সোমবার বিকেলে শোকে ডোবে গোটা বাংলা। হঠাৎই খবর মেলে প্রয়াত সাহিত্যিক সমরেশ মজুমদার। মঙ্গলবার শেষকৃত্য সম্পন্ন হয়। সাহিত্যিকের প্রয়ানের খবর পাওয়া মাত্রই শোকজ্ঞাপন করেছিলেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী থেকে শুরু করে দেশের প্রধানমন্ত্রী। সাহিত্য জগতের এক বিশাল ক্ষতি। স্রষ্টা চলে যায়, থেকে যায় তার কালজয়ী সৃষ্টি। তাই এই অন্তর্জালের দুনিয়ায় বুঁদ হয়ে থাকা নব্য প্রজন্মের কাছে, এবং প্রজন্মের গন্ডি পেরিয়ে সমরেশ মজুমদার আর তার সাহিত্য আজও বড্ড প্রাসঙ্গিক। সাহিত্যিকের ৬৪ বি, শ্যামপুকুর স্ট্রিটের বাড়িতে আজ (মঙ্গলবার) সকাল থেকে তাই অনুরাগীদের ভিড় জমে। একদিকে যেমন রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব আনাগোনা, তেমনই বিনম্র অন্তিম শ্রদ্ধা নিবেদনের হিড়িক ছিল আট থেকে আশির।
নন্দন চত্বরে নিয়ে গিয়ে শেষ সম্মান জানান নয়, ‘কোন আচার অনুষ্ঠান হবে না । বাবা চাইতেন না বলেই এই সিদ্ধান্ত।’ সমরেশ মজুমদারের প্রয়ানের কিছুক্ষণের মধ্যেই জানিয়ে দিয়েছিলেন তাঁর কন্যা দোয়েল মজুমদার । যার ফলে এদিন বাড়িতেই শায়িত ছিল সাহিত্যিকের দেহ।
সকালে মাল্যদান করে শ্রদ্ধা জানিয়েছেন মহানাগরিক ফিরহাদ হাকিম। এসেছেন পাবলিশার্স এন্ড বুক সেলার্স গিল্ডের সাধারণ সম্পাদক ত্রিদিব চ্যাটার্জি। তেমনই ছুটে এসেছেন তার লেখনীর গুণমুগ্ধ শমীক ভট্টাচার্যও। বেলা এগারোটায় পারিবারিক মর্যাদায়, তাঁর নশ্বর দেহ নিয়ে যাওয়া হয় নিমতলা শ্মশানে। যেখানে পঞ্চভূতে বিলীন হন সকলের প্রিয় সমরেশ মজুমদার। লেখনী থেকে যাবে অমর। উত্তরবঙ্গের পাহাড়ি নদী আর চা বাগান থেকে বাংলাদেশের পাবনা, ময়মনসিংহ, এক সুত্রে যিনি গেঁথেছেন, তাঁকে প্রণাম জানিয়ে গেলেন বাংলাদেশের উপ হাইকমিশন এর আধিকারিক স্তরের প্রতিনিধিরাও।
১০ই মার্চ ১৯৪২ জন্মগ্রহণ করেন লেখক। ডুয়ার্সের গয়েরকাটা চা বাগানে তাঁর বেড়ে ওঠা। ১৯৬০ সালে লেখল কলকাতায় আসেন। ১৯৭৫ সালে তাঁর লেখা প্রথম উপন্যাস “দৌড়” প্রকাশিত হয়। সেই থেকেই তাঁর সৃষ্টি কর্মকাণ্ড শুরু হয়ে যায়। তাঁর লেখা উপন্যাগুলের মধ্যে অন্যতম ‘কালবেলা’, ‘কালাপাহাড়’, ‘শেষের খুব কাছে’, ‘তেরো পার্বণ’, ‘কালপুরুষ’, ‘অর্জুন সমগ্র’, যা বারে বারে প্রশংসিত ও আলোচিত গুণীমহলে।