Brahmastra Collection in Kolkata: কেউ বললেন ‘দুর্দান্ত’, কেউ দুষলেন টিকিটের চড়া দামকে… কলকাতার হলগুলিতে কেমন বিক্রি ‘ব্রহ্মাস্ত্র’র?
Brahmastra Collection in Kolkata: শহর ও তার পার্শ্ববর্তী সিঙ্গল স্ক্রিনগুলিতে অস্ত্রের দুনিয়া দেখতে এলেন কতজন? TV9 বাংলা কথা বলেছিল হল মালিকদের সঙ্গে। সরেজমিনে আমরা খুঁজে দেখলাম হাল-হকিকত। কী উঠে এল?
বিহঙ্গী বিশ্বাস
অবশেষে সেই প্রতীক্ষিত দিন। অয়ন মুখোপাধ্যায়ের ‘ড্রিম প্রজেক্ট’ অবশেষে মুক্তি পেয়েছে আজ, অর্থাৎ শুক্রবার। একের পর এক বিগ-বাজেট ছবির মুখ থুবড়ে পড়ার পর যে বলিউড এখন কার্যত বাজি রেখেছে একটি ছবির উপর, সেই ‘ব্রহ্মাস্ত্র’ নিয়ে অভূতপূর্ব উন্মাদনা বহুদিন পর দেখা হচ্ছে গোটা বিশ্বে। সবই কি ইতিবাচক? মোটেও না। উঠেছে ‘বয়কট ট্রেন্ড’ও। তা সত্ত্বেও পুরাণকাহিনী নিয়ে নির্মিত, আলিয়া-রণবীরের প্রেমের সাক্ষী এই ছবিকে উপেক্ষা করার সাধ্য কার? এর আগেই জানা গিয়েছিল করোনা-উত্তরকালে এই ছবির টিকিটই অগ্রিম বুকিংয়ের ক্ষেত্রে সবথেকে এগিয়ে। হিন্দি বলয়ে বেশ ভাল বিক্রি হয়েছে ছবিটির। আর বাংলা তথা কলকাতার দৃশ্যটা ঠিক কেমন? শহর ও তার পার্শ্ববর্তী সিঙ্গল স্ক্রিনগুলিতে অস্ত্রের দুনিয়া দেখতে এলেন কতজন? TV9 বাংলা কথা বলেছিল হল মালিকদের সঙ্গে। সরেজমিনে আমরা খুঁজে দেখলাম হাল-হকিকত। কী উঠে এল?
৭০ শতাংশ ভর্তি!
‘অজন্তা’ সিনেমা হলের কর্ণধার শতদীপ সাহা গলায় ঝরে পড়ল উচ্ছ্বাস। বলিউড-টলিউডের মন্দার দিনে এ ছবির টিকিট বিক্রি যে নিঃসন্দেহে প্রাপ্তি, সে কথা উল্লেখ করেই শতদীপ বললেন, “ভীষণ ভাল বিক্রি হচ্ছে। খুব ভাল প্রতিক্রিয়া। সেকেন্ড শো চলছে (যখন TV9 বাংলা প্রতিবেদকের সঙ্গে কথা হয় শতদীপের, সেই সময়ের নিরিখে)। প্রেক্ষাগৃহ প্রায় ৭০ শতাংশ ভর্তি রয়েছে।” সারা দেশ জুড়ে প্রায় ৩৩ কোটি টাকার অগ্রিম বুকিং হয়েছে এই ছবির। অগ্রিম বুকিং হয়েছে ‘অজন্তা’তেও। কর্ণধারের কথায়, “প্রায় তিন লক্ষ টাকার কাছাকাছি অ্যাডভান্স বুকিং হয়েছে আমাদের।” শতদীপের সঙ্গেই সুর মিলিয়েছেন ‘জয়া’ সিনেমা হলেন মালিক মনোজিৎ বণিকও। তাঁর প্রেক্ষাগৃহেও প্রায় ৭০ শতাংশ টিকিট বিক্রি হয়েছে বলে দাবি করে শতদীপ বলেন, “থ্রিডি’তে খুব ভাল প্রতিক্রিয়া পাচ্ছি। অগ্রিম বুকিং-ও হয়েছে ভাল। আশা করছি এই ছবি অনেক দূর টানবে।”
টিকিটের চড়া দাম
একদিকে শতদীপ ও মনোজিৎ যখন দর্শকের হলে ফেরা নিয়ে খুশি, ঠিক তখনই টিকিটের চড়া দামে খানিক বিরক্ত কলকাতার আর এক পুরনো সিঙ্গল স্ক্রিন ‘মেনকা’র কর্ণধার প্রণব কুমার রায়। তিনি বললেন, “বিক্রি হচ্ছে। তবে আরও অনেক ভাল হওয়া উচিত ছিল। সমস্যা হল, টিকিটের দাম বাড়িয়ে দিতে হয়েছে। যদি মানুষের মনে হয় কন্টেন্ট ভাল তবেই না সে আরও ১০০ টাকা বেশি দিয়ে ছবি দেখবে।” ওই প্রেক্ষাগৃহে আপাতত তিনটে শো রয়েছে ‘ব্রহ্মাস্ত্র’-এর। প্রণববাবু যোগ করলেন, “আমাদের তো আর মাল্টিপ্লেক্স নয় যে, দু’শো সিট। প্রায় ১০০০ জনের জন্য থ্রি-ডি গ্লাসের ব্যবস্থা করা, সব ঠিকঠাকভাবে চালানোর জন্য ৩টে শো নিতে হয়েছে। আপাতত ৪০-৪৫ শতাংশ অগ্রিম বুকিং হয়েছে। বাকিটা দেখা যাক।”
ভাঙল ‘আরআরআর’-এর রেকর্ড
ডানলপ অঞ্চলে ‘সোনালী’ অতি প্রাচীন এক প্রেক্ষাগৃহ। সেখানেও এসেছে ‘ব্রহ্মাস্ত্র’। তবে ওই হলে থ্রি-ডি’র ব্যবস্থা নেই। হল-মালিক দীপাঞ্জন জানালেন, সকালে শো-য়ের থেকেও দুপুর ও বিকেলের শো-এর অগ্রিম টিকিট বিক্রি হয়েছে বেশি। তবে তুলনামূলক বিচারে এই ছবি নিয়ে মানুষের মনে যে উন্মাদনা রয়েছে, সে কথা স্বীকার করে তাঁর বক্তব্য, “প্রথম শো-য়ে ৫০ শতাংশ ভর্তি হয়েছে। আশা রাখছি দিন এগোলে বিক্রিও এগোবে।” প্রসঙ্গত, বঙ্গে প্রায় ৫৬০টি স্ক্রিনে মুক্তি পেয়েছে এই ছবি, যা এক কথায় ভেঙে ফেলেছে ‘পুষ্পা’, ‘আরআরআর’-এর রেকর্ডও। রাজামৌলীর ‘আরআরআর’ এ রাজ্যা ৫৪৭টি স্ক্রিনে মুক্তি পেয়েছিল। অন্যদিকে ‘পুষ্পা’ মুক্তি পেয়েছিল ৫৪০টি স্ক্রিনে। সে দিক থেকে বেশ এগিয়েই রয়েছে অয়ন মুখোপাধ্যায়ের ছবিটি। মোটের উপর বিক্রিও খারাপ নয়।
বাংলায় বাদ বাংলা ছবি!
তবে খারাপ খবর, ‘প্রিয়া’, ‘নবীনা’র মতো বেশ কিছু হলে এই ছবি দেখানো হচ্ছে না। ওইসব প্রেক্ষাগৃহের হল-মালিকের দাবি, ডিস্ট্রিবিউটার দাবি করেছিলেন প্রথম দুই সপ্তাহ নাকি শুধু ‘ব্রহ্মাস্ত্র’ দেখাতেই হবে। দেখানো যাবে না অন্য কোনও ছবি। বাংলায় বাংলা ছবি চলবে না! এ শর্তে রাজি না হওয়ায় ‘ব্রহ্মাস্ত্র’ দেখানো থেকে বিরত থেকেছেন তাঁরা, জানা গিয়েছে তাঁদের মুখ থেকেই। প্রায় ৪০০ কোটি টাকা দিয়ে বানানো হয়েছে ছবিটি। এই ছবির হাত ধরেই কি বলিউডে হবে শাপমোচন নাকি ‘বয়কট ট্রেন্ড’-এ এই ছবিও ভেসে যাবে কোন এক অজানা দ্বীপে? সে উত্তর মিলবে আজ রাতের শেষেই।