সময়ের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে পাল্টাচ্ছে অনেক কিছুই। পাল্টে যাচ্ছে ধারাবাহিকের গল্প, তার উপস্থাপনাও। যার কিছুটা ভাল আর কিছুটা নিয়ে প্রশ্ন ক্রমে তুলেই চলেছে একশ্রেণি। যার মধ্যে অন্যতম হল বাংলা ধারাবাহিকে হিন্দি গানের ব্যবহার। সব ক্ষেত্রে নয়, তবে বেশ কিছু ধারাবাহিকে এই ছবি নজরে আসে। পাশাপাশি কমে যাচ্ছে পাড়ায় পাড়ায় জলসার সংখ্যা। আজ কোথায় আধুনিক গান…! নেই বলা যাবে না, তবে তার সংখ্যা কমেছে, শহুরে মানুষের হাতে এখন সময় কোথায়? বাংলার বুকে তাই অনেকটাই অংশ জুড়ে রাজত্ব করছে হিন্দি গান। যদিও বাংলার বুকে হিন্দি গানের দাপট বরাবরই ছিল তুঙ্গে। এই প্রসঙ্গে গায়ক রূপঙ্কর বাগচির সঙ্গে TV9 বাংলা যোগাযোগ করলে, তাঁর গলায় উঠে এল আক্ষেপের সুর।
গায়ক বললেন, ”হিন্দি গান তো চিরকালই জনপ্রিয় ছিল আমাদের এখানে। পাশাপাশি এখন দেখছি পাঞ্জাবি গানও হয় খুব চলছে। আবার দক্ষিণী গানের একটা নতুন চল শুরু হয়েছে। তাহলে আমরা যাঁরা গান বাজনা করছি, আমরা কি মানুষকে আনন্দ দিতে পারছি না? এ প্রশ্ন আমার মনে মাঝে-মাঝে উঁকি দেয়। আমরা হয়তো সেই পর্যায়, সেই স্মার্টনেসটায় পৌঁছতে পারছি না। একটা সময় মানুষের সঙ্গে সংযোগের এক বড় মাধ্যম ছিল বাংলা আধুনিক গান, নজরুলগীতি, অতুলপ্রসাদের গান, কিংবা রজনীকান্ত সেনের গান কিংবা দীজেন্দ্রলাল রায়ের গান, সেটা আজ কোথায়? রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর তো অজস্র গান তৈরি করেছেন। কিন্তু অধিকাংশ সময়ই দেখা যায় তাঁর জনপ্রিয়গানগুলো নিয়ে আমরা চর্চা করি।”
এখানেই শেষ নয়, পাশাপাশি তিনি আরও বলেন, ”নিজেদের গান, সংস্কৃতির প্রতি ভালবাসাটা কোথাও গিয়ে যেন একটু কমে যাচ্ছে। আমার মনে হয় বাংলাভাষাকে আরও মানুষের কাছে ইন্টেরেস্টিং করে তুলতে হবে। বাংলা ভাষা নিয়ে যাঁরা কাজ করছেন, বাংলা ছবিতে যাঁরা কাজ করছেন, বাংলা নাটক নিয়ে যাঁরা কাজ করছেন, সাহিত্যে যাঁরা রয়েছেন, এমন কি যাঁরা গান লিখছেন, তাঁদেরকে একটু সচেতন হতে হবে। ভাবতে হবে কীভাবে বাংলা বিমুখ হয়ে যাওয়া বাঙালিকে আবারও মূলস্রোতে ফেরানো যায়। কেবল যাঁরা শুনছেন না, দেখছেন না তাঁদেরকেই দোষ দিয়ে যাব, ‘আপনারা বাংলা সিনেমার পাশে থাকছেন না, বাংলা গান শুনছেন না, থিয়েটার দেখছেন না’– এটা বললে চলবে না। আমাদেরও নিশ্চয়ই কোনও গলদ রয়েছে। আমরা সেটা তৈরি করতে পারছি না। নিশ্চয়ই আমাদের খামতি রয়েছে। দোষারোপ করার আর বোধহয় সময় নেই।”