নন্দন পাল
৯০/এ রাসবিহারী এভিনিউয়ে কলকাতার নাট্য চর্চার একটা নতুন ধারা শুরু হল নীরবে। উঠোন থিয়েটার। বাড়ির উঠোনে দাদা সাহেব ফালকে পুরস্কার প্রাপ্ত চিত্রপরিচালক ও নাট্যকার শঙ্খ ঘোষ শুরু করলেন উঠোন থিয়েটার। বাড়ির উঠোন যখন হয়ে ওঠে মঞ্চ তখন কী হতে পারে তার এক স্বতন্ত্র উদাহরণ তৈরি করল জেড থিয়েটার। দু’দিনের এই নাট্য উৎসবের প্রথম সন্ধ্যায় ছিল দক্ষিণেশ্বর সাংস্কৃতিক চক্রের নাটক ‘দিলদরিয়া’ ও জেড থিয়েটারের ‘অসঙ্গত’।
আর দ্বিতীয় সন্ধ্যায় কলকাতা নাট্য সেনার নাটক ‘নয়’ আর ওপেন এয়ারের ‘নাত্থুরাম’। এক অন্য আদর্শে অনুপ্রাণিত শঙ্খ ঘোষ নাট্যচর্চা ও সিনেমার ব্যাপারে বরাবরই অন্য পথে হেঁটেছেন। তাই এই উঠোনে যাঁরা পারফর্ম করছেন তাঁদের জন্য এক অদ্ভুত মাপকাঠি রেখেছেন পরিচালক শঙ্খ ঘোষ। সরকারি অনুদান প্রাপ্ত দলের জন্য এই উঠোন ‘নো এন্ট্রি’ জোন।
কখনও ভূমিহীন কৃষক ও তাদের যন্ত্রণা, কখনও ধর্ষণের বিরুদ্ধে গর্জে উঠেছে এই উঠোন মঞ্চ। আবার কখনও নাত্থুরাম গডসের মনোলগ বা নস্টালজিয়ায় হারিয়ে যাওয়া এক মানুষের নৌকো ভাসানোর গল্প।
এই মঞ্চ আকারে আয়তনে এতটাই ছোট্ট যে দর্শকাসনে বসে থাকা দর্শকরাও যেন কোথাও হয়ে ওঠেন নাটকের অঙ্গ। কোভিড বিধি মাথায় রেখে আসন সংখ্যাও রাখা হয়েছে সীমিত। আপাতত মাত্র ২০ জন। আর সবচেয়ে মজার কথা হল এই উঠোনে বসে নাটক দেখতে হলে লাগবে না কোনও প্রবেশমূল্য। কপাল ভাল হলে শঙ্খবাবুর হাতে তৈরি চা বা কফির কাপেও চুমুক দিতে পারেন।
শঙ্খ ঘোষ এবং জেড থিয়েটার
২০১০ সাল থেকে জেড থিয়েটারের পথ চলা শুরু। আজ পর্যন্ত মোট ১৪টি মৌলিক নাটকের জন্ম হয়েছে যা মূলত অন্তরঙ্গ নাট্য। শূন্য বলে একটি নাটক প্রযোজনার চলচ্চিত্রায়ন হয়েছে এবং এই নাটক ২০১৯ সালে মুম্বই ফিল্ম ফেস্টিভ্যালে সেরা আঞ্চলিক ছবির বিভাগে দাদা সাহেব ফালকে পুরস্কারে সম্মানিতও হয়েছে।
থিয়েটারের পাশাপাশি নটি চলচ্চিত্র নির্মাণ হয়েছে, যেখানে চেষ্টা করা হয়েছে থিয়েটারের ছেলেমেয়েদের নিয়ে কাজ করতে।
স্বনির্ভর ভাবেই কাজ করে যেতে চান জেড থিয়েটারের নির্মাতা ও চলচ্চিত্র পরিচালক শ্রী শঙ্খ ঘোষ।