আর গা–বাঁচিয়ে চলতে পারছে না বাংলা ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রি। রাজনীতি গ্রাস করেছে টলিপাড়ার অলি–গলি। স্পষ্টত দুই শিবিরে বিভক্ত টলিউড। ‘ঘাসফুল’ আর ‘পদ্মফুল’ নিয়ে এবেলা–ওবেলা চলছে দলাদলি। টলি–বাগানে ‘ফুল তোলা’ নিয়ে চলছে প্রচণ্ড চাপান–উতোর। অভিনেতা–অভিনেত্রী,কলা–কুশলীরা দলে দলে ‘ফুল’ তুলতে ভিড় জমাচ্ছেন এক–একটা শিবিরে।
একুশের ভোটের মুখে দীপঙ্কর দে, ভরত কল, সৌরভ দাসের মতো অভিনেতারা যোগ দিয়েছেন ঘাসফুল শিবিরে। অন্যদিকে তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে গিয়েছেন রুদ্রনীল ঘোষ। এ বার বিজেপিতে যোগ দিলেন টলিউডের প্রথম সারির অভিনেতারা। বুধবার অভিনেতা যশ দাশগুপ্ত, সৌমিলি বিশ্বাস, পাপিয়া অধিকারী-সহ একঝাঁক সিনেমা ও টেলি তারকা বিজেপির কেন্দ্রীয় পর্যবেক্ষক কৈলাস বিজয়বর্গীয়র হাত ধরে পদ্ম শিবিরে যোগ দিলেন। প্রতিদিনই এই ‘খেলা’ চলছে।
একজন শিল্পীর রাজনৈতিক মতাদর্শ থাকতেই পারে বা তিনি ব্যক্তিগতভাবে কোনও রাজনৈতিক দলকে সমর্থনও করতে পারেন, কিন্তু টলিপাড়ায় যেভাবে শিল্পীরা বিশেষ বিশেষ রাজনৈতিক দলের ‘সম্পত্তি’ হয়ে যাচ্ছেন তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন পরিচালক কমলেশ্বর মুখোপাধ্যায়। তিনি সোশ্যাল মিডিয়ায় লিখেছেন “এঁরা আসলে কোনো রাজনীতির পক্ষেই নন – মানুষের জন্যে কাজ করার কোনো ইচ্ছেও এঁদের নেই । এঁরা শুধু ক্ষমতায় ও প্রচারে থাকার লাভের গুড়টুকু খান । এঁদের দর্শন সুবিধাবাদ।” এই জায়গা থেকেই এক ‘বিকল্প’মঞ্চ গড়ে তোলার ডাক দিয়েছেন তিনি।
‘বিকল্প আছে’ সেই সাংস্কৃতিক মঞ্চ যেখানে কোনও রাজনীতির রঙ নেই। যাঁরা মনে করেন কিছুক্ষনের জন্যে হলেও মূলধারার লোভ ও ভয়ের প্যাঁচ–পয়জার ও কূটনীতির বাইরে বেরিয়ে আসতে চাইছেন তাঁরাই সামিল হতে পারেন এই ‘বিকল্প’ মঞ্চে। এ ব্যাপারে কমলেশ্বর মুখোপাধ্যায়কে ফোনে ধরা হলে তিনি বলেন “আমরা তো সবাই এখন এক অবক্ষয়ের মধ্যে দিয়ে চলেছি, এখানে সংবিধানের মূল সুর কেটে গিয়েছে। গণতন্ত্রকতা, প্রজাতন্ত্রকতা, ধর্মনিরপেক্ষতা সবই আজ ব্যাহত হচ্ছে। ঠিক সেই অনুভব থেকেই এই ‘বিকল্প’মঞ্চ গড়ে তোলার পরিকল্পনা আমাদের। এখানে কোনও রাজনৈতিক দলের পৃষ্ঠপোষকতা নেই। জীবন–সংস্কৃতিতে যাঁরা বিশ্বাস করেন সেইসমস্ত সাংস্কৃতিক মানুষরাই এই মঞ্চে সামিল হতে পারেন।”
আরও পড়ুন :দলবদলের রাজনীতির মধ্যে একসঙ্গে মিমি এবং পার্নো!
২০ ফেব্রুয়ারি মেট্রোপলিটন ক্লাব প্রাঙ্গনে ‘বিকল্প আছে’–র কনভেনশন। কমলেশ্বর মুখোপাধ্যায় জানিয়েছেন ওই দিন একটা বিতর্ক সভাও রেখেছেন তাঁরা। বিতর্কের বিষয় ‘জনপ্রিয় সংস্কৃতিই জনগণের সংস্কৃতি’– পক্ষে ও বিপক্ষে বলবেন বক্তারা।