“কেউ চায় না তোমাকে, লিস্টে তুমি নেই-ই’, বয়ফ্রেন্ডের মুখ থেকে শুনতে হয়েছিল অভিনেত্রী নীনা গুপ্তকে। সম্মুখীন হতে হয়েছিল নানা তিক্ত অভিজ্ঞতার। কিংবদন্তী ক্রিকেটার ভিভ রিচারডসের সঙ্গে বিবাহ বহির্ভূত সম্পর্ক, অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়া এবং ৪৮-এ এসে নতুন করে জীবন শুরু করা নিয়ে অকপট তিনি। এক চ্যাট-শো’তে উজাড় করলেন মনের গোপনে জমে থাকা নানা অজানা কথা।
৮০’র দশকে ক্রিকেটার ভিভ রিচারডসের সঙ্গে সম্পর্কে জড়িয়েছিলেন নীনা। তাঁদের সম্পর্কের কথা জানতে বাকি ছিল না কারও। কিছু বছর পর জন্ম হয় ভিভ এবং নীনার সন্তান মাসাবা’র। ভিভের তখন অন্য দেশে ভরা সংসার। বিয়ে করেননি ওঁরা। ভিভ ফিরে যান স্ত্রী’র কাছে। নীনা এ দেশে একা হাতে মানুষ করেন মাসাবাকে। ভিভের সঙ্গে বিচ্ছেদের পর বহু পুরুষ এসেছে তাঁর জীবনে। সম্মুখীন হতে হয়েছে এমন সব অভিজ্ঞতার যা ভাবলে এখনও শিউরে ওঠেন তিনি। চ্যাট-শো’য়ে নীনা জানান, একবার এক প্রেমিকের সঙ্গে তুমুল ঝামেলা হচ্ছিল তাঁর। সে সময়েই সেই প্রেমিকটি নীনাকে বলে বসেন, ‘ইউ আর স্টিল অন দ্য শেলফ’। ভালবাসা, বিয়ে, সংসার তো দূরের কথা, নীনাকে তিনি চান-ই না। কষ্ট পেয়েছিলেন নীনা। বুক ফেটে গিয়েছিল।
বারেবারে হৃদয় ভেঙেছে তাঁর। তবু জোর করে ভালবাসা বিহীন বিয়ের পিঁড়িতে উঠতে পারেননি। সে রকমই এক ঘটনার প্রসঙ্গ টেনে এনে নীনা বলেন, “আমার এক ছেলে বন্ধু ছিল। ভাল বন্ধু। কোনওদিনই বন্ধুত্ব ছাড়া তাঁর প্রতি অন্য কোনও টান অনুভব করিনি আমি। আমার অন্যান্য বন্ধুরা রীতিমতো তাঁকে বিয়ে করার জন্য আমায় চাপ দিতে থাকে। আমি যত বলি, আমার ও শুধুই বন্ধু, তাতে প্রেম নেই, যৌনতা নেই… ওঁদের বক্তব্য ছিল , “ছেলেটি খুব ভাল। নিজের ফ্ল্যাট আছে। বিয়ে করে নাও। দেখবে ভালবাসা হয়ে যাবে।”
নীনা পারেননি। প্রকৃত ভালবাসা খুঁজে পেতে লেগে গিয়েছিল অনেকগুলো বছর। ৪৮ বছর বয়সে এসে বিবেক মেহরাকে ২০০৮ সালে বিয়ে করেন তিনি। মেয়ে মাসাবাও তখন বড়। নীনার কথায়, “বিয়ের কিছু বছর পর বুঝেছি নিজের খুশির জন্য কারও উপর নির্ভর করার প্রয়োজন হয়না। তুমি তোমার কাজ কর। সে তো তোমায় আটকাচ্ছে না। সেটাই বড় ব্যাপার।”
এই সম্পর্কে ঝামেলা হয় না। “হয়, অবশ্যই হয়”, মেনে নিলেন নীনা। বললেন, “যদি স্বামীর উপর রেগে যাই, তখন ওঁর ভাল দিকগুলো মনে করার চেষ্টা করি। ব্যস, রাগ চলে যায়। তোমাকেই সিদ্ধান্ত নিতে হবে সম্পর্ককে কেমন ভাবে রাখতে চাও তুমি। হাল ছেড়ে দেওয়া তো সহজ। যদিও তা অনেক পরে বুঝেছি আমি।”
জীবনে ভুল সময়ে ভুল সিদ্ধান্ত নিয়েছেন অনেক, মেনে নিয়েই আর পেছনে ফিরে তাকাতে চান না তিনি। মেয়ে মাসাবাও জীবনে প্রতিষ্ঠিত। জীবনের বাকি দিনগুলো নীনা কাটাতে চান আনন্দে, বাঁচতে চান নিজের শর্তে।