‘ব্যথাটা শেয়ার করতে পারব না ঠিকই, তবে…’, ঐন্দ্রিলাকে নিয়ে লিখলেন সব্যসাচী

aryama das | Edited By: অমর্ত্য মুখোপাধ্য়ায়

Mar 04, 2021 | 6:36 PM

ভেঙে পড়েছিল ঐন্দ্রিলা। দ্বিতীয় বার আবার ক্যানসার ওকে কাবু করবে কিছুতেই মেনে নিতে পারছিল না মেয়েটা। বলেছিল চিকিৎসা করাবে না। বার বার বলছিল আমাকে বাড়ি নিয়ে চল, আমাকে বাড়ি নিয়ে চল...

ব্যথাটা শেয়ার করতে পারব না ঠিকই, তবে..., ঐন্দ্রিলাকে নিয়ে লিখলেন সব্যসাচী

Follow Us

সব্যসাচী চৌধুরী

বাড়ি ফিরেছে ঐন্দ্রিলা। প্রথম কেমো সাইকেলটা নিতে পেরেছে ভালভাবেই। আমি ফিরেছি ওর ফেরার দিন দুই আগে। শুটেও জয়েন করেছি। ইছাপুরের বাড়িতে বসে ঐন্দ্রিলা এখন আগের থেকে অনেকটা ধাতস্থ।
অথচ শুরুটায় তো এমন ছিল না সব কিছু। গত বছর অগস্ট মাসেই টেস্ট হয়েছিল ঐন্দ্রিলার। রিপোর্ট সব নরম্যাল ছিল। কত খুশি ছিল সবাই। ও নিজেও…এই কিছু দিন আগে জন্মদিনও পালন করল সবাইকে নিয়ে। ফেব্রুয়ারির মাঝামাঝি হঠাৎ করেই কাঁধে ব্যথা। দিল্লি যাওয়া হল। ওর বাবা-মা দুজনেই মেডিক্যাল প্রফেশনে। সেখানে গিয়ে যাবতীয় টেস্ট হল। ডক্টর দোদুল মন্ডল জানালেন ক্যানসার। অনেকেই হয়তো জানেন, ওর আগে একবার ক্যান্সার হয়েছিল। সেই ক্যান্সারই যে আবার ফিরে এসেছে এমনটা নয়। এ বার ডান দিকের ফুসফুসের লোয়ার লোবে ৭ সেমি এক ম্যালিগন্যান্ট টিউমার ধরা পড়ে ওর। যা । ডাক্তার বলল টিউমারটা নাকি আগ্রেসিভ। দ্রুত বাড়ছে।

ভেঙে পড়েছিল ঐন্দ্রিলা। দ্বিতীয় বার আবার ক্যানসার ওকে কাবু করবে কিছুতেই মেনে নিতে পারছিল না মেয়েটা। বলেছিল চিকিৎসা করাবে না। বার বার বলছিল আমাকে বাড়ি নিয়ে চল, আমাকে বাড়ি নিয়ে চল…
দিল্লি পৌঁছলাম। ওকে যে করেই হোক ট্রিটমেন্টের জন্য রাজি করাতে হবে। আমি তো জানি, ও হেরে যাওয়ার মেয়ে নয়। ওর বাবা-মা,আমি সবাই মিলে বোঝাতে শুরু করলাম। ডক্টর মন্ডল বাঙালি, সুবিধেই হল তাতে। আগের বারও ওর চিকিৎসা উনিই করেছিলেন। তিনিও বোঝালেন। ও রাজি হল।


ক্যান্সার আগ্রেসিভ। কিন্তু তার চেয়েও বেশি আগ্রেসিভ কী জানেন? ওর মনের জোর। ওর ভাল থাকার তাগিদ। ২১দিন পর পর একটা করে মোট চারটে কেমো নিতে হবে ওকে। প্রতিটি কেমো চলবে পাঁচ দিন ধরে। বুঝতেই পারছেন, কেমো শেষ হতে হতে তিন মাস। টিউমারটা একটু ছোট হয়ে এলে হবে সার্জারি। তবে একটা সমস্যা রয়েছে ওর ক্যান্সারের গ্রেডিং করা সম্ভব নয়। ছয় বছর পর কেন আবার ক্যান্সার ফিরে এল, তা নিয়েই ডাক্তাররা সন্দিহান।

জানেন, রোগটা ফিরে আসার পরে ঐন্দ্রিলা একটু অবুঝ হয়ে গিয়েছে। মাঝেমাঝে খেতে চায়না, চিকিৎসা করাতে চায় না। ওকে তো বুঝতে হবে ওর ভাল থাকার সঙ্গে আরও অনেকের ভাল থাকা জড়িয়ে রয়েছে। ওকে এক্সপ্লেন করলে তখন কথা শোনে। ডাক্তার বলেছে এই টাইপের ক্যান্সারের প্রগনোসিস ভাল। অ্য়াগ্রেসিভ হলেও তা লোকালাইজড। ছড়িয়ে পড়ে না।

ওর বাবা চাইছে বাকি তিনটে কেমো কলকাতাতেই হোক। দেখা যাক, কী হয়। আগের থেকে ভাল আছে ও। ভাল তো থাকতেই হবে। ব্যথা তো শেয়ার করতে পারব না ওর। পাশে থাকব সব সময়। যে কোনও সমস্যাকেই তুড়ি মেড়ে উড়িয়ে দেব ঠিক।
‘সেরি (ওকে) ঐন্দ্রিলা শর্মা? ‘

 

 

 

Next Video