়া হয়েছে। এবার ছবির ওই দৃশ্য বাদ না দিয়েই মুক্তির অনুমতি দেওয়ায় সেন্সর বোর্ডের উপর ক্ষোভ উগরে দিলেন তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী অনুরাগ ঠাকুর।

কোন দৃশ্য নিয়ে এত ধুন্ধুমার? ছবিতে একটি দৃশ্যে দেখা যাচ্ছে, রবার্ট ওপেনহাইমার (সিলিয়ান মার্ফি) ও তাঁর প্রেমিকা জিন ট্যাটলক (ফ্লোরেন্স পিউ) সঙ্গমরত। সঙ্গমের মাধখানে ট্য়াটলক বিছানা থেকে উঠে আলমারি থেকে একটি বই বার করেন। নগ্ন অবস্থাতেই তা মেলে ধরেন বিছানায় শুয়ে থাকা ওপেনহেইমারের মুখের সামনে। এর পরেই ফের ঘনিষ্ঠ অবস্থায় দেখা যায় তাঁদের। ট্য়াটলক যে বইটি ওপেনহেইমারের সামনে তুলে ধরেন, তা আদপে হিন্দু ধর্মগ্রন্থ ‘ভগবদ্‌গীতা’। ট্যাটলক ওপেনহাইমারের কাছে জানতে চান, কোন ভাষায় লেখা তাঁর হাতে ধরা বইটি? ‘সংস্কৃত’, উত্তর দেন ওপেনহাইমার। ট্যাটলক একটি বিশেষ পাতা খুলে জানতে চান, কী লেখা রয়েছে পাতায়। ওপেনহাইমার ব্যাখ্যা করতে গেলে বারণ করেন ট্যাটলক। ওপেনহাইমারকে বলেন, লাইন অনুযায়ী বলতে। এর অব্য়বহিত পরমুহূর্তেই দর্শক ভয়েস ওভার-এ শোনেন ওপেনহাইমারের গলা, যেখানে ইংরেজি অনুবাদে ২টি লাইন বলতে শোনা যায় ছবির নায়ককে: ‘আমি এখন মৃত্যু। পৃথিবীর ধ্বংসকারী (‘Now I am become death, the destroyer of worlds.’)।’ প্রসঙ্গত, মধ্যে ট্যাটলক চিৎ হয়ে বসে পড়েন বিছানায় শুয়ে-থাকা ওপেনহাইমারের উপর। সঙ্গম শুরু হয় আবার।

বিছানায় চরম মুহূর্তে গীতার এই অবতরণই মেনে নিতে পারেননি হিন্দুধর্মাবলম্বীদের একটা বড় অংশ। শুরু হয় প্রতিবাদ। এ দিন অনুরাগ ঠাকুর ফিল্ম সার্টিফিকেশন কমিটিকে কাঠগড়ায় দাঁড় করিয়ে প্রশ্ন তোলেন, কীভাবে ওই ছবির এই দৃশ্যটি বাদ না দিয়েই মুক্তির ছাড়পত্র পেল? সূত্র মারফৎ জানা যাচ্ছে, অবিলম্বে ছবিটি থেকে এই বিশেষ দৃশ্যটি বাদ দেওয়ার জন্য নোলানকে বলেছেন তিনি। শুধু তাই-ই নয়, সেন্সর বোর্ডের যে সব সদস্য এই ছবিটি মুক্তির সময় কোনও আপত্তি জানাননি, তাঁদের সকলের বিরুদ্ধেও কেন্দ্রীয় মন্ত্রী কড়া পদক্ষেপ করার নির্দেশ দিয়েছেন বলে খবর। এর আগে কেন্দ্রীয় সরকারের তথ্য কমিশনার উদয় মাহুরকার ছবির ওই দৃশ্য নিয়ে তীব্র প্রতিবাদ করেছিলেন। সংবাদ সংস্থা ANIকে তিনি বলেন, “গীতা আমাদের কাছে পবিত্র, সেই গীতার অপমান করা হয়েছে। কী করে কেউ এমনটা করতে পারেন? আমাদের সভ্যতাকেও অবমাননা করা হয়েছে।” এখানেই শেষ নয়, মাহুরকার একটি বড়সড় টুইটও করেন তিনি। সেই সঙ্গে কেন্দ্রীয় মন্ত্রী অনুরাগ ঠাকুরের হস্তক্ষেপেরেও দাবি জানান মাহুরকার। এর পরেই এই প্রতিক্রিয়া দেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী।

কাই বার্ড এবং মার্টিন জে শেরউইনস রচিত ‘আমেরিকান প্রমিথিউস: দ্য ট্রায়াম্ফ অ্যান্ড ট্র্যাজেডি অব জে রাবর্ট ওপেনহাইমার’ নামক বায়োগ্রাফি অবলম্বনে তৈরি হয়েছে নোলানের এই ছবি। প্রসঙ্গত, গীতার এই শ্লোক নিয়ে ইতিমধ্যে টুইট করেছেন কংগ্রেস নেতা জয়রাম রমেশও। তাঁর টুইটে জয়রাম লিখেছেন, ‘আমি এখন মৃত্যু। পৃথিবীর ধ্বংসকারী’ এই শ্লোকটি গীতার ১১তম অধ্যায়ের ৩২তম লাইনে রয়েছে। মূল শ্লোকের ‘কাল’ শব্দকে ওপেনহাইমার ‘মৃত্যু’ মনে করেছিলেন, টুইটে লিখেছেন জয়রাম। প্রসঙ্গত, আমেরিকান পদার্থবিদ তথা ‘পারমাণবিক বোমার জনক’ ওপেনহাইমার সংস্কৃত ভাষা শিখেছিলেন ইউনিভার্সিটি অফ ক্যালিফর্নিয়া, বার্কলে-তে। ১৯৩৩ বার্কলে-তে ওপেনহাইমারের সঙ্গে পরিচয় হয় আর্থার রাইডারের, যিনি ওই বিশ্ববিদ্যাল সংস্কৃত ভাষার অধ্যাপক ছিলেন। রাইডার সংস্কৃত থেকে যিনি ‘গীতা’ ও ‘পঞ্চতন্ত্র’ ইংরেজিতে অনুবাদ করেছিলেন। এই রাইডারের কাছেই গীতার অনুবাদ পড়েছিলেন ওপেনহাইমার। পরে তিনি নিজে সংস্কৃত শিখেন।

Next Article