‘গ্রেফতার করা হোক পরিচালককে’-এই মর্মে একটি অভিযোগ করেন গৌ মহাসভার নেতা অজয় গৌতম। ছবি আর তার পোস্টারের বিরুদ্ধে দিল্লি পুলিশ এবং স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের কাছে অভিযোগ পাঠিয়েছেন তিনি। তাঁর দাবি হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের অনুভূতিকে আঘাত হেনেছেন পরিচালক। কেন তিনি এবং তাঁর গোষ্ঠী এমন মনে করছেন? সম্প্রতি একটি পোস্টার সোশ্যাল মিডিয়াতে ভাইরাল হয়েছে। যেখানে দেখা যাচ্ছে ‘ধূমপানরত কালি’। পোস্টারটি পোস্ট করেন স্বয়ং ছবির পরিচালক। বিশদে বলতে গেলে একজন নারী কালীবেশে ধূমপান করছেন-এই হচ্ছে পোস্টার, সঙ্গে এলজিবিটি সম্প্রদায়ের গর্বের পতাকাটিও ব্যাকগ্রাউন্ডে দেখতে পাওয়া যায়। সব মিলিয়ে ক্ষুব্ধ নেটিজ়েনরা। তাঁরা পরিচালকের বিরুদ্ধে তাঁদের ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত করার জন্য এনেছেন অভিযোগ। পোস্টারটি প্রত্যাহারের দাবির সঙ্গে রয়েছে একটি স্লোগানও, হ্যাশট্যাগ ‘অ্যারেস্ট লীনা মনিমেকলাই’। এই মুহূর্তে টুইটারে এটি প্রবল ট্রেন্ড করছে।
প্রশ্ন কে এই লীনা মনিমেকলাই? তিনি ভারতীয় সিনেমার একজন পরিচালক। তাঁর পরিচালিত ডকুমেন্টারি ছবি ‘কালী’র পোস্টার এটি। দেবী কালীকে চিত্রিত করে হিন্দুদের অনুভূতিতে আঘাত করার জন্য যে ক্ষোভের জন্ম হয়েছে, লীনা সম্প্রতি সে বিষয়ে দাবি জানিয়েছেন, আজ যাঁরা তাঁকে ঘৃণা করছেন, ছবি দেখলে তাঁরাই কাল বলবেন ‘লীনা তোমাকে ভালবাসি’। তাঁর আসন্ন তথ্যচিত্রের পোস্টারটি আগা খান মিউজিয়ামে রিদমস অফ কানাডার অংশ হিসেবে আত্মপ্রকাশ করে।
“‘টরন্টো মেট্রোপলিটন ইউনিভার্সিটি’ কানাডার বৈচিত্র্যময় সংস্কৃতি নিয়ে সিনেমা তৈরির জন্য একটি ওয়ার্কশপে অংশগ্রহণের জন্য কানাডা জুড়ে কিছু সেরা ফিল্মস্টাডির ছাত্র-ছাত্রী আমন্ত্রণ জানিয়েছে৷ ‘কালী’ হল সেই ফিল্ম যেটিতে আমি অংশগ্রহণ করেছি এবং সেই ওয়ার্কশপে অংশগ্রহণ করেছি। আমি এটিতে অভিনয় করেছি, পরিচালনা করেছি এবং প্রযোজনা করেছি,” ‘কালী’-র বিষয়ে বলেছেন পরিচালক। লীনার মতে, “সিনেমাটি এমন ঘটনাকে ঘিরে আবর্তিত হয়েছে যেগুলো এক সন্ধেবেলায় ঘটে। যখন কালী আবির্ভূত হয় এবং টরন্টোর রাস্তায় হাঁটতে থাকে। দর্শক যদি ছবিটি দেখেন তবে হ্যাশট্যাগ পোস্ট করবেন না ‘অ্যারেস্ট লীনা মণিমেকলাই’ বলে, বরং হ্যাশট্যাগ পোস্ট করবেন ‘লীনা মণিমেকলাই তোমাকে ভালোবাসি’। এই কালী অনেক জাতিগত পার্থক্যের মধ্যে ঘৃণার পরিবর্তে প্রেম বেছে নেওয়ার কথা বলে”।