বহু সুপারহিট ছবির পরেও, কেন শক্তি সামন্ত রাজেশ খান্নার সঙ্গে কাজ বন্ধ করেন?
রাজেশ খান্নার অভিনীত ছবির ৪৮ টি প্ল্যাটিনাম জুবলি, ২৬ গোল্ডেন জোবলি, ২২ সিলভার জুবলি। এই রেকর্ড এখনও পর্যন্ত ব্রেক করতে পারেনি আর কোন তারকা ।

সুপারস্টার রাজেশ খান্না কে বলিউডের শেষ তারকা বলা হয়, কারণ তাঁর, মত স্টারডম কোন অভিনেতাই দেখেনি। রাজেশ খান্নার তারকা হওয়ার যাত্রা শুরু পরিচালক শক্তি সামন্ত হাত ধরে। ১৯৬৯ সালে মুক্তি পায় ‘আরাধনা’ এই ছবির মাধ্যমেই রাজেশ খান্না দেশের সুপার স্টারডমে পৌঁছন। রাজেশ খান্নার যে কোন গল্প করার আগে তাঁর রেকর্ডে চোখ রাখা যায়, রাজেশ খান্নার অভিনীত ছবির ৪৮ টি প্ল্যাটিনাম জুবলি, ২৬ গোল্ডেন জোবলি, ২২ সিলভার জুবলি। এই রেকর্ড এখনও পর্যন্ত ব্রেক করতে পারেনি আর কোন তারকা । তবে রাজেশ খান্নার ব্যবহারেই বিরক্ত হয়ে তাঁর সঙ্গে কাজ করা বন্ধ করেন পরিচালক শক্তি সামন্ত। কী কারণ ছিল , সেই নিয়ে বিস্তারিত লিখেছেন পরিচালক প্রভাত রায়। তাঁর লেখা ‘ক্ল্যাপস্টিক’ বইতে।
পরিচালক প্রভাত রায় সেই সময় শক্তি সামন্তের সহকারী পরিচালক হিসেবে কাজ করছেন, তাই তিনি খুব কাছ থেকে দেখেছেন রাজেশ খান্নার স্টারডম। তাঁর কথায়, ‘আজনবি’ ছবির শ্যুট চলছে, এমনিতেই সেটে দেরি করে আশাটা রাজেশ খান্নার স্বভাব ছিল। সকালে কলটাইম থাকলে তিনি আসতেন দুপুরে। এই রকমই একদিন গাড়ি থেকে নামলেন সুপারস্টার। পরনে কালো রঙের সিল্কের পাঞ্জাবি ও লুঙ্গী। গাড়ি নামতেই গরমে ঘামছেন রাজেশ খান্না। সঙ্গে সঙ্গে তাঁর সহযোগী সাদা রুমাল ধরলেন। রাজেশ খান্না একবার মুছেই ফেলে দিলেন সেই রুমাল। এর পর সেটে আসতেই তাঁকে জিজ্ঞেস করা হল কী খাবেন? বলিউডের কাকা চালটে পাঁচতারা হোটেলের নাম বলে জানান খুব খিদে পেয়েছে অনেকটা খাবার আনতে, সঙ্গে সঙ্গে চারটে গাড়ি চারদিকে ছুটল। অথচ দেখা গেল রাজেশ খান্না শক্তি সামন্তের বাড়ি থেকে আনা খাবার ডাল, ভাত আর মাছ ভাজা খেলেন। আর বাকি খাবার খেলেন ওর সঙ্গে আসা চেলা চামুণ্ডারা। এই সবই লক্ষ্য করতেন শক্তি সামন্ত। তবে কিছু বলতেন না। এর পর ‘অনুরোধ ‘ ছবির সময় শক্তি দাকে জোর করেছিলেন ডিম্পল এর বোন সিম্পলকে ছবিতে নেওয়ার জন্য। এছাড়াও শ্যুট এর সময় খামখেয়ালি কাজ করতেন। শ্যুট এর কন্টিনিউটি মানতেন না। আমি নিজে সেই সমস্যার সম্মুখীন হয়েছি, সেই সময় ছবি তোলা হতনা, শ্যুট এর সময় কী রঙের জামা পড়া হয়েছে বোতাম খোলা কিনা আঁকা থাকত। তবে সেই সব মানতে চাইতেন না রাজেশ খান্না। দাদামণির মত লেজন্ডকেও অপেক্ষা করিয়ে রেখেছিলেন, এর ফলে খানিক বিরক্ত হয়েই আজনাবি, অনুরোধ, মেহবুবা ছবির পর রাজেশ খান্নার সঙ্গে আর কাজ করেননি শক্তি সামন্ত। ”
সুপারস্টার রাজেশ খান্নার স্টারডম, তাঁর অভিনয় নিয়ে এখনও বলিউড চর্চা করেন। এখনকার সুপারস্টাররাও সেই স্টারডম নিয়ে কথা বলেন, তবে তাঁর কাজে অনিয়ম , সময়ে না আসা , নানা কারনে সমালোচিত হয়ে থাকেন।
