স্নেহা সেনগুপ্ত
আর না-ফেরার দেশে চলে গেলেন পশ্চিমবঙ্গের প্রাক্তন মুখ্য়মন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য। তাঁর বয়স হয়েছিল ৮০ বছর। বালিগঞ্জের পাম অ্যাভিনিউয়ের বাড়িতে সকাল ৮টা ২০ মিনিট নাগাদ মৃত্যু হয় তাঁর। রেখে গেলেন স্ত্রী ও একমাত্র সন্তানকে। তাঁর মৃত্যুতে ভেঙে পড়েছেন টালিগঞ্জের তারকারা। টিভি নাইন বাংলা ডিজিটালের ফোন পেয়েই কান্নায় ভেঙে পড়লেন অভিনেত্রী শ্রীলেখা মিত্র, পরিচালক কমলেশ্বর মুখোপাধ্য়ায়, পরিচালক অনীক দত্তরা।
শ্রীলেখা মিত্র: (প্রথমে খবরটা জানতে পেরে আঁতকে উঠেছিলেন শ্রীলেখা। খানিক ধাতস্থ হয়ে তিনি নিজেই ফোন করলেন)
“বুদ্ধবাবু চলে গিয়ে বেঁচে গিয়েছেন। বাংলার মানুষ তাঁর সঙ্গে যেটা করেছে, সেটা ক্ষমার অযোগ্য। ওই দুঃখ, এই কষ্ট ভিতরে রেখে মাথা উঁচু করে উনি চলে গেলেন। কারও কাছে মাথা নোয়ালেন না। কোনও আপোস করলেন না। যেরকম ভাবে একজন কমিউনিস্ট নেতার যাওয়ার কথা, সেই ভাবেই গেলেন। কোনও ঢাকঢোল না বাজিয়ে, উনি চলে গেলেন এবং আমি বলব বেঁচে গেলেন। এই শেষের দিকে ওঁকে নিয়ে যে নোংরামো হয়েছিল, আমার মনে হয়েছে, বুদ্ধবাবুর যোগ্যই নই আমরা…।”
কমলেশ্বর মুখোপাধ্যায়:
“বামপন্থী আন্দোলনের ক্ষেত্রে বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যর চলে যাওয়াটা অত্যন্ত দুঃখজনক। পশ্চিমবঙ্গে শিল্পায়ন যদি ওঁর হাত দিয়ে শুরু হত, আমরা একটা অন্য ধরনের পশ্চিমবঙ্গ দেখতে পেতাম।”
অনীক দত্ত: (বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যর মৃত্যু সংবাদ পেয়ে কিছুক্ষণ চুপ করে ছিলেন পরিচালক অনীক দত্ত। তিনি কেঁদে ফেলেন।)
“কী বলি বলুন তো। আমি কিছুক্ষণ চুপ করে থাকতে চাই। কথাই বলতে পারছি না। এটা সকাল-সকাল কী সংবাদ দিলেন। বুদ্ধবাবু নেই!”
পরনে সাদা ধবধবে ধুতি-পাঞ্জাবি, বাঁ দিকে পাট করে আঁচড়ানো চুল, শব্দচয়নে সদা সতর্কতা, গলার স্বরের গাম্ভীর্য, স্পষ্ট উচ্চারণে বাংলায় কথা বলা মানুষটাকে হারিয়ে চোখের জল ফেলছে টলিপাড়া। বাংলা সিনেমা, গান ভারী ভাল লাগত তাঁর। নতুন ছবি কী এসেছে জানতে চাইতেন। টানা ১০ বছর পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী ছিলেন তিনি।