সারা রাত নেশা, সকালে শুটিং! টলিপাড়ায় কাজের ধরন নিয়ে প্রশ্ন পরিচালক শিলাদিত্যর
একটা প্রচলিত সিরিয়ালের নির্দেশক সারা রাত নেশা করে সোজা কাজে চলে যেতে পারেন? চ্যানেলের তরফে প্রযোজকও পারেন? অভিনেতা বা অভিনেত্রীরাও পারেন? শুট তাও বন্ধ হয় না। এক্ষেত্রেও হয়নি। চ্যানেল তৎক্ষণাৎ এই নির্দেশককে পরিবর্তন করে অন্য আরেকজনকে কাজে লাগিয়ে দিয়েছেন। টিআরপি কমানো যাবে না।

ঠাকুরপুকুর কাণ্ডে নিয়ে এবার পরিচালক শিলাদিত্য মৌলিক যে সত্যি সামনে আনলেন, যে প্রশ্ন তুললেন, তা কপালে চিন্তার ভাঁজ ফেলার মতো। শিলাদিত্য লিখেছেন, ”এটা কিন্তু একটি পরাজয়ের গল্প। একই ইন্ডাস্ট্রিতে থাকার পরাজয়, একই মাটিতে জন্মে একই হাওয়ায় নিঃশ্বাস নেওয়ার পরাজয়ের গল্প। এমন হাড় হিম করা এই গল্প যে অনেক বড় বড় দক্ষিণ ভারতীয় সিনেমা হার মানবে। সব মিডিয়াতে ফুটেজ ইত্যাদি দেখার পর, একটা প্রশ্ন বিগত দু’দিন ধরে খুব বিব্রত করছে। কেউ দেখি সেটা নিয়ে কোন কথাই বলছে না। আমি রোজ ভাবি আজ কেউ বলবে, কিন্তু বলছে না। আর আমি ভেবে মরছি, কেউ এটা দেখছে না? নিজেকে অনেকবার বারণ করে করে, আমার ফাইনালি আজকে ‘ব্রেক ফেল’ করল। আচ্ছা, ধরুন সেদিন ঠাকুরপুকুরের দুর্ঘটনাটা হয়নি। নির্দেশক, চ্যানেল প্রযোজক এবং অভিনেত্রী সারা রাত পার্টি সেরে ফিরছেন। এক সেকেন্ড, কোথায় ফিরছেন? ফ্লোর-এ। তাঁদের চলতি সিরিয়ালের শুটিং চলছে, তাই তাঁরা কাজে ফিরছিলেন। কারণ তাঁরা কোথাও না কোথাও এটা জানেন যে এভাবে ‘কাজে ফেরা’ যায়। নেশা করা যেকোনও ইন্ড্রাস্ট্রিতে সমান ভাবে বিরাজমান। আমার সিনেমার বাইরে বন্ধুদের থেকে এমন অনেক গল্প শুনেছি যা শুনে বিশ্বাস হয়নি যে কর্পোরেট লাইফ এতটা বন্য হতে পারে। কিন্তু কিছু কিছু ব্যাপারে আমরা তাদের থেকে অনেক অংশে এগিয়ে আছি। আর সেটা, এখানে রোজ হয়। এই দুর্ঘটনা সে কথাই আবার প্রমাণ করে দিল। একটা প্রচলিত সিরিয়ালের নির্দেশক সারা রাত নেশা করে সোজা কাজে চলে যেতে পারেন? চ্যানেলের তরফে প্রযোজকও পারেন? অভিনেতা বা অভিনেত্রীরাও পারেন? শুট তাও বন্ধ হয় না। এক্ষেত্রেও হয়নি। চ্যানেল তৎক্ষণাৎ এই নির্দেশককে পরিবর্তন করে অন্য আরেকজনকে কাজে লাগিয়ে দিয়েছেন। টিআরপি কমানো যাবে না। সারা বছর, বছরের পর বছর ধরে চলে আসছে। কারণ সমস্যাটা নেশা সংক্রান্ত একেবারেই না। সমস্যাটা ডিসিপ্লিনের।”
শিলাদিত্যর কথা রেশ ধরে টলিপাড়ার আরও কেউ-কেউ লিখেছেন, ”এই ইন্ডাস্ট্রিতে জড়িত ব্যক্তিদের অধিকাংশের জীবনযাত্রা বেশ খারাপ হয়ে যাচ্ছে। মদ বা অন্য কোনও নেশায় ডুবছেন কেউ-কেউ। অনেকে শুটিং করতে পারছেন না, এতটাই খারাপ অবস্থা হচ্ছে।”
