এবার থেকে তাহলে নতুন পরিচয়?
একদম। এবার থেকে আমার নতুন পরিচয় ‘লক্ষ্মী কাকিমা’।
কত বছর পর আবার টেলিভিশন?
চার বছর। ২০১৭-এ শেষ করেছি। মাঝে চার বছর বিরতি ছিল। আবার ফিরলাম।
বাড়ি ফিরেছি, বাড়ি ফিরেছি মনে হচ্ছে কি?
হ্যাঁ, এটা একদম ঠিক। কারণ টেলিভিশনটা এত ভালবাসি এবং টেলিভিশন থেকেই তো এত কিছু। আজ অবধি কত ভাল ভাল কাজ করেছি। ধারাবাহিকে কাজ করলে কেমন বাড়ির মতো আরাম পাওয়া যায়। সিনেমা একটা অন্য় অভিজ্ঞতা। ওটা একটা আলাদা ভাললাগা। তবে ধারাবাহিকের ক্ষেত্রে মনে হয় যেন বাড়িতেই আছি।
বড়পর্দা থেকে অনেকেই ছোটপর্দায় ফিরতে চান না। গল্পের একঘেঁয়েমি একটা কারণ থাকে। কিন্তু অপরাজিতা আঢ্যকে কী বাধ্য করল ফের টেলিভিশনে ফিরিয়ে আনতে?
না, আমার ওরকম কোনও ব্যাপার নেই। আমার মনে হয় মেগাতে অভিনয় করার একটা মজা আছে। অভিনয়ের একটা চর্চা থাকে প্রতিদিন। ছবি আর ধারাবাহিক এই দু’টো গুলিয়ে ফেলার কোনও ব্যাপারই নেই। হ্যাঁ, একটা সময় একঘেয়ে লাগে, লাগে না তা নয়। কিন্তু তা তো সব ক্ষেত্রেই। রোজ ছবি করলেও তা মনে হবে। কাজ করতে গেলে সবক্ষেত্রেই আমি স্বাচ্ছন্দ্য। আমি কোনও দিনই টেলিভিশন ছেড়ে দিইনি। মাঝে কোভিড ছিল। আমারও কিছুদিনের জন্য বিরতি নেওয়ার প্রয়োজন রয়েছে বলে মনে হয়েছিল। আমি নন-ফিকশন করছিলাম। তারপর মনে হল দর্শকরাও আমাকে চাইছেন। যাঁরা আমার অভিনয় দেখতে ভালবাসেন, তাদের জন্য আমার মনে হল টেলিভিশনটা আবার করা উচিৎ।
আপনার জীবনের সুপারস্টার কে?
আমার জীবনের সুপারস্টার আমার দিদিমা। কারণ আমি তাঁর জীবনের স্ট্রাগল দেখেছি। তাঁর উত্তরণ দেখেছি। দেখেছি নিজেকে ধরে রাখার ক্ষমতা। স্টার সে-ই, যে নিজেকে ধরে রাখতে পারে। আমি মনে করি স্বাধীনতা হল সচেতনতা। যে সচেতন, সে-ই স্বাধীন।
এই মুহূর্তে দাঁড়িয়ে ছোটবেলার কোনও স্মৃতি কি মনে পড়ছে… পাড়ার যে মুদির দোকানে আপনাকে হয়তো ধারে জিনিস কিনতে হয়েছিল?
আমি বিশ্বনাথদার দোকানে যেতাম। সেখানে গিয়ে বলতাম: “আমাকে চার আনার চানাচুর দাও।” ছোট্ট কাগজের ঠোঙাতে বিশ্বনাথদা আমাকে চানাচুর দিত। আমার পাড়ার দোকান। এখনও সেখানে যেতে আমার লজ্জা লাগে না। ওঁদের সঙ্গেই আমি বড় হয়েছি। আমার বাবা ওখানেই আড্ডা দিতেন। বিশ্বনাথদার ওই দোকানটার কথা আমার খুব মনে পড়ে।
পরবর্তীকালে আমিও একটা ছোট্ট স্টেশনারি দোকান করেছিলাম। নিজে গিয়ে বড়বাজার থেকে মাল কিনে আসতাম। বাবার মৃত্যুর পর মাকে সাহায্যের জন্য, পরিবার চালাতেই ওই স্টেশনারি দোকানটা খুলেছিলাম… অনেক আশা নিয়ে। যদিও তারপরেই আমার বিয়ে হয়ে যায়। সব মিলিয়ে তাই আমার মনে হয়েছিল এই চরিত্রটা সবার খুব চেনা একটা চরিত্র।
তাহলে কি বলতে পারেন একপ্রকার বৃত্ত পূর্ণ হল? একসময় এমনই এক স্বপ্ন দেখেছিলেন। আর আজ এমনই এক চরিত্র?
একদমই। আমার জীবনের স্বপ্ন ছিল আমাকে নিজের পরিচয়ে বাঁচতে হবে। আমি কারোর মা, কারোর স্ত্রী, কারোর মেয়ের পরিচয়ে বাঁচব না। তাতে আমাকে বাজারের আলু-পটল বিক্রি করতে হলেও করতে হবে। মুদির দোকান বা স্টেশনারি দোকান করতে হলেও হবে। নাচ শেখাতে হলেও শেখাব। কোনও কাজে আমার লজ্জা নেই। রাস্তায় দাঁড়িয়ে চপ বিক্রি করতে হলেও আমি করতে পারি। আমার কোনও লজ্জা নেই। কারণ আমি মনে করি সব কাজের মধ্যেই শিল্পবোধ আছে। আমি যে কাজটাই করি ভালবেসে করি। তাই আমি মনে করি সব কাজই আপনাকে সুপারস্টার বানাতে পারে।
আরও পড়ুন:Adrit Roy Exclusive: যারা নিজের ইচ্ছেয় বিয়ে দিচ্ছিল তারাই বিয়ে ভেঙে দিয়েছে: আদৃত রায়