দশ দিনেরও বেশি সময় ধরে হাসপাতালে। যমে-মানুষে টানাটানি। আপাতত একটু সুস্থ তরুণ মজুমদার। তবে বিপন্মুক্ত এ কথা বলছেন না চিকিৎসকেরা। সিসিইউ থেকে উডবার্ন ওয়ার্ডে এখনই স্থানান্তরিত করার কথাও ভাবছেনও না তাঁরা। তবু একটু সুস্থ হতেই তাঁর মনন জুড়ে ছবির চিন্তা। তিনি যে পরিচালক। তিনি তরুণ মজুমদার।
হাসপাতাল সূত্রে জানা যাচ্ছে, আগের থেকে একটু ভাল আছেন তিনি। শ্বাসনালীতে অস্ত্রোপচার হওয়ার কারণে এখন কথা বলায় নিষেধাজ্ঞা। তাতে কী, বেডে শুয়েই লিখলেন ‘ছবি কিন্তু হবে’। সূত্র মারফৎ জানা গিয়েছে এমনটাই। এরই পাশাপাশি হাসপাতাল সূত্র আরও জানা যাচ্ছে, ধীরে ধীরে দ্রুত সুস্থতার দিকেও এগচ্ছেন বর্ষীয়ান পরিচালক। তবে ফুসফুস ও কিডনি দুই-ই ক্ষতিগ্রস্ত। প্লেটলেট কাউন্ট ও বেড়েছে আগের থেকে। আগামীকাল অর্থাৎ বৃহস্পতিবার মেডিক্যাল বোর্ডের আরও এক মিটিং রয়েছে। সেখানেই পরিচালকের স্বাস্থ্য নিয়ে আগামী সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। তাঁর পর্যবেক্ষণে রয়েছেন পাঁচ সদস্যের বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের একটি বোর্ড।
এর আগে হাসপাতাল সূত্রেই জানা গিয়েছিল, শুক্রবার (২৪.০৬.২০২২) অতি সঙ্কটজনক হয়ে পরেছিল পরিচালকের শারীরিক অবস্থা। প্লেটলেটের পরিমাণ কমে হয়েছিল ৪১ হাজার। শনিবার তা সামান্য বেড়ে দাঁড়ায় ৫১ হাজার। তবে স্বস্তির খবর এটাই ছিল যে, সেই দেহে প্লেটলেটের পরিমাণ বাড়ছিল। বুকে নিউমোনিয়া বাসা বাঁধায় দুটি ফুসফুস ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার খবরও পাওয়া গিয়েছিল। তাতে জল জমেছে বলেও জানাচ্ছিলেন চিকিৎসকেরা। সব মিলিয়ে অবস্থা সঙ্কটজনক হলেও স্থিতিশীল বলেই জানা গিয়েছিল। তবে আপাতত তিনি এগচ্ছেন সুস্থতার দিকে।
বাংলা সিনেমার দুনিয়ায় কিংবদন্তী পরিচালকের অবদান রয়েছে অনেকখানি। ‘পদ্মশ্রী’ সম্মানে ভূষিত হয়েছেন তিনি। তাঁর ঝুলিতে রয়েছে পাঁচটি জাতীয় পুরস্কার। ‘বালিকা বধূ’, ‘কুহেলি’, ‘শ্রীমান পৃথ্বীরাজ’, ‘ফুলেশ্বরী’, ‘দাদার কীর্তি’, ‘আপন আমার আপন’, ‘গণদেবতা’, ‘আলো’র মতো একের পর এক সুপারহিট সিনেমা তিনি দর্শকদের উপহার দিয়েছেন। বর্তমানে তাঁর বয়স ৯১ বছর। কিছু দিন আগেও এক তথ্যচিত্রের রেকির জন্য ঘুরে এসেছিলেন পুরুলিয়া। হাজির হয়েছিল অনীক দত্ত পরিচালিত ‘অপরাজিত’ দেখতেও। তাঁর সুস্থ হয়ে বাড়ির ফেরার অপেক্ষায় আট থেকে আশি।