ভাস্বতী ঘোষ
শুক্রবার আবার মুক্তি পেল সত্য়জিৎ রায় পরিচালিত ছবি ‘মহানগর’। TV9 বাংলা-কে ‘মহানগর’ নিয়ে অভিজ্ঞতা জানালেন মাধবী মুখোপাধ্যায়।
আমার শরীর ভাল নেই। জ্বর হয়েছে। তার মধ্যে এক ভাই ফোন করে খবর দিল যে, ‘মহানগর’ মুক্তি পেয়েছে। শুনলাম মুম্বই শহরে একটা শো হাউজফুল। কলকাতার সিনেমা হলে নাকি দর্শক দেখছেন ছবিটা। শরীর খারাপের মধ্যে এই খবরটা পেয়ে মন ভাল হয়ে গেল। ‘মহানগর’ ছবির স্মৃতি জানতে চাইলে, অনেক কথা মনে পড়ে। প্রোডাকশন ম্যানেজার এসে বললেন, আমাকে সত্যজিৎ রায় ডেকেছেন। একটা ছবির জন্য় উনি নাকি দেখা করতে চান। তখন উত্তর কলকাতায় থাকি। আর দেখা করতে হলে যেতে হবে দক্ষিণ কলকাতা। অতটা পথের ট্য়াক্সি ভাড়া পাব কোথায়? তারপর ভাবলাম, আমি গেলে ওঁর আমাকে দেখে পছন্দ হবে না। পছন্দ হওয়ার কোনও কারণ নেই। মাকে বললাম, ‘যাব না’। মা বললেন, সত্যজিৎ রায় যখন ডেকেছেন, যেতে হবে। প্রোডাকশন ম্যানেজার সেই সময় এসে আমাকে ট্য়াক্সিভাড়াটা দিতে চাইলেন। নিতে চাইনি সেটা। খুব লজ্জা করছিল। তবে ওঁরা জোর করেছিলেন, সেটা নিতে। যখন দেখা করতে পৌঁছালাম ঘর ভর্তি বই। বইয়ের মাঝে যতটুকু বসার জায়গা দরকার ততটুকুই ছিল। আমাকে দেখে উনি বললেন, আউটডোরে যাচ্ছেন। সেখান থেকে ফিরে জানাবেন। সেই সময়ে মনে হয়েছিল, এ যেন পাত্র-পাত্রী দেখার মতো। জানানো হবে মানে, সেই খবর আর আসবে না। তবে আবার ডাক পড়ল। সত্য়জিৎ রায় ডেকেছেন, কিন্তু আমি পাউডার মেখেও যাইনি। আমি যেমন, ঠিক তেমনভাবে গিয়েছিলাম। কারণ আমি জানতাম, আমাকে নেওয়ার কোনও কারণ নেই। তবে দ্বিতীয় দিনে উনি আমাকে ছবির চিত্রনাট্য়টা দিলেন। তখন পুরো চিত্রনাট্য় দেওয়া হতো অভিনেতা-অভিনেত্রীদের। শুটিংয়ের সময়ে আর এক বিপদ। আমার চোখে আঞ্জনি হয়েছিল। এদিকে টানা দশ দিন শুটিং ছিল। কিন্তু সিনেমাটোগ্রাফার সুব্রত মিত্র এমনভাবে শট নিয়েছিলেন যে বোঝাই যায়নি। এত বছর পর সেই ছবি আবার দর্শক দেখছেন, ভাবলে খুব ভাল লাগছে। ছবিটা নিয়ে এত কথা বলতেও আজ খুব ভাল লাগল।