অ্যাকশন ভরপুর, বিজয়ের কামব্যাক, মুক্তি পেতেই বাজিমাত ‘কিংডম’-এর
‘কিংডম’ নিছকই এক অ্যাকশন ছবি নয়, ভাইয়ের প্রতি ভালবাসা, দায়িত্ববোধ ও বিপরীতে বিশ্বাসঘাতকতার এক গভীর গল্প। যাঁরা স্পাই থ্রিলারে আগ্রহী, অর্থাৎ এই জ্যঁরের ছবি পছন্দ করেন, তাঁদের জন্য এটি অবশ্যই দেখার মতো ছবি।

পরিচালনা: গৌতম তিন্নানুড়ি
অভিনয়: বিজয় দেবরাকোণ্ডা, সত্যদেব, ভাগ্যশ্রী বোর্সে, ভেঙ্কটেশ, অয়াপ্পা পি শর্মা
সিনেমাটোগ্রাফি: গিরিশ গঙ্গাধরণ
সম্পাদনা: নবীন নূলি
সঙ্গীত: অনিরুদ্ধ
প্রযোজনা: সূর্যদেবরা নাগবামসি, সাই সৌজন্য
গল্প: ‘কিংডম’-এর কাহিনি সুরি (বিজয় দেবরাকোণ্ডা) নামের এক তেলেঙ্গানার ছোট শহরের কনস্টেবলকে কেন্দ্র করে। যিনি দীর্ঘ ১৮ বছর ধরে নিখোঁজ বড় ভাই শিবা (সত্যদেব)-র খোঁজ করছেন। এক পুলিশ অফিসার হঠাৎ শিবার খোঁজ জানান এবং বলেন, তাকে খুঁজে পেতে হলে সুরিকে একটি গোপন মিশনে নামতে হবে। এই মিশনের জন্য সুরিকে যেতে হয় শ্রীলঙ্কা, যেখানে সে এক গ্যাংস্টার চক্র-র তথ্য জোগাড় করতে নিযুক্ত হয় গোয়েন্দা হিসেবে। সেখানে তাকে সহায়তা করেন আরেক গোয়েন্দা (ভাগ্যশ্রী বোর্সে)। এখান থেকেই শুরু হয় রুদ্ধশ্বাস অভিযান।
চিত্রনাট্য: গৌতম তিন্নানুড়ি এবার একেবারে ভিন্ন ঘরানার গল্প বলার চ্যালেঞ্জ নিয়েছেন। প্রথমার্ধে গল্প দ্রুত গতিতে এগোয়। চরিত্রগুলোর পরিচয় এবং শ্রীলঙ্কার পটভূমিতে সুরির স্পাই মিশন বেশ ভালভাবে উপস্থাপনা করা হয়েছে। দ্বিতীয়ার্ধে যদিও গতি খানিকটা কমে, তবে শেষ ২০ মিনিটে গল্পের বুনট একটাই পোক্ত যে টানটান উত্তেজনা তৈরি করে। গৌতমের লেখনীতে সেই পুরনো ছাপ, অ্যাকশন ও থ্রিলের মোড়কে তৈরি ছবি দর্শকের মনোরঞ্জন করতে সক্ষম।
অভিনয়: বিজয় দেবরাকোণ্ডা তাঁর কেরিয়ারের সেরা অভিনয় উপহার দিয়েছেন এই ছবিতে। ইমোশনাল দৃশ্যগুলিতে তিনি দারুণ সাবলীল। সত্যদেব বড় ভাই শিবার চরিত্রে দুর্দান্ত, তাঁর উপস্থিতি গল্পে ভারসাম্য এনে দেয়। ভাগ্যশ্রী বোর্সে গ্ল্যামার ছাড়াও অভিনয়ের জোরে নজর কাড়েন। ভেঙ্কটেশ-এর সংক্ষিপ্ত উপস্থিতি ও অভিনয় ছবিকে অন্য মাত্রা দেয়।
সিনেমাটোগ্রাফি: অনিরুদ্ধ-এর ব্যাকগ্রাউন্ড স্কোর ও গান ছবির প্রাণকেন্দ্র। নবীন নূলি-র এডিটিং ঝরঝরে, বিশেষ করে প্রথম ভাগের উপস্থাপনা খুবই স্মার্ট। গিরিশ গঙ্গাধরণ-এর সিনেমাটোগ্রাফি চোখধাঁধানো—বিশেষ করে শ্রীলঙ্কার লোকেশন এমনভাবে তুলে ধরা হয়েছে, যা আগে খুব কম দেখা গিয়েছে।
প্রযোজনার মান অত্যন্ত উন্নত, প্রোডাকশন ডিজাইন ও লোকেশন ব্যবহারে আন্তর্জাতিক মানের ছোঁয়া রয়েছে।
উল্লেখ্য, ‘কিংডম’ নিছকই এক অ্যাকশন ছবি নয়, ভাইয়ের প্রতি ভালবাসা, দায়িত্ববোধ ও বিপরীতে বিশ্বাসঘাতকতার এক গভীর গল্প। যাঁরা স্পাই থ্রিলারে আগ্রহী, অর্থাৎ এই জ্যঁরের ছবি পছন্দ করেন, তাঁদের জন্য এটি অবশ্যই দেখার মতো ছবি। বিজয় দেবরাকোণ্ডার প্রকৃত কামব্যাক বলা যেতেই পারে।
