ইন্ডাস্ট্রিতে তিনি নতুন নন। ১৫ বছর দর্শক তাঁকে দেখেছেন অভিনেত্রী হিসেবেই। দাপুটে ও সাহসী এক অভিনেত্রী। তিনি রূপসা গুহ। অনেকগুলো বছর কাটিয়েছেন টলিপাড়ায়। অভিনয়ের পাশাপাশি মনের মধ্যে লালন করেছেন আরও এক সুপ্ত ইচ্ছে। পরিচালক হতে চেয়েছেন বরাবরই। আরও এক দাপুটে ও সাহসী অভিনেত্রী দামিনী বেনি বসুকে নিয়ে আগেই তৈরি করেছেন শর্ট ফিল্ম ‘লকড ইন’। সম্প্রতি একটি ছবি তৈরি করছেন রূপসা। শর্ট নয়, ফিচারও নয়। শর্ট ও ফিচারের মাঝামাঝি ছবি। সিমেনার ভাষায় যাকে বলে ‘ফিচারেট’। ইন্ডাস্ট্রির অন্দরের অনেকেই তাঁকে শৈল্পিক মানুষের আখ্যাও দিয়েছেন ইতিমধ্যে। বলেছেন, রূপসা বরাবরই খুব ক্রিয়েটিভ মানুষ। সারাক্ষণই কাজ নিয়ে ভাবনাচিন্তা করেন তিনি। তাঁর মাথায় অনেক আইডিয়া ঘোরে। সেই আইডিয়াকে পাথেয় করেই পরিচালক হিসেবে নিজের নতুন জার্নি শুরু করেছেন অভিনেত্রী। আত্মবিশ্বাসী অভিনেত্রী TV9 বাংলার কাছে ধরা দিলেন আর বললেন, “যে যার মতো সুন্দর। কারওর সঙ্গে কারও তুলনা করা ধৃষ্টতা। যে যার ক্যানভাসে নিজের মতো ছবি আঁকেন। আমিও তাই। মাঝে মাঝে আমার মনের বয়স ১০, কখনও মাথার বয়স ১০০। শূন্য নিয়ে লোফালুফি করা আরকী।”
যে ছবি রূপসা তৈরি করেছেন, তার নাম ‘হাউ আর ইউ ফিরোজ়’। একজন পার্সি আর্টি ডিলারের গল্প। বাস্তব থেকে উঠে আসা একটি চরিত্র। সেখানে অভিনয় করেছেন বাস্তবেরই এক পার্সি আর্ট ডিলার সিরাজ় টাংসালওয়ালা। তাঁকে ও তাঁর সংগ্রহে থাকা দুর্মূল্য ও পুরনো জিনিস দেখে মাথার মধ্যে গল্প বুনতে শুরু করেছিলেন রূপসা। বাস্তবের সিরাজ় ও পর্দার ফিরোজ় কোথাও এক হয়ে গিয়েছিল। দু’জনেই ইংরেজিতে কথা বলেন। অন্যান্য চরিত্ররা যদিও কথা বলে বাংলায়। ফলে ছবিটিকে দ্বিভাষিক। কলকাতার প্রেক্ষাপট। গোটা বিষয়টিকে স্বাভাবিক রাখতে চেয়েছেন রূপসা। যে বাস্তবে বাস করে কলকাতার কিছু মানুষ, কিছু অতীত, কিছু বর্তমান ও ভবিষ্যৎ।
TV9 বাংলাকে রূপসা বলেছেন, “চারপাশে যা ঘটছে, সেটাই আমাদের অনুপ্রেরণা। সিরাজ়কে দেখে সুন্দর মানুষ বলে মনে হয়েছিল। আমি একজন পেশাদার অভিনেতাকেই ফিরোজ়ের চরিত্রে কাস্ট করতে চেয়েছিলাম। কিন্তু মনে হল, সিরাজ়ের সঙ্গে মক সেট করে দেখি। দেখলাম, ভালই লাগছে। আরও স্বাভাবিক হয়ে উঠল বিষয়টি। অনেক বেশি বিশ্বাসযোগ্য মনে হল সিরাজ়কে। আমার ছবিতে আরও অনেক গুরুত্বপূর্ণ চরিত্র রয়েছেন। সেই চরিত্রগুলিতে কাজ করেছেন অশোক বিশ্বানাথন, খেয়া চট্টোপাধ্যায়, রানা বসুঠাকুর, বিদ্যুৎ দাস, দেবাশিস মুখোপাধ্য়ায়, আলকারীয়া হাশমির মতো অভিনেতারা।”
নিজে অভিনেত্রী হওয়া সত্ত্বেও ইচ্ছে করেই অভিনয় করেননি রূপসা। বলেছেন, “ছবির সবকটি ডিপার্টমেন্টই আমাকে দেখতে হচ্ছিল। আমার বারবারই মনে হয়েছে, খেয়া যে চরিত্রটা করেছে সেটা অনেকটাই আমি নিজে। আমি যখন প্রথমবার ওই বাড়িতে গিয়েছিলাম, অবাক হয়ে তাকিয়েছিলাম।”
ছবির গল্পকে ঘিরে একটি মৌলিক প্রশ্ন – ‘হাউ আর ইউ ফিরোজ়?’ (ফিরোজ় তুমি কেমন আছ?) সেই প্রশ্নই গল্পের গতিপথ নির্ধারণ করে। তারপর ফিরোজ়ের জীবনে অস্তিত্বের সংকট তৈরি করে একটি চিঠি। গল্প এগিয়ে যায়। ছবির চিত্রনাট্য এবং পরিচালনায় রূপসা গুহ, চিত্রগ্রাহক বাসব মল্লিক, সহযোগী পরিচালক আরন টার্গেন এবং সম্পাদক চন্দন বিশ্বাস।
আরও পড়ুন: Wasim Kapoor: বাড়িতেই মৃত্যু চিত্রশিল্পী ওয়াসিম কাপুরের, শোকের ছায়া শিল্প জগতে