Suchitra Sen: ‘মহানায়িকা’র নামাঙ্কিত ফলক অনাদরে ভেঙে পড়ে রয়েছে রাস্তায়, কী জবাব দেবে প্রশাসন?

Suchitra Sen: সংক্ষিপ্ত প্রতিক্রিয়া দিলেও তাঁর এই কথা থেকে সহজেই অনুমান করা যায় অভিনেত্রী তথা প্রাক্তন সাংসদ মুনমুন সেন এই বিষয়টি নিয়ে কতটা ক্ষুব্ধ। সুচিত্রা সেন বাঙালির গর্ব—তবে তাঁর জন্ম ওপার বাংলায়, বর্তমান বাংলাদেশের পাবনা জেলায়। খবরে প্রকাশ, মহানায়িকার জন্মভিটেকে মিউজিয়াম করে সংরক্ষণ করা হয়েছে।

Suchitra Sen: ‘মহানায়িকা’র নামাঙ্কিত ফলক অনাদরে ভেঙে পড়ে রয়েছে রাস্তায়, কী জবাব দেবে প্রশাসন?
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Oct 09, 2023 | 7:44 PM

‘মহানায়িকা’ সুচিত্রা সেন বাঙালির আবেগের সঙ্গে অবিচ্ছেদ্যভাবে যুক্ত। বাংলা সিনেমার স্বর্ণযুগের এই নায়িকা আজও সমান জনপ্রিয়। তাঁর ক্যারিশ্মা শুধুই টলিউডেই সীমাবদ্ধ নয়, বলিউডেও ‘দেবদাস’, ‘আঁধি’র মতো ছবিতে অভিনয়ের মাধ্যমে সিনেপ্রেমীদের মনে চিরস্থায়ী আসন দখল করেছেন। মহানায়িকার মৃত্যুর পর তাঁর নামে রাস্তার নামকরণ করেছেন স্বয়ং মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বালিগঞ্জ ফাঁড়ি থেকে যে রাস্তা মহানায়িকার বাড়ির দিকে গিয়েছে, সেই রাস্তার নামকরণ করা হয় ‘সুচিত্রা সেন সরণি’। তাঁর নামে নামাঙ্কিত একটি ফলকও রাখা হয়েছে। তবে আপাতত বাস্তবচিত্রটা হল এরকম: এই ফলক অনাদরে রাস্তার ধারে গড়াগড়ি খাচ্ছে এই মুহূর্তে। পথচারীদের চোখে পড়লেও প্রশাসনের চোখে পড়ছে না কি বিষয়টা? এই বিষয়টি নিয়ে মহানায়িকার কন্যা অভিনেত্রী মুনমুন সেনের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, তাঁর কিছু বলার নেই। সেই সঙ্গেই অবশ্য অভিমানও ঝরে পড়েছে মুনমুনের গলায়, “এই কারণেই আমার মা সরকারি কোনও পুরস্কারকে সে রকম গুরুত্ব দিতেন না।”

সংক্ষিপ্ত প্রতিক্রিয়া দিলেও তাঁর এই কথা থেকে সহজেই অনুমান করা যায় অভিনেত্রী তথা প্রাক্তন সাংসদ মুনমুন সেন এই বিষয়টি নিয়ে কতটা ক্ষুব্ধ। সুচিত্রা সেন বাঙালির গর্ব—তবে তাঁর জন্ম ওপার বাংলায়, বর্তমান বাংলাদেশের পাবনা জেলায়। খবরে প্রকাশ, মহানায়িকার জন্মভিটেকে মিউজিয়াম করে সংরক্ষণ করা হয়েছে। প্রশাসনিক এই ‘অযত্ন’-এর পরিপ্রেক্ষিতে চলচ্চিত্র বিশেষজ্ঞ সঞ্জয় মুখোপাধ্যায়ের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, “এটা নতুন কিছুই নয়, এর আগেও আমরা দেখেছি কাননদেবীর বাড়ি ভেঙে বহুতল হয়েছে। কিছুদিন আগে সন্ধ্যা মুখোপাধ্যায়ের বাড়িও ভাঙা পড়েছে। পরিচালক মৃণাল সেনের বাড়িও বিক্রির পথে। তাই এই ফলক ভেঙে পড়ে আছে, এ আর বিশেষ কী…”

কিংবদন্তি অভিনেত্রী সুচিত্রা সেনের বহু ছবির প্রিন্ট পাওয়া যায়না। বাঙালি আদতে ‘আত্মবিস্মৃত জাতি’ বলে সমালোচিত হয় সেই কবে থেকে। নিজেদের গর্বকে যত্ন করে সংরক্ষণ করতে পারে না বলে অভিযোগ কলকাতার বাঙালির বিরুদ্ধে দীর্ঘদিন ধরেই। এই বিষয়ে উদ্যান বিভাগের মেয়র পারিষদ দেবাশিস কুমারের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেছেন, “বেশ কিছু পরিকল্পনা করা হয়েছিল ওই জায়গাটিকে কেন্দ্র করে। একটি উদ্যান তৈরির করার কথা ছিল। তবে এত বেশি দূষণ যে, ইচ্ছে থাকলেও ওই জায়গায় কিছুই করা যায়নি। তাই উদ্যান করে ওই চত্বর সাজিয়ে তোলা সম্ভব বলে এখন আর মনে হয় না।” ফলকের প্রতি প্রশাসনের ‘অযত্ন’ বা ‘ঔদাসীন্য’ সম্পর্কে কী বলছেন তিনি? দেবাশিসবাবুর উত্তর, “ফলকটি যে ভেঙে পড়ে রয়েছে, সে ব্যাপারে শীঘ্রই সংশ্লিষ্ট দফতরে কথা বলব, যাতে তা ঠিক করে দেওয়া হয়।”

বাংলা ছবিতে সুচিত্রা-উত্তম জুটির হিট ছবি প্রজন্মের পর প্রজন্মকে প্রেমের ভেলায় ভাসিয়ে এসেছে… যাবেও। সেই মহানায়িকার নামাঙ্কিত ফলকটি ঠিক অবস্থায় রয়েছে কি না, সে ব্যাপারে প্রশাসনের অবশ্যই সচেতন থাকা উচিত বলে মনে করছে ওয়াকিবহাল মহল। দেবাশিস কুমারের বক্তব্যে আশা করা যায় খুব শীঘ্রই ‘সুচিত্রা সেন সরণি’ লেখা ফলকটি মেরামতির পর স্বস্থান ও স্বমর্যাদা ফিরে পাবে।