Bangla NewsEntertainmentOtt actor anirban chakraborty opens up on his on screen character Detective eken babu
Anirban Chakraborty: জটায়ু না একেনবাবু, চেহারাগত মিলের জন্যই এই গোলমাল রয়েছে, থাকবে: অনির্বাণ চক্রবর্তী
Eken Babu: একেন্দ্র সেন যে একজন গোয়েন্দ, তাঁর ভিতরে যে ওই গোয়েন্দাসত্ত্বাটা আছে, তাকে বাইরে থেকে দেখলে বোঝা যায় না। অন্য গোয়েন্দাদের দেখলে যেমন বোঝাই যায়, এর ক্ষেত্রে তেমনটা ঘটে না।
Follow Us
জয়িতা চন্দ্র
এবার ‘কলকাতায় একেন্দ্র’ সেন মুক্তি পেল। এই নিয়ে সপ্তম গল্প, খুব কম সময় গোয়েন্দা প্রতিযোগিতায় নাম লিখিয়ে দর্শক দরবারে হিট একেন্দ্র সেন। আর জটায়ু? চরিত্রের বিভ্রাট ঘটে না কখনও? TV9 বাংলাকে জানালেন অভিনেতা অনির্বাণ চক্রবর্তী।
ছ’টা সফর পেরিয়ে একেন্দ্র সেন পর্দায় কতটা পরিণত?
এর উত্তরটা একটু অন্যভাবে দিচ্ছি…। একেনবাবু যখন করতে শুরু করেছিলাম (২০১৮), তখন আমি এই চরিত্রটা সম্পর্কে খুব বেশি জানতাম না। তখন গল্প পড়ার মাধ্যমে, চিত্রনাট্য দেখে যেমনটা মনে হয়েছিল, ঠিক তেমনটাই করেছিলাম। মাঝে একটা ছবিও হয়েছে, পরবর্তী ছবির শুটিং-ও শেষ করলাম সম্প্রতি, সব মিলিয়ে আটবার আমি একেন্দ্র। এটা করতে-করতে আমি চরিত্রটাকে ভীষণ কাছ থেকে জানতে পেরেছি। নতুন করে আবিষ্কার করতে পেরেছি। যার ফলে পর্দায় উপস্থাপনার ক্ষেত্রে একটা পরিবর্তন এসেছে। সিজ়ন ১ ও সিজ়ন ৬ দেখলে তা বোঝা-ই যায়। বার বার একেন হয়ে ওঠার ফলে এখন আমার মধ্যেও একটা ধারণা তৈরি হয়েছে এই চরিত্রটা নিয়ে।
পর্দায় আপনি প্রথম একেন চরিত্র করলেও দর্শক নাম দিয়েছিলেন জটায়ু। এই জটায়ু মোড়ক ভেঙে বেরিয়ে একেন্দ্র সেন হয়ে ওঠার চ্যালেঞ্জটা কীভাবে নিয়েছিলেন?
আমি যখন প্রথম একেনবাবু করি, তখন লুকটা নিয়ে অনেক পরীক্ষা-নিরীক্ষা চলে। তবে তখন কিন্তু আমি জটায়ু করিনি। আমি বাস্তবে যেমন দেখতে, তাতে শুধু গোঁফটা লাগিয়ে দেওয়া হল, পোশাকটা নির্দিষ্ট করা হল, তারপরই লুকটা দর্শকের চোখে খানিকটা জটায়ু হয়ে গেল। এই দুই চরিত্রের মধ্যে সামান্য কিছু মিল বর্তমান, যেমন হিন্দি বলার ক্ষেত্রে সমস্যা, বাকিটা কিন্তু ভিন্ন ধাঁচের, ভিন্ন স্বাদের। এটাও শুনেছিলাম, একেনবাবু হয়েছিল বলেই আমায় জটায়ু চরিত্রটিতে কাস্ট করা হয়। তবে লালমোহন গাঙ্গুলি চরিত্রটা তো বড় পাওয়া বটেই।
এই দুই চরিত্র কখনও মিলেমিশে যায় না?
আমি চেষ্টা করি একটা মার্জিন বজায় রাখার। একটা সময় হয়েছে যখন আমায় এমন তিনটে চরিত্র একসঙ্গে করতে হয়েছে। এক তো হল আমি একেন করছি, যাঁর লুকটা জটায়ুর মতো। আবার আমি জটায়ু করছি, যাঁকে দেখতে খানিকটা একেনবাবুর মতো। আবার মাঝে অন্য ছবিতে (‘কাকাবাবুর প্রত্যাবর্তন’) এমন একটা চরিত্র করলাম যিনি জটায়ুর মতো সেজে থাকেন। তিনি জটায়ুও নন, একেনও নন। আমি চেষ্টা করেছি সেই ফারাকটা বজায় রাখার, কেউ বুঝেছেন, প্রশংসা করেছেন। কেউ-কেউ হয়তো বলেননি, একটা ব্লাডর এরিয়া তো থাকেই।
একেন্দ্র সেন রহস্যের সমাধান করে, কিন্তু জটায়ু নয়। বার বার একেন্দ্র করে যখন জটায়ু হলেন, কোথাও কি চরিত্রের তীক্ষ্ণতায় সেই ধার কাজ করছিল?
একেন্দ্র সেন যে একজন গোয়েন্দ, তাঁর ভিতরে যে ওই গোয়েন্দাসত্ত্বাটা আছে, তাকে বাইরে থেকে দেখলে বোঝা যায় না। অন্য গোয়েন্দাদের দেখলে যেমন বোঝাই যায়, এর ক্ষেত্রে তেমনটা ঘটে না। এই মানুষটার মধ্যে দু’টো স্তর আছে। একজন সহজ-সরল ছেলেমানুষ, আর একজন বিচক্ষণ বুদ্ধিমান।
জটায়ু গোয়েন্দার একজন ভাল বন্ধু। তার বুদ্ধি রয়েছে, কারণ তিনি লেখেন, যথেষ্ট দায়িত্ববান, তবে সেই দাপটটা তাঁর নেই। তিনি ভিতরে-বাইরে একইরকম। খোলা বইয়ের মতো। জটায়ুর কোনও মাল্টি লেয়ার নেই। এটা আমার কাছেও যখন ক্লিয়ার হয়, তখন অভিনয় করতেও বেশ সুবিধে হয়।
বড়পর্দায় ফেলুদা, ব্যোমকেশ-এর পাশে জায়গা করে নেন কাকাবাবু। তবে মিতিন মাসী, কিরীটি চরিত্ররা ততটা পসার জমাতে পারেনি, একেন্দ্র সেন এই লড়াইয়ে পাকা জায়গা করে নিতে পারল কেন বলে আপনি মনে করেন?
প্রত্যেকেই আলাদা, তবে তাঁদের একটা কমন বিষয় হচ্ছে তাঁরা প্রত্যেকেই ভীষণ সিরিয়াস। তাঁদের মধ্যে হিরো বিষয়টা বর্তমান। একেন্দ্র সেন ঠিক যেন আমার-আপনার ঘরের মানুষ। ধরুন দীর্ঘদিন ধরে পাড়ায় একজন মজার মানুষ রয়েছেন, কিছুদিন পর জানতে পারলেন তিনি গোয়েন্দা, বিষয়টা এমন। আগে এমন গোয়েন্দা দেখা যায়নি।
শুরুর দিকে একটা ঝুঁকিও ছিল, এমন একজন গোয়েন্দাকে দর্শক নেবেন কি না…। এ আবার কেন গোয়েন্দা? তবে দেখলাম এটাই একেনের ইউএসপি হয়ে দাঁড়িয়েছে। একদিকে সহজ মানুষ, অন্য দিকে দারুণ বুদ্ধি—এই সমীকরণটা, আর একটা হল একেনবাবুর গল্পগুলো ভীষণ পরিষ্কার, অর্থাৎ সহজ। তাই-ই বড়দের পাশাপাশি ছোটরাও বেশ পছন্দ করে একেনকে। আমার মতে এই দুই কারণেই জায়গা পেল একেন্দ্র।