বয়স হয়েছিল ৯৪ বছর। স্বপ্ননগরী মুম্বইয়ের বান্দ্রা এলাকায় ছিল তাঁর বাড়ি। সেখানেই থাকতেন বাংলার বিখ্যাত সুরকার সলিল চৌধুরীর প্রথম স্ত্রী জ্যোতি চৌধুরী। সদ্য প্রয়াত হয়েছেন তিনি। বার্ধক্যজনিত রোগে ভুগছিলেন দীর্ঘদিন। ৭ জানুয়ারি তাঁর মুম্বইয়ের বাড়িতেই শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন জ্যোতিদেবী।
বিয়ের আগে জ্যোতিদেবী থাকতেন কলকাতার ভবানীপুরে। অভিজাত পরিবারের মেয়ে ছিলেন তিনি। তাঁকে বাড়িতে গিয়ে দর্শন পড়িয়ে আসতেন সলিল চৌধুরী। তারপরই মাস্টারমশাই এবং ছাত্রীর মধ্যে প্রেম হয়। এবং তারপরই শুভ পরিণয়। কিন্তু সেই বিয়ে মেনে নেয়নি পরিবার। অনেকটা মন খারাপ করেই কলকাতা ছেড়ে মুম্বই চলে গিয়েছিলেন জ্যোতি।
পরিবারের বিরুদ্ধে গিয়ে এত লড়াই করে সংসার শুরু করেছিলেন ঠিকই, কিন্তু সেই বিয়ে টেকেনি। সম্পর্ক ভেঙে গিয়েছিল তাঁদের। তারপর সঙ্গীতশিল্পী সবিতা চৌধুরীকে বিয়ে করেছিলেন সলিল। তারপরই একাকী পথচলা শুরু হয় জ্যোতির। অনেক সমস্যার সম্মুখীন হয়েছিলেন। সিঙ্গল মাদার হয়ে আজীবন কাটিয়ে দিয়েছেন। তিন কন্যা অলকা, তুলিকা এবং লিপিকাকে বড় করেছেন একা হাতে। সলিলহীন সংসারে এটাই ছিল জ্যোতির চিহ্ন।
এ তো গেল জ্যোতির ব্যক্তি পরিচয়। কর্মজীবনের কথা বলতে গেলে, যদি একজন চিত্রকর। কলকাতার আর্ট কলেজ থেকে অঙ্কনে শিক্ষা লাভ করেছিলেন। তাঁর অনুপ্রেরণা ছিল দাদু। তাঁকে কলেজে ভর্তি করেছিলেন সলিলই। যখন সলিলকে বিয়ে করেছিলেন, সুরকারের আয় বেশি ছিল না। জ্যোতির চিত্র প্রদর্শনী থেকেই উঠে আসত সংসারিক খরচ। মুম্বইয়ের বান্দ্রা এলাকায় নিজ খরচে বাড়ি তৈরি করেছিলেন। তিনি ছিলেন সে যুগের বীরঙ্গনা।