Shankar Chakraborty: মৃত স্ত্রী সোনালীর লেখা কবিতার বই পড়তে গেলে আজকাল কান্না পায় শঙ্কর চক্রবর্তীর

Sneha Sengupta |

Oct 31, 2023 | 4:39 PM

Shankar & Sonali: শঙ্কর লিখেছেন, "গত বছর আজকের দিনে ভোরবেলা তুমি আমাদের ছেড়ে তারাদের দেশে পাড়ি দিয়েছ। ভাল থেকো রুনু। তোমাকে ছেড়ে আমি, সাঝি ভাল নেই। আবার দেখা হবে নিশ্চয়ই।" সোনালী গত হওয়ার পর এই একটা বছর কেমন ছিলেন শঙ্কর? TV9 বাংলা জানতে চাইল অভিনেতার কাছে।

Shankar Chakraborty: মৃত স্ত্রী সোনালীর লেখা কবিতার বই পড়তে গেলে আজকাল কান্না পায় শঙ্কর চক্রবর্তীর
সুখের সময়ে সোনালী-শঙ্কর।

Follow Us

 

স্নেহা সেনগুপ্ত

কথায় আছে ‘ভাগ্যবানের বউ মরে’। সত্যিই কি তাই? নন্দিতা রায়, শিবপ্রসাদ মুখোপাধ্য়ায়ের মতো পরিচালকদ্বয়ও ‘বেলাশেষে’, ‘বেলাশুরু’র মতো ছবিতে দেখিয়েছিলেন স্ত্রী ছাড়া ঠিক কেমন হতে পারে এক পুরুষের বেঁচে থাকা। যে বেঁচে থাকাকে গত এক বছর ধরে ‘অসহ্য’ বলে মনে হচ্ছে টলিউডের অভিনেতা শঙ্কর চক্রবর্তীর। গত বছর আজকের দিনেই (৩১ অক্টোবর) প্রয়াত হয়েছিলেন শঙ্করের স্ত্রী অভিনেত্রী সোনালী চক্রবর্তী। স্বামী গত হলে স্ত্রীকে কিছু ধারণ করা উপাদান ত্যাগ করতে হয়। সিঁথি থেকে মুছে ফেলতে হয় স্বামীর পরানো সিঁদুর। হাতের শাখাপলা ভেঙে দিতে হয়। খুলে ফেলতে হয় নোয়া। কিছু গাঢ় রংকেও দূরে ঠেলে দিতে হয় বিধবাদের (অন্তত প্রথা সেই নিয়মই কায়েম করতে চায়)। কিন্তু পুরুষ হলে? ধারণ করার মধ্যে কেবলই যে পড়ে থাকে শূন্য বিছানার একটা কোণ, একটা শূন্য বালিশ। আলমারির হ্যাঙ্গারে ঝুলতে থাকা সারি দেওয়া কিছু শাড়ি। আয়নায় আটকে থাকা কপালের লাল টিপ। ড্রেসিং টেবিলে পড়ে থাকা সিঁদুরের কৌটো। এবং আরও কত কী! নিঃসঙ্গতা আসলে তীব্র যন্ত্রণার নাম। নিঃসঙ্গতার সঙ্গে যুক্ত হয় স্মৃতিদের ফিরে-ফিরে আসা। শঙ্করেরও সেরকমই অবস্থা। তাঁর উমা’হারা’ জীবন এখন বড় একাকিত্বে কাটে, বড়ই নিঃসঙ্গতায়। দিন শেষে শোয়ার ঢুকতে গেলে বুকের ভিতরটা যেন ছ্যাঁৎ করে ওঠে। ঘরে পা রাখলেই ঠাহর হয় নিঃসঙ্গতাই দোসর। শঙ্করের বাড়িতে সারমেয়রা থাকে। তাঁদের দেখার জন্য এক সহকারী আছেন। কাজ সেরে তিনি চলে গেলে বাড়িটা সোনালী-জৌলুস আরও হারিয়ে ফেলে।

সোনালীর এক বছরের মৃত্যুবার্ষিকীর তিথি পড়েছিল এ বছরের সপ্তমীর দিন। গত বছর ৩১ অক্টোবর তিনি চলে গিয়েছিলেন শঙ্করকে একলা ফেলে। দক্ষিণ কলকাতার একটি বেসরকারী হাসপাতালে প্রয়াত হয়েছিলেন ৫৯ বছর বয়সি সোনালী। হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছিল, যকৃতে কর্কট রোগ হয়েছিল তাঁর।

সোশ্যাল মিডিয়ায় নিজের যন্ত্রণাকে তুলে ধরেছেন শঙ্কর। অকপটে ব্যক্ত করেছেন, তাঁকে ছাড়া তিনি এবং তাঁদের একমাত্র কন্যা সাঝি এক্কেবারেই ভাল নেই। লিখেছেন, “গত বছর আজকের দিনে ভোরবেলা তুমি আমাদের ছেড়ে তারাদের দেশে পাড়ি দিয়েছ। ভাল থেকো রুনু। তোমাকে ছেড়ে আমি, সাঝি ভাল নেই। আবার দেখা হবে নিশ্চয়ই।” সোনালী গত হওয়ার পর এই একটা বছর কেমন ছিলেন শঙ্কর? TV9 বাংলা জানতে চাইল অভিনেতার কাছে।

ধরে আসা গলায় ফোনের ওপার থেকে শঙ্কর বললেন, “সোনালীকে ছাড়া এই বাড়িতে থাকতে আমার খুবই অসুবিধে হয়। বাড়িতে ঢুকি যখন, নিঃসঙ্গ হয়ে পড়ি। মেয়ে আমার কাছে থাকে না। মুম্বইয়ে থাকে। আমি একাই থাকি। সারাদিন কাজ করি স্টুডিয়ো পাড়ায়। রাতে বাড়ির দরজা খুলতেই ফাঁকা লাগে ঘরটা। অস্বস্তি হতে থাকে। বলে বোঝাতে পারব না, ঠিক কীরকম লাগে আমার। বাড়িটা আমাকে গিলতে আসে।” গলার কাছটায় যেন কিছু একটা দলা পাকিয়ে আসে টেলিভিশনের দীর্ঘদিনের তারকার। তিনি বলেন, “অনেকবারই ভেবেছিলাম বাড়িটা ছেড়ে দেব। কিন্তু মেয়ে ‘না’ করেছে। ছেড়ে যাবই বা কোথায়… আমাদের শোয়ার ঘরে ঢুকলে খুব অশান্তি হতে থাকে। টিভি চালিয়ে দিই তখন। কবিতাও পড়ি। সোনালীর লেখা একটা কবিতার বই আছে। সেটার একটাও পাতা আমি ওল্টাতে পারি না।”

কবিতার কথা বলেছেন শঙ্কর। স্ত্রী কবি মল্লিকা সেনগুপ্তর ক্যানসারে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুর পর কবি সুবোধ সরকার ‘দেশ’ পত্রিকায় একটা কবিতা লিখেছিলেন: ‘মৃত্যুর আগে তুমি কাজল পরেছিলে’। সেই কবিতার শুরুটা হয়েছিল এভাবে: “তুমি গঙ্গার একটা অংশ ছেড়ে চলে যাচ্ছ/কিন্তু তোমার আঁচলে নদীর আত্মজীবনী লেখা রইল”। সোনালীর লেখা ‘আত্মজীবনী’তেও কি নিজেকে খুঁজে পান শঙ্কর? ফোনের ওপার থেকে বলে চলেন শঙ্কর, “পড়তেই পারি না। পড়তে গেলেই এমন কান্না পায়…! অদ্ভুত লাগে। মনে হয় অনেক কবিতার মধ্যেই আমি আছি।”

Next Article
Aparajita Adhyay: ভাইরাল জ্বর থেকে উঠেই টানা ৮ ঘণ্টা জলে শুটিং; একবারের জন্যেও কেন ডাঙায় উঠেননি অপরাজিতা?
SSR: সেই রাতে গায়েব সুশান্ত! কেন হয় ব্রেকআপ? এতদিনে অঙ্কিতা বললেন সবটা