দেশের মেয়েদের নিরাপত্তা নিয়ে চিন্তিত অভিনেত্রী শাবানা আজমি। কিন্তু কেন তাঁর এই চিন্তা? কোন ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে তিনি এমনটা বলছেন? আসলে বিলকিস বানো গণধর্ষণ মামলা এবং ১১ আসামির মুক্তির বিষয়ে প্রতিক্রিয়া জানাতে গিয়ে তিনি এমনটা বলছেন। প্রবীণ অভিনেত্রী এই ঘটনায় ভেঙে পড়েছেন, জানিয়েছেন যে তিনি গভীর লজ্জিত এবং হতবাক। সম্প্রতি একটা সাক্ষৎকারে শাবানা নিজের মত প্রকাশ করতে গিয়ে বিলকিস বানোর কাছে লজ্জিত হওয়া ছাড়া আর কোনও শব্দ খুঁজে পাচ্ছেন না বলেই মন্তব্য করেছেন। অভিনেত্রী প্রশংসা করেছিলেন যে কীভাবে বলকিস এত বড় ট্র্যাজেডি হওয়া সত্ত্বেও সাহস হারাননি, বরং তিনি যুদ্ধের পথ বেছে নিয়েছিলেন। এবং তিনি সেই লোকদের দোষী সাব্যস্ত করিয়ে শাস্তি দিতে সক্ষম হয়েছিলেন।
শাবানা আরও মনে করেন, আজ সেই দোষীলোকগুলো ছাড়া পেল। বিলকিস যখন আস্তে আস্তে নিজের জীবনকে গুছিয়ে তুলছিলেন (যেমন তাঁর স্বামী জানিয়েছেন) তখনই ন্যায়বিচারের এই মহান বিকৃতি ঘটে। বানোর ন্যায়বিচারের জন্য সকলের আওয়াজ তোলা উচিত নয়? প্রশ্ন শাবানার। আর যে নারীরা এদেশে নিজেদের নিরাপদ বোধ করছেন না, যে নারীরা প্রতিদিন ধর্ষণের হুমকির সম্মুখীন হচ্ছেন – তাঁদের কি নিরাপত্তার অনুভূতি পাওয়া উচিত নয়? সংবাদ মাধ্যমের সঙ্গে কথা বলার সময় শাবানা এই প্রশ্নগুলো উঠিয়েছিলেন।
শাবানা যোগ করেছেন যে এটি তাঁকে সম্পূর্ণভাবে অবাক করে দেয় কারণ যখন এমন ঘটনা ঘটেছিল তখন তিনি আশা করেছিলেন যে ক্ষোভের বহিঃপ্রকাশ ঘটবে সকলের থেকে। অভিনেত্রী প্রকাশ করেছেন যে তিনি ২-৩ দিন অপেক্ষা করেছিলেন। তবে দেখলেন মিডিয়াতে এই বিষয় নিয়ে সেই ভাবে কোনও ধরনের আলোচনা হয়নি। আর যা অভিনেত্রীকে হতবাক করেছিল যে এটিও ঘটতে পারে। এমনকি এখন তিনি মনে করেন যে যা ঘটেছে তার অবিচার এবং ভয়াবহতা সম্পর্কে যথেষ্ট বোঝার মানুষ নেই।
শুধু তাই নয়, শাবানা যোগ করেন যে দণ্ডপ্রাপ্তদের অভিনন্দন জানানো হয়েছিল এবং তাঁদের মুক্তির পরে লাড্ডু বিতরণ করা হয়েছিল। এটা দেখে অবাক হওয়ার পাশাপাশি সমাজ ও নারীদের আমরা যে সংকেত দিচ্ছি তা নিয়েও প্রশ্ন তোলেন অভিনেত্রী। ২০০২ সালের গুজরাট দাঙ্গার সময় বিলকিস বানোকে গণধর্ষণের অভিযোগে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডে দণ্ডিত ১১ আসামি, সম্প্রতি ১৫ আগস্ট জেল থেকে বেরিয়ে এসেছিলেন। গুজরাট সরকার তার ক্ষমা নীতির অধীনে তাঁদের মুক্তির অনুমতি দিয়েছে বলেই খবর। তাঁরা ১৫ বছরেরও বেশি সময় জেলে ছিলেন।