সেই সময় সদ্য ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রিতে পা রেখেছিলেন অপরাজিতা। একটি টেলিফিল্মের শুটিং করতে গিয়েছিলেন তালসারি সমুদ্র সৈকতে। নির্জন সৈকতে অপরাজিতা এবং শুটিং ইউনিট ছাড়াও হাজির ছিলেন অতনু। তালসারিতে সমুদ্রের মধ্যেই কিছুটা বালির স্তুপ দ্বীপের মতো হয়ে থাকে। সেরকমই একটি বালির স্তুপের উপর বসে একটি দৃশ্যে অভিনয় করেছিলেন অপরাজিতা। শুটিং হওয়ার পর সেখানেই অতনু এসে অপরাজিতাকে প্রেম প্রস্তাব দিয়ে বলেন, “তুমি আমাকে বিয়ে করবে?”
সপাট ‘না’ বলে অতনুকে ফিরিয়ে দিয়েছিলেন অপরাজিতা। মনমরা প্রেমিক অতনু হাল ছাড়েননি কিছুতেই। এই প্রেমে মদনদেবের ভূমিকা পালন করেছিলেন অপরাজিতার এক বয়সে বড় বান্ধবী অমৃতা (অমৃতা মারা গিয়েছেন)। অভিনেত্রীর মায়ের ছাত্রী ছিলেন তিনি। ব্যাঙ্কে চাকরি করতেন এবং অপরাজিতাকে শুটিং থেকে বাড়িতে নিরাপদে পৌঁছে দিতেন। এই অমৃতাকেই পাকড়াও করেছিলেন অতনু। অমৃতাই অপরাজিতাকে অতনুর বাড়িতে নিয়ে গিয়ে হবু শাশুড়িমায়ের সঙ্গে আলাপ করিয়ে দিয়েছিলেন। শাশুড়ি মাকে প্রথম দেখাতেই দারুণ পছন্দ হয়েছিল অপরাজিতার। মনে-মনে ঠিক করেছিলেন, বিয়ে করলে সেখানেই করবেন। এর কারণ, তাঁর শাশুড়িমা এক্কেবারে মায়ের মতোই তাঁকে আগলে রাখবেন। ২৫ বছর ধরে সেটাই হয়ে চলেছে। নিজের মেয়ের মতোই তিনি ভালবাসা দিয়ে চলেছেন অপরাজিতাকে।
অপরাজিতা TV9 বাংলাকে বলেছেন, “আমার শাশুড়িমা-ই আমাকে জীবনে প্রথম ভ্য়ালেন্টাইনস ডে-তে বেলুন উপহার দিয়েছিলেন। সেই সময় আমি জানতামই না দিনটায় কী হয়। শাহিদ কাপুর এবং রাইমা সেনের প্রথম প্রাইভেট ভিডিয়োতে ভ্যালেন্টাইন নামটা শুনে গোটা রাজ্যের বাঙালি মেয়েই বোধহয় জেনেছিল, ভ্যালেন্টাইনস ডে কী? আমার শাশুড়িই সেই অর্থে আমার প্রথম ভ্যালেন্টাইন। আমি রাহু, তিনি কেতু। একই লোক দু’জনে। বিষ্ণু তাঁদের আলাদা করে। আমি মনে করি, তিনি এবং আমি মণিকাঞ্চন যোগ… আমি এবং আমার শাশুড়িমা একে-অন্যের জন্যই তৈরি।”
অনুলিখন: স্নেহা সেনগুপ্ত