কথা রেখেছে পশ্চিমবঙ্গের মহিলা কমিশন। কথা দিয়েছিল, মানসিক স্বাস্থ্য নিয়ে ওয়ার্কশপের ব্যবস্থা করবে টলিপাড়ায়। অভিনেত্রী পল্লবীর দে, মডেল বিদিশা দে মজুমদার, মডেল মঞ্জুষা নিয়োগী, মডেল সরস্বতী দাসের আত্মহত্যার ঘটনায় মানসিক স্বাস্থ্য নিয়ে উদ্বেগ বেড়েছে। ৯ জুন কমিশনের অফিসে বৈঠকের মাধ্যমে জানানো হয়েছিল টেলিপাড়ায় দফায়-দফায় ওয়ার্ক শপ হবে মানসিক স্বাস্থ্য নিয়ে। এবার তাঁদের উদ্যোগেই আয়োজিত হতে চলেছে প্রথম মেন্টাল হেল্থ ওয়ার্কশপ। আগামী ২৮ জুন আয়োজিত হবে প্রথম ওয়ার্কশপটি। স্থান দাসানি স্টুডিয়ো। বেলা ২ থেকে ০৩.৩০ পর্যন্ত চলবে ওয়ার্কশপ। মহিলা কমিশনের এই কাজে হাত মিলিয়েছে লীনা গঙ্গোপাধ্যায় ও শৈবাল বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রযোজনা সংস্থা ‘ম্যাজিক মোমেন্টস মোশন পিকচার্স প্রাইভেট লিমিটেড’। বিষয়টি TV9 বাংলাকে জানিয়েছেন রাজ্যের মহিলা কমিশনের চেয়ারপার্সন ও প্রযোজক লীনা গঙ্গোপাধ্যায় নিজেই।
লীনা বলেছেন, “আগামী কাল (২৮.০৬.২০২২) ওয়ার্কশপে সকলে থাকবেন বলেই আশা করছি।” সম্প্রতি আরও একজন অভিনেত্রী আত্মহত্যা করার চেষ্টা করেছেন। সে ব্যাপারে লীনা বলেছেন, “পারিবারিক সমস্যা ছিল মেয়েটির। কিন্তু ও যদি চায় আসতে পারে।”
TV9 বাংলাকে লীনা আগেই বলেছিলেন, “আমাদের মনে হয়েছে এই বিষয়টা নিয়ে কিছু একটা করা দরকার। আমরা তিনটে ফোরামকেই চিঠি দিয়েছি—প্রোডিউসার্স ফোরাম, আর্টিস্ট ফোরাম ও ফেডারেশন। এখনও পর্যন্ত যা কথা হয়েছে, চ্যানেল এবং এই সংগঠনগুলির প্রতিনিধিরা আসবেন বলেছেন। ডাক্তারবাবুদের আমরা অনুরোধ করেছি, ২৪ ঘণ্টার জন্য একটি হেল্পলাইন যদি পাওয়া যায়। যদি কারও কোনও ধরনের ক্রাইসিস তৈরি হয়, তখন সেই চিকিৎসকদের সঙ্গে সরাসরি যোগাযোগ করতে পারেন।
কোনও শিল্পী বা কলাকুশলীদের কেউই যাতে ভুল সিদ্ধান্ত না নেন, সেই দিকেই আমাদের লক্ষ্য থাকবে। আমরা চাই না কারও জীবনহানি হোক। মানুষের এখন অনেক স্ট্রেস। সেই স্ট্রেস নিয়ন্ত্রণ করার চেষ্টা করছি আমরা। বহু ছেলেমেয়ে আমাদের ইন্ডাস্ট্রিতে হিরো-হিরোইন হতে আসে। মিথ্যে স্বপ্ন দেখতে শুরু করে তারা। সবসময় তো তারা সেই জায়গা নিতে পারে না। সকলের সেই যোগ্যতাও থাকে না। সবক্ষেত্রে তো সেটা সম্ভব হয় না। এমন পরিস্থিতিতে সেই শিল্পীকে নিয়ে ক্যামেরার নেপথ্যে কোনও কাজ দেওয়া সম্ভব, কিংবা যারা সত্যিই অভিনয় করতে চায়, তাদের কি প্রশিক্ষণ দিয়ে একটু স্ট্রাকচার্ড ভাবে অডিশন করানো যায়। ফেডারেশনের কাছেও এই বার্তাই দিতে চাই—অভিনয় না করে অন্য কাজও করতে পারে ছেলেমেয়েরা। আর্টিস্ট ফোরামকে বলার বক্তব্য এটাই—ফ্লোরে-ফ্লোরে গিয়ে সচেতনতা তৈরি করা। সেই সময়ের জন্য যাতে তাঁরা ফ্লোর ছেড়ে চলে যান। তখনই কথা বলা প্রয়োজন। সেশনগুলোতে ডাক্তারবাবুরাও থাকবেন। প্রযোজক ও সিরিয়র আর্টিস্টদের কাছেও রিকোয়েস্ট—তাঁরা যদি সহযোগিতা করেন আমাদের সঙ্গে। তা হলেই লক্ষ্যপূরণ হবে। পশ্চিমবঙ্গের মহিলা কমিশন এই কাজের সঙ্গে যুক্ত থাকবে ২৪ ঘণ্টাই। প্রতিনিধিরা থাকবেন। কমিশনের হেল্পলাইন নম্বর আছে, যেখানে প্রচুর ফোন আসে। সেই ফোন নম্বরটা তো আমারই নম্বর। সারা পশ্চিমবঙ্গ থেকে ফোন আসে আমার কাছে। আত্মহত্যা করার সেই মুহূর্তটা কাটিয়ে দিলেই অনেকটা বিপদ কেটে যায়। আরও একজনের নাম এখানে উল্লেখ করতে চাই। তিনি অভিনেতা বাদশা মৈত্র। তিনি আমাদের খুবই সাহায্য করছেন। আমরা চিন্তাভাবনা করছিলাম। দেখি বাদশাও করছেন। বাদশাই ফোন করে জিজ্ঞেস করেন, কমিশনের তরফ থেকে আমরা কিছু করছি কি না। দেখি আমাদের চিন্তাভাবনা মিলে যাচ্ছে। উনিই আমাদের বলেন, ডাক্তারের দিকটা দেখবেন। কোন ডাক্তার আনা হবে, কারা থাকবেন, সবটাই বাদশা দেখছেন।”