AQI
Sign In

By signing in or creating an account, you agree with Associated Broadcasting Company's Terms & Conditions and Privacy Policy.

‘আমি ঝুলি না, ঝোলাই!’ শাশ্বতর সংলাপ নিয়ে চরম বিতর্কে রাজনৈতিক আক্রমণ রাজ চক্রবর্তীর

তবে এবার মণীষীদের নামের সঙ্গে এমন সংলাপ যুক্ত হওয়ায় তা মাত্রা ছাড়িয়েছে বলে মত সংশ্লিষ্ট মহলের। উল্লেখ্য, কিছুদিন আগেই পাইরেসির কারণে সাইবার ক্রাইম দপ্তরের দ্বারস্থ হতে হয়েছিল রাজকে। সেই রেশ কাটতে না কাটতেই এবার সংলাপ-বিতর্কের মুখে পড়লেন পরিচালক।

'আমি ঝুলি না, ঝোলাই!' শাশ্বতর সংলাপ নিয়ে চরম বিতর্কে রাজনৈতিক আক্রমণ রাজ চক্রবর্তীর
| Updated on: Dec 30, 2025 | 5:49 PM
Share

মুক্তির আগেই বিতর্কের মুখে পড়ল রাজ চক্রবর্তীর নতুন ছবি ‘হোক কলরব’। ছবির টিজারে অভিনেতা শাশ্বত চট্টোপাধ্যায়ের মুখে একটি বিশেষ সংলাপ ঘিরেই উত্তাল সোশ্যাল মিডিয়া। বিপ্লবী ক্ষুদিরাম বসুর মতো, মণীষীদের নাম নিয়ে তৈরি এক চটুল সংলাপ বাঙালির ভাবাবেগে আঘাত করেছে বলে অভিযোগ তুলেছেন নেটিজেনদের একাংশ।

ঠিক কী রয়েছে টিজারে?

ছবির টিজারে শাশ্বত চট্টোপাধ্যায়কে একজন আইপিএস অফিসারের ভূমিকায় দেখা গিয়েছে। ছবিতে তাঁর চরিত্রের নাম ‘ক্ষুদিরাম চাকী’। একটি দৃশ্যে তাঁকে বলতে শোনা যায়, “নমস্কার, আমি ক্ষুদিরাম চাকী। না, আমি ঝুলি না, ঝোলাই!” বিপ্লবী ক্ষুদিরাম বসু এবং প্রফুল্ল চাকীর আত্মবলিদানকে এভাবে তুচ্ছতাচ্ছিল্য করা হয়েছে বলেই মনে করছেন অনেকে। আর এই নিয়েই ক্ষোভ জমেছে নেটিজেনদের একাংশের। দেশের জন্য যাঁরা হাসিমুখে ফাঁসির দড়ি গলায় পরেছিলেন, তাঁদের নিয়ে এমন ‘রগরগে’ সংলাপ বাংলা সিনেমায় কেন? সেই প্রশ্নই এখন বড় হয়ে দাঁড়িয়েছে।

টিজারটি প্রকাশ্যে আসতেই নিন্দার ঝড় বয়ে গেছে ফেসবুক, এক্স (টুইটার)-সহ বিভিন্ন সোশাল মিডিয়া মাধ্যমে। জনৈক এক নেটিজেনের কথায়, “বাঙালি কি নিজের শিকড় আর সংস্কৃতিকে এভাবেই অসম্মান করতে শিখছে?” শাশ্বত চট্টোপাধ্যায়কেও বিঁধতে ছাড়েননি দর্শকরা। কেউ কেউ তাঁর পুরনো ছবি ‘দ্য বেঙ্গল ফাইলস’-এর প্রসঙ্গ টেনে খোঁচা দিয়ে বলেছেন, “উনি কি সংলাপের মর্ম না বুঝেই বারবার এমন কাজ করেন?” পাশাপাশি, রাজনৈতিক ব্যক্তিত্বদের ‘মৌনতা’ নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন অনেকে।

পরিচালক রাজ চক্রবর্তীর ‘প্রলয়’ বা ‘আবার প্রলয়’ সিরিজে শাশ্বতকে দাপুটে পুলিশ অফিসার হিসেবে দেখা গিয়েছিল। সেখানেও তাঁর সংলাপ ছিল যথেষ্ট কড়া। তবে এবার মণীষীদের নামের সঙ্গে এমন সংলাপ যুক্ত হওয়ায় তা মাত্রা ছাড়িয়েছে বলে মত সংশ্লিষ্ট মহলের। উল্লেখ্য, কিছুদিন আগেই পাইরেসির কারণে সাইবার ক্রাইম দপ্তরের দ্বারস্থ হতে হয়েছিল রাজকে। সেই রেশ কাটতে না কাটতেই এবার সংলাপ-বিতর্কের মুখে পড়লেন পরিচালক।

এই বিতর্ক নিয়ে বলতে গিয়ে Tv9 Bangla-কে রাজ চক্রবর্তী জানান, ”হোক কলরব মুক্তি পাচ্ছে, ২০২৬ সালের ২৩ জানুয়ারি। এই ছবির মূল চরিত্রের নাম হচ্ছে ক্ষুদিরাম চাকী, একজন পুলিশ অফিসার। সিনেমায় কোন পরিস্থিতিতে এমনটা বলেছেন, তা সিনেমা না দেখলে বোঝা যাবে না। বিজেপি, বিশেষ করে আইটি সেল এটা নিয়ে একটা প্রোপাগান্ডা শুরু করেছে। এরা ক্ষুদিরাম চাকীর সঙ্গে, ক্ষুদিরাম বসুকে মিলিয়ে দিয়েছে। ক্ষুদিরাম বসু একজন মহান ব্যক্তিত্ব, তাঁর সঙ্গে ক্ষুদিরাম চাকীর কোনও তুলনা নেই। এই যেমন, প্রেমেন্দু বিকাশ চাকী, আমার ছবির সিনেম্যাটোগ্রাফার, আমি যদি এর সঙ্গে প্রফুল্ল চাকীকে মিলিয়ে দিই! তাহলে অসুবিধা আছে। যেমন নরেন্দ্রনাথ দত্তর সঙ্গে নরেন্দ্র মোদীকে মিলিয়ে দেওয়া যাবে না। ঠিক তেমনই ক্ষুদিরাম চাকীর সঙ্গে ক্ষুদিরাম বসুকে মিলিয়ে দেওয়া যাবে না। বিজেপি আইটি সেলের কোনও কাজ নেই। এরা নানারকম উসকানিমূলক কাজ করছে। আমার এই ছবি তৈরির প্রথম দিন থেকেই এটা করে চলেছে। এরা বাঙালির ভাবাবেগে আঘাত করার চেষ্টা করছে, একটা প্রোপাগান্ডা তৈরির কাজ করছে। যাঁরা বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়কে বঙ্কিমদা বলে, বিদ্যাসাগরের মূর্তি ভাঙে, রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরকে অসম্মান করে, তাঁদের কাছ থেকে আমরা বাঙালির ভাবাবেগের কথা শুনব? ইলেশন আসছে, তাই যা খুশি একটা ইস্যু করছে। সিনেমাটা না দেখলে বোঝা যাবে না। টিজার দেখে বোঝা যায় না। এখানে কোনও মহান ব্যক্তিত্বকে, বাঙালিরা অসম্মান করে না, করেনি,জ্ঞানত করবে না।”

নতুন বছরে ২৩ জানুয়ারি প্রেক্ষাগৃহে আসার কথা ‘হোক কলরব’-এর। সত্য ঘটনা অবলম্বনে তৈরি এই ছবিতে শাশ্বত ছাড়াও অভিনয় করেছেন রোহন ভট্টাচার্য, জন ভট্টাচার্য এবং ওম সাহানি। টিজার দেখে স্পষ্ট যে ছবিটিতে ভরপুর অ্যাকশন থাকবে। ছবিটির প্রযোজক শুভশ্রী গঙ্গোপাধ্যায়।