বিহঙ্গী বিশ্বাস
কেমন আছেন?
এই আছি… চলে যাচ্ছে।
কাজে ফিরছেন, শুভেচ্ছা…
হ্যাঁ, কাজে ফেরা নিয়ে বহুদিন ধরেই কথা হচ্ছিল। হয় আমি করিনি, না হয় ওঁদের পছন্দ হয়নি। চ্যানেলের সঙ্গে দুটো প্রজেক্ট নিয়ে কথা হচ্ছিল। ডিসেম্বর রানে দা (নিসপাল সিং রানে, প্রযোজক) নিজেই এই প্রজেক্টটা নিয়ে কথা বলেন, অবশেষে এগোনো হচ্ছে। প্রোমো শুট হয়েছে, শুটিং এখনও বাকি।
বামাক্ষ্যাপা থেকে রামপ্রসাদ– ইচ্ছে করেই আধ্যাত্মিক চরিত্র বেছে নিচ্ছেন?
না না, আধ্যাত্মিকতা যে এই ভাবে কোনও চরিত্রের উপরে কাজ করে সেটা আমি বলব না। তবে হ্যাঁ, এই রকম চরিত্র করতে আমার ভাল লাগে, সেটা ওঁরাও জানতেন।
একই ধরনের চরিত্র পরপর, সব্যসাচী কি টাইপকাস্ট হয়ে যাচ্ছে?
ফেরুয়ারি মাসে ‘মহাপীঠ তারাপিঠ’ শেষ হয়েছে। তারপর কিছু না হলেও দশ-বারোটা কাজের কথা হয়েছে আমার সঙ্গে। কিন্তু সেগুলো হয়নি। এমনকি ডিসেম্বরেও যখন রামপ্রসাদ নিয়ে কথা হয় সে সময় আরও এক ধারাবাহিক নিয়ে কথা হচ্ছিল। এটা না করলে সেটা করতাম। যখনই কোনও পিরিয়ড ড্রামা হয় তখনই সেটাকে ক্যাটাগোরাইজ করে দিই আমরা। আমি যদি আজকে ভগবান বিষ্ণুর চরিত্র করি আবার গিয়ে যুধিষ্ঠিরও করি… সে ক্ষেত্রে দুটো চরিত্রই কি এক? ব্যাপারটা পিরিয়ডিক ড্রামা হলেও সবটাই আলাদা।
ঐন্দ্রিলার মা বলছিলেন ক্লিন শেভড নাকি তাঁর মেয়ের একদম পছন্দ ছিল না, এ ধারাবাহিক জন্য দাড়ি কেটে ফেলতে হল আপনাকে…
হ্যাঁ, প্রায় চার বছর পর ক্লিন শেভ করলাম। নিজেকেই অপরাচিত লাগে প্রথম প্রথম। তবে কাজের জন্য দরকার হলে তো করতেই হবে। অভিনয় তো শুধু অভিনয় নয়। যেমন বামার জন্য অনেকটা ওজন বাড়াতে হয়েছিল, ঠিক এইখানে প্রয়োজন ছিল ক্লিন শেভড লুক।
নতুন ধারাবাহিকে ফেরার খবরে অনেকেই বলছেন শোক ভুলে গিয়েছেন সব্যসাচী, কী বলবেন?
আমি সোশ্যাল মিডিয়ায় নেই। তাই কোথায় কে কী বলছেন আমি কিছুই জানি না, কিছুই দেখিও না। কর্তৃপক্ষ থেকে প্রোমো পাঠিয়েছিল, দেখেছি। ব্যস। এর বাইরে আমি সত্যিই জানি না মানুষ তা ভালবেসেছে কিনা, তাঁদের পছন্দ হয়েছে কিনা…। আর যাদের মনে হচ্ছে শোক ভুলে গিয়ে কামব্যাক করছি… আমি তো রিটায়ার করে চলে যাইনি কোথাও যে সেখান থেকে ফিরে আসব। তারাপিঠ শেষ হওয়ার পর আমি নিজেই বলেছিলাম কিছু দিন বিরতি নিয়ে শুরু করব। সেটা হয়ত কিছু মাস পিছিয়েছে।
(একটু থেমে)
আমি তো খুব প্রিভিলেজড। আমি কেমন আছি জানতে এত লোক খবর নিচ্ছেন। সবার জীবনে শোক রয়েছে। সেটা কাটিয়ে ওঠা যায়না। কিন্তু কাজ তো করতে হয়। নিজের বাবাকে দাদু মারা যাওয়ার পরেও অফিস যেতে। আজ যদি আমার কোনও প্রজেক্ট চলত, তাহলে কি এই দেড় মাস দু’মাসের বিরতিও নিতে পারতাম? আমায় তো করতেই হত, সেটা তো দায়িত্বের মধ্যেই পড়ে।
সোশ্যাল মিডিয়ায় ফিরবেন না?
প্রয়োজন তো দেখি না…।
বিরতিটা নেওয়া কেন? নেগেটিভিটি থেকে পালাতে চেয়েছিলেন?
আমি কিন্তু কোনওদিনই সোশ্যাল মিডিয়া খুব সক্রিয় নই। বরাবরই চাপা। কলেজ লাইফে এক বন্ধু প্রোফাইল খুলে দেয়। আমার কোনও পেজও নেই। ঐন্দ্রিলা লিখতে উৎসাহ দিত। সেই লেখা শেয়ার করতাম। সেটা লোক পড়তে শুরু করেন। কিন্তু নিজের ব্যক্তিগত জীবন নিয়ে কথা বলতে কোনওদিনই তো চাইনি।
ঘনিষ্ঠরা বলছেন, সব্যসাচী কষ্ট ভাগ করে নিচ্ছে না, নিজেকে গুটিয়ে রাখছে…
(হালকা হেসে) আমার খুব একটা বন্ধু বান্ধব নেই। ইন্ডাস্ট্রিতেও নেই। কারও বাড়ি যাওয়া, পার্টি করা কখনওই করিনি। সৌরভ আর দিব্য রয়েছে। হোদলস রয়েছে। ওদের কাছেই যাচ্ছি।
ঐন্দ্রিলা চলে যাওয়ার পর পরিবার চিকিৎসার গাফিলতির অভিযোগ করেন, আপনি সহমত?
আমি তো মেডিক্যাল পেশার সঙ্গে যুক্ত নই। তাই এই ভুলই হয়েছে সেটা আমি বলতে পারি না। কিন্তু ঐন্দ্রিলার গোটা পরিবারটাই চিকিৎসা শাস্ত্রের সঙ্গে যুক্ত। তাই ওঁরা যদি কিছু বলে থাকেন তাঁর প্রতি আমার সম্মান রয়েছে।
লোকের চোখে প্রেমিকের শ্রেষ্ঠত্বের নিরিখে আপনি শীর্ষে, নিজেকে ‘শ্রেষ্ঠ প্রেমিক’ বলে দাবি করেন?
আমি খুবই একটা সাধারণ ছেলে, আমি বিশ্বাস করি আমি যা করেছি তা খুবই সাধারণ। মানুষই কিছু সাধারণ জিনিসকে বড় করে তোলে আবার দরকারে তারাই সেটাকে পাতালে পাঠিয়ে দেয়। প্রিয়জন অসুস্থ হলে মানুষ পাশে থাকবে সেটাই তো স্বাভাবিক। ঐন্দ্রিলা ছেড়ে দিলাম, যদি আমার মায়ের কিছু হতো, আমার বাবাও তো পাশে থাকত, আমি তো সেটা দেখেই বড় হয়েছি। মাঝেমাঝে বুঝতে পারি না, কেন একটা সাধারণ জিনিসকে জটিল করে বড় করে তোলা হল। কেন এটাকে এত বড় করে দেখানো হল। স্বাভাবিক জিনিস যদি সাধারণের কাছে অস্বাভাবিক বলে মনে হয়, তবে তো অনেক বিষয়ের উপরেই আমার বিশ্বাস উঠে যাবে।
আগামী কাজের জন্য শুভেচ্ছা, ভাল থাকবেন…
আপনিও, ভাল থাকবেন।