‘পটকা’। অভিনেতা অম্বরীশ ভট্টাচার্যকে এখন এই নামেই চেনেন দর্শক। সৌজন্য জনপ্রিয় ধারাবাহিক ‘খড়কুটো’। ‘খড়কুটো’ পরিবারে ‘পটকা’ যেন এক টুকরো খোলা হাওয়া। পরিবারের কারও মন খারাপ হলে তার ওষুধ রয়েছে ‘পটকা’র কাছে। আবার প্রয়োজনের সময় উচিত কথা বলতেও ছাড়েন না তিনি। এমন একটি চরিত্রে অভিনয় করতে গিয়ে কী শিখলেন অম্বরীশ?
TV9 বাংলাকে এ প্রসঙ্গে অম্বরীশ বললেন, “আমার একটা সহজাত প্রবণতা ছিল প্রায় নো অ্যাক্টিং করা। যেটা টেলিভিশনে কম হয়। সব চরিত্রে সেটা সম্ভব হয় না। কিন্তু পটকা চরিত্রটি ডাউন টু আর্থ, হ্যাপি গো লাইক মানুষ। ফলে নো অ্যাক্টিং প্র্যাকটিস করার সুযোগ পেয়েছি আমি। আমি এই অভিনয়ে বিশ্বাস করি। ধীরে ধীরে যত ডেভলপ করেছে অভিনয়, তার সঙ্গে স্ক্রিপ্টও বদলেছে। লীনাদি (চিত্রনাট্যকার লীনা গঙ্গোপাধ্যায়) নিজের কাজ দেখেন। অভিনেতা কী ভাবে অভিনয় করছে, দেখেন। তারপর স্ক্রিপ্টে সেগুলো ইনকরপোরেট করতে থাকেন। দু, আড়াই মাস পর থেকেই দেখা যায় অভিনেতা যে ভাবে স্কেচ করছেন, উনিও সে ভাবে করার চেষ্টা করেন। অন্তত আমি কাজ করতে গিয়ে এই সুবিধে পেয়েছি।”
শুধু ‘পটকা’র চরিত্র নয়, গোটা ধারাবাহিক নিয়েই দর্শক মহলে বিভিন্ন রকমের প্রতিক্রিয়া রয়েছে। সে প্রসঙ্গে অম্বরীশ বললেন, “এত ভাল ভাইভ টেলিভিশনে কম পেয়েছি। তবে পজিটিভ, নেগেটিভ দুরকমই আসে। বাচ্চা নিয়ে এখন যা দেখানো হচ্ছে, তাতে হয়তো নেগেটিভ বলছেন অনেকে। সবাই এই চরিত্র গুলোকে সত্যি ভাবেন তো। তবে পজিটিভটাই বেশি। আমি মনে করি অভিনয়ের যাপন মেগা সিরিয়ালেই হয় দিনের পর দিন। যেটা আগে থিয়াটারে হত। তিন মাস, চার মাস ধরে অভিনয় করতাম। সিনেমার যেমন ওয়ার্কশপ হয়। যে দৃশ্য ছবিতে নেই সেগুলো নিয়েও আলোচনা হয়। সিরিয়ালেই এই অভিনয়ের প্র্যাকটিস অনেক বেশি হয়। প্রত্যেক দিন অভিনয় করতে করতে, চরিত্র হতে হতে সেটা হাতের মুঠোয় চলে আসে।”
‘খড়কুটো’র পরিবারের অনস্ক্রিন বন্ডিং দেখে দর্শকের বড় অংশের মনে হয়েছে অফস্ক্রিনেও অভিনেতাদের বন্ডিং একই রকম। অম্বরীশ সেই দাবি মেনে নিয়ে বললেন, “সিরিয়ালে প্রত্যেক দিন যখন শুটিং হয়, তখন ইচ্ছে থাক বা না থাক বন্ধুত্ব তৈরি হয়েই যায়। বাড়ির লোকের তুলনায় সহকর্মীদের সঙ্গে বেশি সময় কাটাই আমরা। দীর্ঘ সময় বসে থাকার ব্যাপার থাকে অভিনয় জগতে। ফলে সবাই আত্মীয়র মতোই হয়ে যায়। কবে কোভিডের ভ্যাকসিন নিতে যাচ্ছে, সেই ডেটও জেনে যায়। শুধু খড়কুটো বলে নয়, প্রত্যেক সিরিয়ালেই আত্মীয়তা হয়ে যায়। আর এখানে যাঁরা অভিনয় করছেন তাঁরা দীর্ঘ অভিজ্ঞতা সম্পন্ন। ফলে প্রফেশনালিজম রয়েছে। মেগার প্লাস পয়েন্ট প্রত্যেকে অনেকদিন একসঙ্গে থাকছেন, প্রায় থিয়েটারেরই মতোই।”
কৌশিক গঙ্গোপাধ্যায়ের পরিচালনায় ‘লক্ষ্মী ছেলে’, ‘অর্ধাঙ্গিনী’, ‘কাবেরী অন্তর্ধান’, অরিন্দম শীলের পরিচালনায় ‘মায়াকুমারী’, দেবের সঙ্গে ‘টনিক’ সহ অম্বরীশ অভিনীত আরও বেশ কিছু ছবি রয়েছে মুক্তির অপেক্ষায়। ধীরে ধীরে সিনেমা হলে যাওয়া শুরু হয়েছে দর্শকের। তা দেখে খুশি অম্বরীশ। ওয়েবের পাশাপাশি বড় পর্দা নিয়ে আশাবাদী তিনি। এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “থার্ড ওয়েভের চোখ রাঙানি রয়েছে। তবুও অতনুদার (ঘোষ) ছবিটা (বিনি সুতোয়) প্রায় প্রত্যেকদিন হাউজফুল হয়েছে। আসলে বাঙালির সহজাত ইচ্ছে থাকে এন্টারটেনড হওয়ার। ওয়েব আর বড়পর্দা দুটো ফরম্যাট আলাদা। ছবি বড় পর্দার জন্যই তৈরি হয়। দুটোর স্বাদ দু’রকম। বিরিয়ানি খাই বলে যে ইলিশ মাছ খাব না, তা তো নয়।”
আরও পড়ুন, সাসপেন্স থ্রিলারে কাজ করলেন মিমি দত্ত, কী ভাবে প্রস্তুতি নিয়েছিলেন?