৯ অগস্ট। গোটা শহর তোলপার করে সামনে এসেছিল তিলোত্তমার নারকীয় হত্যাকাণ্ডের খবর। দিকে দিকে ছড়িয়ে পড়েছিল প্রতিবাদের আগুন। মানুষ নেমেছিল পথে। চেয়েছিল বিচার। যে লড়াই ২ সেপ্টেম্বরেও বর্তমানে। থামেনি সাধারণ মানুষ। দল-রাজনীতি ভুলে সকলেই নেমেছেন পথে। প্রথম থেকেই সেই লড়াইয়ে নাম লিখিয়েছিলেন অভিনেতা রুদ্রনীল ঘোষ। বারবার হয়েছেন সরব। তুলেছেন প্রশ্ন। ২ সেপ্টেম্বর রাত সাড়ে আটটা নাগাদ খানিক আশার আলো দেখলেন তিনিও।
একটানা পনেরো দিন জিজ্ঞাসাবাদ। অবশেষে গ্রেফতার হলেন আরজি করের প্রাক্তন অধ্যক্ষ সন্দীপ ঘোষ। সোমবার সিবিআই সন্দীপকে নিয়ে সিজিও থেকে বেরিয়ে নিজাম প্যালেসের উদ্দেশ্যে রওনা দিয়েছিল। তখন থেকেই প্রশ্ন উঠছিল আজ কি বড় কোনও সিদ্ধান্ত নেবে কেন্দ্রীয় এজেন্সি? এরপরই সিবিআই-এর দুর্নীতি দমন শাখার হাতে আর্থিক দুর্নীতি মামলায় গ্রেফতার হন সন্দীপ ঘোষ। যদিও তিনি তিলোত্তমার ধর্ষণ ও খুন মামলায় গ্রেফতার হননি।
এরপরই TV9 বাংলার তরফ থেকে রুদ্রনীলের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি একভাবে সুর তোলেন, বিচার চাই। তবে সাধারণ মানুষের লড়াই যে বৃথা যায়নি, CBI-এর পদক্ষেপ সেই আশাই দেখাল বলে অভিনেতার দাবি।
TV9 বাংলাকে কী বললেন রুদ্রনীল?
‘আজকের এই খবরে পশ্চিমবঙ্গের শাসকদল ছাড়া, দল-মত নির্বিশেষে নারী-পুরুষ, সারা পশ্চিমবঙ্গ, তিলোত্তমার পরিবার, তিলোত্তমার সহকর্মী, ডাক্তারেরা যাঁরা শিরদাঁড়া সোজা করে এখনও ধর্নায় বসে রয়েছেন সকলেই খানিক স্বস্তি পেল। সারা ভারতবর্ষের মানুষ, যাঁরা পশ্চিমবঙ্গের এই পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ডের দিকে তাকিয়ে ছিলেন, তাঁরা প্রত্যেকে আশার আলো দেখছেন। সবাই ধন্যবাদ জানাই সিবিআইকে। চারদিন ধরে যে পুলিশ বিভাগ, স্বাস্থ্য দফতর এবং PWD দফতর- যে বিভ্রান্তিমূলক তথ্য দেওয়া, ভুল সময়ে এফআইআর, তড়িঘড়ি দেহ পুড়িয়ে ফেলা, বিভিন্ন রকম প্রমাণ লোপাট করার চেষ্টা, এতকিছু মূলে যে নামটি বারবার উঠে আসছিল, যে লোকটাকে বাঁচাবার চেষ্টা করছিল, সেই নাম হচ্ছে সন্দীপ ঘোষ। ওই কলেজের সমস্ত ছাত্রছাত্রীরা বারবার এই লোকটার বিরুদ্ধে সোচ্চার হয়েছিল, তৃণমূলের পুলিশ চারদিন তদন্ত চালিয়ে কোনও কিছুই করেনি, এবং শেষমেশ CBI তাকে গ্রেফতার করল। অর্থাৎ CBI তার তদন্ত চুপচাপ সঠিক পথে নিয়ে যাচ্ছে। শুধু সন্দীপ ঘোষ নয়, যাঁরা যাঁরা এই ঘটনা চলাকালীন সন্দীপ ঘোষকে প্রমোশন দিয়েছেন, বাঁচানোর চেষ্টা করেছেন, তাঁদেরকেও যেন গ্রেফতার করা হয়। এবং দ্রুত সুপ্রিম কোর্টের হাতে তুলে দেয়। এই একটি দাবিই রাখছি।’