রান্না ঘর মানেই মেয়েদের জায়গা, বা সেখানে মহিলাদেরই মানায়। একটা সময় সমাজ এই সমীকরণেই বিশ্বাসী ছিল। যা প্রতিটি ঘরের ছবি। মহিলারা যে সৌজন্যের সঙ্গে রান্নার কাজটি করতে পারেন, তা বোধহয় পুরুষদের পক্ষে সম্ভবপর নয়। আর ঠিক সেই কারণেই কোনও পুরুষ যদি রান্নার প্রশিক্ষণ দেয়, তবে তা খুব একটা দেখতে ইচ্ছুক হবেন না দর্শকেরা। কারণ অতীতে এমনটা হয়নি। যদিও ছবিনির্মাতা হনসল মেহেতা এমনটাই ভেবেছিলেন। জনপ্রিয় রান্নার শো জি টিভিতে তিনিই শুরু করেছিলেন। যেখানে রান্নার শো তিনি সঞ্চালনা করাতে চেয়েছিলেন সঞ্জীব কাপুরকে দিয়ে। সঞ্জীব কাপুর এক জনপ্রিয় সেফ। তাঁর দর্শক সংখ্যা নেহাতই কম নয়।
তবে প্রাথমিকভাবে চ্যালেন এই শর্তে রাজি হয়নি। তারা সাফ জানিয়েছিলেন এমনটা সম্ভবপর নয়। কারণ রান্নার শো তাঁরা মেয়েদের দিয়েই করাতে চান। হনসল মেহেতা নিজে ঝুঁকি নিয়ে চ্যানেলের বিরুদ্ধে গিয়ে এই শো-এর দায়িত্ব নিয়েছিলেন। সম্প্রতি হনসল মেহেতা এক সাক্ষাৎকারে জানান, যে তিনি চাইলেও তার কথা মানতে রাজি ছিল না কেউ। অথচ ১৯৯০-২০০০ সালে সঞ্জীব কাপুর ছিলেন রান্নার জগতে এক বিখ্যাত নাম। ছবি নির্মাতা হিসেবে এটাই ছিল হনসল মেহেতার প্রথম কাজ। তিনি জানান, ”জি তখন সবে শুরু হয়েছিল, তাই আমি সেখান থেকেই শুরু করার পরিকল্পনা করি। সেখানে গিয়ে আমি আমার এই প্রস্তাবটি দিয়েছিলাম। একটি ফ্লোচার্ট বানিয়েছিলাম। সেই শো-তে ঠিক কী কী দেখানো হবে।”
”এরপরই আমি সেফের খোঁজ করতে শুরু করি। একের পর এক হোটেলে যাই। দেখতে থাকি, কার মুখ টিআরপি দেবে। একটা সময় মনে হত এটা আমার স্বয়ম্বরসভা, সকলেই সেফদের দাঁড় করিয়ে দিতেন, বলতেন দেখে নিন কাকে পছন্দ। আমরা সকলেই কফি খাচ্ছিলাম, এমন সময় এক সুপুরুষ সামনে এসে বলেন, যদি কিছু জানার থাকে, তাঁর সঙ্গে যেন আমি যোগাযোগ করি। তাঁর নাম সঞ্জীব কাপুর। এরপর সঞ্জীবকে নিয়ে চ্যানেলে আসতেই, ওঠে ঝড়, জানিয়ে দেওয়া হয়, না না, আমরা একজন মহিলা চাই।” পরবর্তীতে সেই শোএর জনপ্রিয়তা ঠিক কোথায় পৌঁছে গিয়েছিল, কমবেশি সকলের জানা।