দীপিকা পাড়ুকোন, বলিউডের প্রথম সারির নায়িকাদের মধ্যে তিনি অন্যতম। কেরিয়ারের শুরু থেকেই দর্শকের মন জিতে নিয়েছিলেন তিনি। ২০০৭ সালের ‘ওম শান্তি ওম’ ছবিতে ‘শান্তিপ্রিয়া’ চরিত্রে অভিনয় করে তিনি এক নতুন দিগন্ত উন্মোচন করেন। ছবির শুরুতে তাঁর হাসি এবং টানা টানা চোখ অনেক পুরুষের হৃদয়ে জায়গা করে নেয়। তারপর থেকেই দীপিকা বলিউডের শীর্ষস্থানীয় অভিনেত্রী হিসেবে জায়গা করে নেন। তবে দীপিকা শুধু পর্দার অভিনেত্রী নন, পর্দার বাইরে তিনি আরও এক অদ্ভুত শক্তির প্রতীক। মানসিক স্বাস্থ্য নিয়ে তাঁর খোলামেলা কথা বলার কারণে, তিনি এক বিশেষ জায়গা করে নিয়েছেন মানুষের মনে।
দীপিকা একজন শক্তিশালী ব্যক্তিত্ব, যিনি একসময় নিজের মানসিক স্বাস্থ্যের কথা জনসমক্ষে বলেন। অবসাদ এবং বিষণ্ণতার সঙ্গে তাঁর লড়াই সম্পর্কে তিনি প্রকাশ্যে আলোচনা করেছেন, এমনকি এক সময় আত্মহননের কথাও মাথায় এসেছিল। তবে সেই সময়ে তাঁর মা তাঁকে বাঁচিয়েছিলেন, কারণ তিনি বুঝতে পেরেছিলেন, দীপিকা মানসিক অবসাদে ভুগছেন। দীপিকা এক সাক্ষাৎকারে বলেছিলেন, “মায়ের সাহায্য না পেলে, আমি হয়তো কখনোই সঠিক পথে ফিরতে পারতাম না।” তার এই শেয়ার করা অভিজ্ঞতা অনেকেরই অনুপ্রেরণা হয়ে দাঁড়িয়েছে।
এছাড়া, দীপিকা বর্তমানে সিনেমার সেটে মানসিক স্বাস্থ্যকে আরও গুরুত্ব দেওয়ার কথা বলেছেন। তিনি জানান, সিনেমার সেটে একজন মনোবিদের উপস্থিতি খুবই প্রয়োজন, যেমন চিকিৎসকরা শুটিং সেটে থাকেন। দীপিকা মনে করেন, ভারতীয় সিনেমায় মানসিক স্বাস্থ্য সম্পর্কিত বার্তা সঠিকভাবে তুলে ধরা হলে তা সমাজে গুরুত্বপূর্ণ প্রভাব ফেলতে পারে। তিনি বলেছিলেন, “আমি চাই আগামী কয়েক বছরে, ছবির সেটে একজন মনোবিদের উপস্থিতি নিশ্চিত করা হোক।”
দীপিকার মানসিক স্বাস্থ্য সম্পর্কে কথা বলার এই সাহসী পদক্ষেপ তাকে আরও বেশি সম্মানিত করেছে। তাঁর কথায়, “আমার কাজ এবং জীবন ঠিকঠাক চলছিল, তবুও এক অজানা আতঙ্ক কাজ করছিল। তখন আমার মা আমাকে প্রশ্ন করতে শুরু করেন, প্রেম, কাজ এসব নিয়ে। তিনি বুঝতে পারেন, আমার মানসিক স্বাস্থ্য কিছুটা খারাপ হয়ে যাচ্ছে এবং সেই সময় তিনি আমাকে মনোবিদের কাছে পাঠান।” দীপিকা তাঁর অভিজ্ঞতা শেয়ার করে যে, জীবনে কখনও বিশেষ সমস্যা না থাকলেও, মানসিক অবসাদ এবং আতঙ্ক যে আসতে পারে, তা তিনি অনুভব করেছিলেন।
দীপিকা পাড়ুকোনের এই অভিজ্ঞতা এবং তাঁর মানসিক স্বাস্থ্য নিয়ে খোলামেলা আলোচনা, শুধুমাত্র অভিনেত্রী হিসেবে নয়, বরং একজন মানুষ হিসেবে তাঁকে আরও বেশি প্রশংসিত করেছে।