‘সিগারেটের ছ্যাঁকা দিয়ে হাত জ্বালাতাম’, কঠিন বাস্তব সামনে আনলেন অভিনেতা…
Cigarette-Theatre: প্রশান্ত সূত্রধর ঠিক করেছিলেন একটা নাটক তিনি তৈরি করবেন, যা বলবে সেই মণিপুরের গণধর্ষিতা মনোরমার কথা। সেই ধর্ষকের কথা। কিংবা মনোরমার ভাইয়ের কথা। সমাজ সচেতনতার কথা তুলে ধরতে-ধরতে আবেগে ভেসে যেতেন প্রশান্ত। তারপর করে ফেলতেন এমন এক কাজ, যেটা করতে হাত কাঁপবে অনেকেরই।

কুড়ি বছর আগে, মানে ২০০৪ সালে মণিপুরের এক মহিলা ধর্ষিত হয়েছিলেন। সেই মহিলার নাম ছিল মনোরমা। সেই ভয়াবহ ধর্ষণের কাহিনি মন স্পর্শ করেছিল বছর আঠেরোর যুবকের। তিনি মনে-মনে তৈরি করলেন এক কাহিনি। যে কাহিনি সময়ের সঙ্গে পাল্টে-পাল্টে যায়। নাটকের নাম ‘এক্স হোয়াই জ়েড’।
সিনেমা-সিরিয়াল-ওয়েব সিরিজ়ে যেটা হয় না, সেটা অনায়াসেই হতে পারে নাটকে। মূলত নন-প্রসেনিয়াম নাটকে। নন-প্রসেনিয়াম নাটক হল সেই বস্তু, যার জন্য প্রয়োজন হয় না মঞ্চেরও। পথে-ঘাটে-গাছের ছায়ায়-বাড়ির দালানে, এমনকী ঘরের মধ্যেও হতে পারে এই ধরনের নাটক। সেই নাটকের ঘরানার ছেলে প্রশান্ত সূত্রধর ঠিক করেছিলেন একটা নাটক তিনি তৈরি করবেন, যা বলবে সেই মণিপুরের গণধর্ষিতা মনোরমার কথা। সেই ধর্ষকের কথা। কিংবা মনোরমার ভাইয়ের কথা। সমাজ সচেতনতার কথা তুলে ধরতে-ধরতে আবেগে ভেসে যেতেন প্রশান্ত। তারপর করে ফেলতেন এমন এক কাজ, যেটা করতে হাত কাঁপবে অনেকেরই।
সেই কাজটা কী?
অভিনয় করতে-করতে হাতের তালুতে সিগারেটের ছ্যাঁকা দিতেন প্রশান্ত। বলেছেন, “মনোরমার গল্পটা আমার মন ছুঁয়েছিল। তাই তৈরি করি এই নন-প্রসেনিয়াম নাটক ‘এক্স হোয়াই জ়েড’। নাটকটা বদলাতে-বদলাতে গিয়েছে। একমাস আগেও করেছি। কিন্তু এখন আর সিগারেটের ছ্যাঁকা দিয়ে হাত পোড়াই না। ওটা আমার গুরুর বারণ আছে।”
প্রশান্তকে হাতে ধরে নন-প্রসেনিয়াম নাটক শিখিয়েছেন নাট্যব্যক্তিত্ব প্রবীর গুহ। তিনিই প্রশান্তকে বুঝিয়েছিলেন, “কোনও নাটক করার সময় নিজেকে শারীরিক কষ্ট দিবি না।” গুরুর নিষেধ অমান্য করেননি প্রশান্ত। তিনি কথা রেখেছেন। এখন আর সেই কাজ করেননি। এই নাটকটির আরও এক বৈশিষ্ট–মাত্র ১৭ টাকায় নাটক পরিবেশন করেন এককভাবে। একটা প্লাস্টিক, মোমবাতি, চকোলেট কিনতে হয় অভিনেতাকে। কখনও তিনি মনোরমা, কখনও তাঁর ভাই, কখনও ধর্ষক–সব কটি চরিত্রে নিজেই অভিনয় করেন।
