‘১০ বছরের শিশুও জানে…’, স্বরূপের দিকে আঙুল তুলে তুলোধনা পরিচালকদের

Tollywood Gossip: কোথা থেকে ঘটনার সূত্রপাত? কেন স্বরূপ বিশ্বাসকে কেন্দ্র করে অসন্তোষের সৃষ্টি? ফিরে যেতে হয় সপ্তাহ খানেক আগে।

'১০ বছরের শিশুও জানে...', স্বরূপের দিকে আঙুল তুলে তুলোধনা পরিচালকদের
Follow Us:
| Updated on: Sep 05, 2024 | 9:44 PM

আরজি কর কাণ্ডকে হাতিয়ার করে টলিউডের ফেডারেশনের সভাপতি স্বরূপ বিশ্বাস ক্ষুদ্র স্বার্থসিদ্ধিতে মেতে উঠেছেন— বৃহস্পতিবার রাতে টলিউডের ডিরেক্টরস গিল্ড অর্থাৎ পরিচালকদের তরফে প্রকাশ করা হল এক এমনই এক বিস্ফোরক বিবৃতি। শুধু কি তাই? যৌন হয়রানি রুখতে সাম্প্রতিক কালে স্বরূপের তৈরি করা ১৫ সদস্য বিশিষ্ট কমিটি ‘সুরক্ষা বন্ধুর’ সারবত্তা নিয়েও একাধিক প্রশ্ন তুলেছেন তাঁরা। পাশাপাশি ফেডারেশনে এই সিদ্ধান্তকে ‘ক্ষমতাকেন্দ্রিক উদ্দেশ্য সাধন’ ও ‘হুইচ হান্টিং-এর হাতিয়ার বলে তোপ দাগিয়েছেন এই বাংলার পরিচালকদের একটা বড় অংশ।

কোথা থেকে ঘটনার সূত্রপাত? কেন স্বরূপ বিশ্বাসকে কেন্দ্র করে অসন্তোষের সৃষ্টি? ফিরে যেতে হয় সপ্তাহ খানেক আগে। আরজি কর কাণ্ডে যখন সারা দেশ ফুঁসছে, টলিউডের অন্দরে ‘কাস্টিং কাউচ’ বা যৌন হেনস্থা নিয়ে অনেকেই হচ্ছেন সরব, ঠিক তখনই স্বরূপ বিশ্বাস সংবাদমাধ্যমের সামনে এক কমিটি গঠন করার কথা ঘোষণা করেন। তাঁর দাবি ছিল, এই কমিটির প্রধান উদ্দেশ্য, টলিউডের অন্দরে ঘটা যৌন হয়রানির নানা ঘটনায় ভুক্তভোগীদের পাশে দাঁড়ানো, সমস্যায় হস্তক্ষেপ, প্রয়োজনে তাঁদের আইনি ও স্বাস্থ্য সংক্রান্ত পরিষেবা বিনামূল্যে প্রদান। এর পরেই এক সাক্ষাৎকারে স্বরূপ বিশ্বাসকে বলতে শোনা যায়, টলিউডের অন্দরের হেনস্থার যে সব অভিযোগ জমা পড়ে, তাঁর ষাট শতাংশ পরিচালকদের বিরুদ্ধে ও ৪০ শতাংশ প্রযোজকদের বিরুদ্ধে। এই মন্তব্যের পরিপ্রেক্ষিতেই কার্যত ফুঁসে ওঠেন পরিচালক-প্রযোজকরা। অসন্তোষ আগেই জমা হয়েছিল, এবার তা এল বিবৃতির আকারে। বিবৃতিতে সাফ লেখা হয়, “যৌন হয়রানি শুধু মাত্র পরিচালক ও প্রযোজকরাই করেন, এই সিদ্ধান্তে উনি কীভাবে পৌঁছলেন তার কোনও ব্যাখ্যা মেলেনি। একটি ১০ বছরের শিশুও জানে যৌন হয়রানি যা যে কোনও হয়রানির মূলসূত্র ক্ষমতা। সেই ক্ষমতার অক্ষে প্রযোজক ও পরিচালকেরা কোন স্থানে আছেন তা সাধারণ মানুষ জানেন। কাজেই তাঁদের মধ্যে কয়েকজনের বিরুদ্ধে অভিযোগ ওঠা অস্বাভাবিক নয়। তবে সাধারণ মানুষ হয়তো জানেন না, ক্ষমতার অক্ষে বাংলা ইন্ডাস্ট্রির স্বঘোষিত (সর্বোপরি বেআইনি) নিয়ামক সংস্থা ফেডারেশন। …যৌন হয়রানির ক্ষেত্রে পরিচালক ও প্রযোজকদের সংস্থা যেমন কোনও রকম বিচার সভা বসানোর কোনও এক্তিয়ার পায় না, ক্ষমতার একই যুক্তিতে, ফেডারেশনও এই ধরনের কমিটি তৈরি করার কোনও আইনি বা নৈতিক বৈধতা প্রাপ্ত নয়।”

এর পরেই স্বরূপের দিকে সরাসরি আঙুল তুলে তাঁরা লেখেন, “নারীসুরক্ষা নিয়ে স্বরূপ বাবুর কোনও মাথাব্যথা আছে বলে কোনও প্রমাণ গত ১২-১৩ বছরে আমরা পাইনি। তার টনক নড়েছে কারণ পরিচালক ও প্রযোজক স্পষ্টভাবে মিডিয়ায় জানিয়েছেন যে ফেডারেশনের অধিকাংশ কাজই আপাদমস্তক বেআইনি ও গায়ের জোয়ারি ভিত্তিক…তাদের আসল সমস্যা এখানেই। … আশা করব ফেডারেশনের হাতে বিচারকের দন্ডটি তুলে দেওয়ার আগে বিষয়টির সুদূরপ্রসারী ফলাফলের কথা সমস্ত স্টেকহোল্ডাররা মাথায় রাখবেন।” পরিচালকদের এই ক্ষোভ নিয়ে প্রতিক্রিয়া জানতে টিভিনাইন বাংলা যোগাযোগ করেছিল স্বরূপ বিশ্বাসের সঙ্গে। তিনি যদিও বলেন, “আমি এখনও বিবৃতিটি পড়িনি। ওঁরা নিশ্চয়ই আমাকেও পাঠাবেন বা পাঠিয়েছেন। এখনও মেইল দেখিনি। তাই কালকের আগে এই ব্যাপারে কোনও মন্তব্য করতে পারব না।” ফেডারেশনের সঙ্গে টলিউডের অন্যান্য গিল্ডের দ্বন্দ্ব নতুন নয়। আরজি কর কাণ্ডে যখন সমাজ ফুঁসছে তখন ফের একবার নারীসুরক্ষা নিয়েই টলিউডের অন্দরে বিভাজন স্পষ্ট। এর শেষ কোথায়? উত্তর লুকিয়ে সময়ের হাতে।