হঠাৎই মারা গিয়েছিলেন টলিউডের বিখ্যাত অভিনেত্রী রিতা কয়রাল। যকৃতে কর্কট রোগ বাসা বেঁধেছিল তাঁর। অল্প সময়ের মধ্যেই দারুণ অসুস্থ হয়ে পড়েছিলেন বাংলা সিনেমার এই দুঁদে ভিলেন। কিন্তু জানেন কি, রিতা অসম্ভব ভাল গলা দিতে পারতেন। ডাবিংয়ে তাঁর ডাক পড়ত। সে রকমই একটি ডাবিং করে চূড়ান্ত হেনস্থা হতে হয়েছিল রিতা কয়রালকে। এবং তাঁর সেই হেনস্থা করেছিলেন মুম্বইয়ের নামজাদা অভিনেতা অনুপম খের। মৃত্যুর ঠিক আগে একটি মন্তব্য করে যান রিতা। কাঠগড়ায় দাঁড় করিয়েছিলেন অনুপমকে।
‘বাড়িওয়ালি’ ছবি দেখেছেন অনেকেই। প্রয়াত পরিচালক ঋতুপর্ণ ঘোষের নির্দেশনায় তৈরি হয়েছিল এই জাতীয় পুরস্কারপ্রাপ্ত ছবি। সেরা ছবির জন্য জাতীয় পুরস্কার তো বটেই, মনোনয়ন জমা পড়েছিল সেরা অভিনেত্রী বিভাগেও। ‘বাড়িওয়ালি’ ছবিতে মুখ্য চরিত্রে অভিনয় করেছিলেন অনুপম খেরের স্ত্রী কিরণ খের। কিরণ অবাঙালি। তাঁর গলা ডাবিং করেছিলেন রিতা কয়রাল। কিন্তু সেই কাজের জন্য কোনওদিনও স্বীকৃতি পাননি তিনি।
রিতা বলেছিলেন, “ডাবিং করা কণ্ঠস্বর হলে জাতীয় পুরস্কারের জন্য মনোনয়ন পান না কোনও অভিনেতা কিংবা অভিনেত্রী। আবার অনেক সময় ডাবিং করেছেন যিনি, তিনিও মনোনয়ন পেতে পারেন। এটা শুনে আমি খুবই উচ্ছ্বসিত হয়েছিলাম। পরে জানতে পেরেছিলাম আমি যে ডাবিং করেছি, সেই তথ্য লুকিয়ে মনোনয়ন পাঠানো হয়েছে। গোপন করা হয়েছে।”
রিতা যাতে মুখ না খোলেন এবং কোনও কিছু দাবি করে না বসেন, তাই তাঁকে মোটা টাকার লোভ দেখিয়েছিলেন ছবির অন্যতম প্রযোজক বলিউড অভিনেতা অনুপম খের। সেই টাকা নিতে অস্বীকার করেছিলেন রিতা। অভিনেত্রীর ‘ধৃষ্টতা’ দেখে তাঁকে নাকি শাসিয়েছিলেন অনুপম। বলেছিলেন, “দেখব তুমি কী করে ইন্ডাস্ট্রিতে কাজ কর।”
চোখের জল ফেলতে-ফেলতে এই সমস্ত কথা টকশোতে এসে বলেছিলেন রিতা। বাংলা ছবিতে এক সময়কার অতি পরিচিত মুখ ছিল রিতার। খলনায়িকা হিসেবেই লোকে তাঁকে দেখে এসেছেন। সিনেমার পর্দায় নয়, সিরিয়ালের পর্দাতেও প্রচুর শয়তানি করেছেন তিনি। বিয়ে করেছিলেন অভিনেতা সৌমিত্র বন্দ্যোপাধ্যায়কে। মাত্র ৪৬ বছর বয়সে প্রয়াত হয়েছিলেন সৌমিত্র। রিতাও দ্বিতীয়বার বিয়ে করেছিলেন, কিন্তু সেটা টেকেনি। সেই বিয়ে থেকে একটি মেয়ে এবং একটি ছেলে সন্তানের জন্ম দিয়েছিলেন এই অভিনেত্রী। ছেলে মৃত্যু হয় অনেক আগেই।