অরিন্দম শীলের (Arindam Sil) বিজেপিতে যোগদান নিয়ে সাংবাদিকের এক প্রশ্নের উত্তরে সম্প্রতি রুদ্রনীল (Rudranil Ghosh) বলেছেন, “সেরকমই কথা হয়েছে, আমার সঙ্গে যা কথা হয়েছে।” কিন্তু পরিচালক তো অন্য কথা বলছেন। টুইটে লিখেছেন “আমি শুধুমাত্র সিনেমা বুঝি। সেটাই করি, যা আমি সবথেকে ভাল বুঝি। আমি গুজবের দায়িত্ব নিতে পারব না।” রুদ্র-তৃণমূল-বিজেপি-বামফ্রন্ট নিয়ে TV9 বাংলার কাছে অকপট অরিন্দম।
বিজেপিতে যোগ দিচ্ছেন তো?
না।
কিন্তু এই যে বন্ধু (রুদ্রনীল) বলে দিলেন যে আপনি আসছেন…
এর উত্তর তো রুদ্রকে দিতে হবে।
আরও পড়ুন ‘কোনওদিনই তৃণমূলের সদস্য ছিলাম না’, বিজেপিতে যোগ দিয়ে বললেন রুদ্রনীল
কিন্তু তিনি তো বললেন আপনার সঙ্গে কথা হয়েছে…
ওকে জিজ্ঞেস করুন না ওঁর সঙ্গে শেষ কবে কথা হয়েছে। ফোন রেকর্ড দেখাতে বলুন? হোয়াটস অ্যাপ, মেসেজ, মেল কিছু তো থাকবে? শেষ এক মাসে ওর সঙ্গে কথা পর্যন্ত হয়নি। যতদূর মনে হয় অপুর (শাশ্বত চট্টোপাধ্যায়) জন্মদিনে শেষবার দেখা হয়েছিল। সেখানে আমরা হুল্লোড় করেছি, রাজনৈতিক আলোচনা হয়নি। (সাংবাদিকের উদ্দেশে) আপনি রুদ্রর ভিডিওটা দেখেছেন?
হ্যাঁ দেখেছি।
তাহলে দেখবেন, ও কিন্তু বেশ অপদস্থ বোধ করছিল যখন আমার নাম বারবার জিজ্ঞেস করা হচ্ছিল। রুদ্র বারবার এড়িয়ে যাচ্ছিল। কিন্তু হঠাৎ করে আমার নাম বলল।
বিজেপির পক্ষ থেকে কি কেউ যোগদানের প্রস্তাব দিয়েছে?
না। শুধু বিজেপি নয়। তৃণমূলের উচ্চতম নেতা-নেত্রীরাও খুব ভালভাবে জানেন, আমি কোনও পলিটিক্যাল কেরিয়ারে ইন্টারেস্টেড নই। দু’দলের লোকজনের সঙ্গে আমার সুসম্পর্ক এবং সহাবস্থান রয়েছে।
এই প্রশ্ন বারবার উঠছে কারণ, আপনি একসময়ে ভীষণভাবে বাম-ঘেঁষা মানুষ ছিলেন। তারপর সরকার বদল হওয়ার পর তৃণমূল ‘সমর্থক’ এবং এখন বিধানসভা নির্বাচনের আগে যা পরিস্থিতি… একের পর এক…
(থামিয়ে দিয়ে) দাঁড়ান-দাঁড়ান, কট্টর বাম সমর্থক কে ছিল না বলতে পারেন? যার কথা হচ্ছে, সে-ও তো তা-ই ছিল। শুধু আমার কথা যখন ওঠে, তখন এ কথা বলা হয় কেন? একবার বলেছিলাম, আমি তৃণমূলকে সমর্থন করছি। আমি কিন্তু দলের সদস্যপদ গ্রহণ করিনি। আমি বিধায়ক নই, আমি সাংসদ নই। তা যদি হওয়ার থাকত, তাহলে আমি হয়ে যেতাম। আমার রাজনৈতিক শিক্ষা-দিক্ষা জ্ঞান যা আছে, তা অনেকের চেয়ে বেশি। আরাম সে হতে পারতাম। কিন্তু হইনি।
কেন তৃণমূলকে সমর্থন করেছিলেন?
কেন হলাম তৃণমূল সমর্থক? দেখলাম চৌত্রিশ বছরের শাসনের যে ফল, তা শূন্যে এসে দাঁড়িয়েছিল। রাজ্যের মানুষ তৃণমূলকে ভোট দিয়েছিলেন। তাই-ই তারা ক্ষমতায় এসেছিল। আমি কিন্তু তখনও বামফ্রন্টকেই ভোট দিয়েছিলাম। তাহলে তো যাঁরা তৃণমূলে ভোট দিয়েছিল, সবাই পাল্টিবাজ।
কী মনে হয় ঠিক কী কারণে বন্ধু বিজেপিতে যোগ দিল? শুধুই কি ভাল কাজ করতে চাইছেন বলে?
জানি না। ও আমার এত কাছের বন্ধু নয়, যে ওর রাজনৈতিক মতাদর্শ বা সিদ্ধান্ত নিয়ে আলোচনা করেছি। ওর ব্যাপার ও জয়েন করেছে। আমার নামটা না নিলেই ভাল হত।
কালকের ঘটনার পর তৃণমূলের পক্ষ থেকে কোনও যোগাযোগ করা হয়েছিল? জিজ্ঞেস করেছেন কেউ, “এ কী শুনছি আপনার ব্যাপারে?”
না, না। ওরা সবাই কনফিডেন্ট আমার বিষয়ে। তৃণমূল, বিজেপি সবাই জানে আমি রাজনীতিতে আসব না। আমি একেবারে রাজনীতির মানুষ নই। আমি সিনেমার মানুষ। আমি ফিল্মমেকার। হ্যাঁ, কলকাতা ফিল্ম ফেস্টিভ্যাল করেছি। ভালবেসে করেছি। তার পরিবর্তে একটা পয়সা বা সুবিধে আমি নিইনি।
যদি আগামিকাল মুখ্যমন্ত্রী ফোন করে বলেন, হাওড়ার তৃণমূলের প্রার্থী আপনি, না করে দেবেন?
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আমাকে ভুলেও এমন প্রস্তাব দেবেন না। উনি আমার সিদ্ধান্তকে যথেষ্ট সম্মান করেন। ওঁর কাছ থেকে প্রভূত সম্মান পেয়েছি। উনি খুব ভাল করে জানেন আমার স্ট্যান্ড পয়েন্ট। উনি কোনওদিন এ কথা আমায় বলবেন না। আমি নিজে গিয়ে যদি কোনওদিন বলি যে, আমি রাজনীতি করতে চাই, তখন অন্য ব্যাপার। কিন্তু এ মুহূর্তে কোনও প্রশ্ন ওঠে না।