২০১৪ সালের টেট পরীক্ষায় উত্তীর্ণ চাকরি প্রার্থী শিক্ষক-শিক্ষিকাদের অনশনের আন্দোলনকে রুখতে সরকারের তরফ থেকে আদালতে নির্দেশনামা নিয়ে হাজির হয় পুলিশ করুণাময়ীতে। সেখানে প্রথমে তাঁদের উঠে যেতে বলা হয়। তাও যখন তাঁরা ওঠেন না, তক রাত ১২টা বাজার পর কীভাবে অনশনরত প্রার্থীদের পুলিশ চ্যাংদোলা করে উঠিয়ে দেয়, কিছু প্রার্থীকে আটক করে, তা সংবাদ মাধ্যম মারফত সকলে দেখে। সেই নিয়ে সরব রাজ্য রাজনীতি থেকে বুদ্ধিজীবী সকলেই। রুদ্রনীল ঘোষ অভিনেতা। এখন একটি রাজনৈতিক দলের সঙ্গে যুক্ত। তবে একজন সাধারণ মানুষ হিসেবে তিনি টেট পরীক্ষায় উত্তীর্ণ চাকরি প্রার্থীদের সঙ্গে হওয়া এই ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে কী মনে করছেন, সেই বিষয়ে জিজ্ঞাসা করতে যোগাযোগ করা হয়।
TV9 বাংলাকে রুদ্রনীল ঘোষ এই বিষয়ে বলেছেন,
“শুধু আমি কেন যে কোন সুস্থ মানুষ তিনি তৃণমুলের সমর্থকও হতে পারেন, যতটুকু লজ্জা পাওয়া বাকি ছিল, সেই লজ্জা পাওয়াটাও তাঁর হয়ে গেল। লজ্জিত হতে বাধ্য হলেন তাঁরা। যে রাজ্যে বিপদে পড়লে পুলিশ পৌঁছাতে পারে না, সেখানে যাঁরা যোগ্য, কিংবা চোর ধরতে পারে না, তবে পুলিশ মন্ত্রী শাসকদলের ভুল, অন্যায় বা অপরাধ-এই তিনটিকে আড়াল করতে গিয়ে যে নির্মমভাবে যোগ্য শিক্ষিত ছেলে-মেয়েদের তুলে দিলেন, কীভাবে অত্যাচার করে সরিয়ে দিলেন ওখান থেকে তা মানুষ দেখেছেন।
পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী আন্দোলন-সংগ্রাম-এই রাস্তায় বসা থেকেই কিন্তু বড় হয়েছেন। অথচ আজ যাঁরা রাস্তায় বসে রয়েছেন, তাঁরা কেউ-ই কোনও রাজনৈতিক দলের মানুষ নন, নিরপেক্ষ পশ্চিমবঙ্গের শিক্ষিত ছেলে-মেয়ে। এই ঘটনা নারকীয়, দুর্ভাগ্যজনক। এই ঘটনা প্রমাণ করে দেয় যে সত্যিকে চুড়ান্ত ভয় পেয়ে গিয়েছেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী। তাঁর নির্মমতাও প্রমাণিত।
পশ্চিমবঙ্গের মানুষের হৃদয় এবং মস্তিষ্ক, তৃণমুল বা শাসক দলের মানুষের মতো পাথরের নয়, তাই এই ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে গণ অভ্যুত্থান হতে বাধ্য। মানুষ এই সরকারকে যতদিন রাখবেন, ততদিন ধরেই যে তাঁর জীবনে পাপের বোঝা, যন্ত্রণা বোঝা বাড়তে থাকেব, শেষ হয়ে যাবেন তিনি, এটা পশ্চিমবঙ্গের মানুষ বুঝে গিয়েছেন। সে বিষয়ে তাঁরা অনেক বেশি দৃঢ় হলেন এই ঘটনার পর।
আমি ওখানে গিয়েছিলাম। তবে কোনও রাজনৈতিক পতাকা নিয়ে যাইনি, এরাই আমাদের ভাই-বোন, এরাই আমাদের সহনাগরিক, তাই তাঁদের পাশে থাকতে গিয়েছিলাম। বাড়ির মেয়েরা ওখানে বসেছিলেন আন্দোলনে। তাঁদের চোখের জল শুকিয়ে গিয়েছে কাঁদতে কাঁদতে। যাতে তাঁরা টয়লেট করার অসুবিধের জন্য আন্দোলন বন্ধ করতে বাধ্য হন, তাই পুলিশ পুলিশ মন্ত্রীর নির্দেশে সেখানে টয়লেট পর্যন্ত বসাতে দেয়নি। এর পর আর কী বলার রয়েছে”।