জয়িতা চন্দ্র
অভিনয় থেকে মিউজ়িক—’বল্লভপুরের রূপকথা’য় এই দুই ক্ষেত্রেই ওতপ্রোতভাবে জড়িয়ে দেবরাজ ভট্টাচার্য। তবে নিজেকে তিনি কোন পরিচয়ে এগিয়ে রাখতে বেশি পছন্দ করেন: অভিনেতা নাকি সঙ্গীত পরিচালক? জানালেন TV9 বাংলাকে।
অভিনেতা না সঙ্গীত পরিচালক, কোন পরিচয়ে নিজেকে দেখতে বেশি পছন্দ করেন?
আমার প্রাথমিক পরিচয় আমি একজন অভিনেতা। এমন একজন অভিনেতা, যে টুকটাক গানবাজনাও জানে। দীর্ঘদিন ধরে আমি অভিনয়টাই শিখেছি। থিয়েটারের সঙ্গে আমার সম্পর্ক ২২ বছরের। পরবর্তীতে অনেকে যখন বলেছিলেন, তুই তো মিউজিকটাও পারিস, তখন থেকেই এটা নিয়ে চর্চা শুরু। অনির্বাণের (অনির্বাণ ভট্টাচার্য) এই কাজটাও হঠাৎই আসে। আচমকাই একদিন বলে, ‘তুই এটা করবি?’ তারপরই বলে, ‘তুই-ই এটা করছিস’। ব্যাপারটা আবদারের মতো, কিন্তু হুকুম গোছের।
সঞ্জীব চরিত্রটার অনেক বড় ভূমিকা ছিল ছবিতে। সেই চরিত্রের জন্যই যখন মনোনীত হলেন, প্রথম প্রতিক্রিয়াটা কেমন ছিল?
আমার করা অন্যতম প্রিয় চরিত্রই সঞ্জীব। অনির্বাণ নিজে যদি এই ছবিতে অভিনয় করত, তাহলে ও-ই সঞ্জীবের চরিত্রে থাকত। সঞ্জীব এই নাটকের সবথেকে গুরুত্বপূর্ণ এবং কঠিন চরিত্র। তাই আমায় যদি কেউ প্রশ্ন করত: ভূপতি না সঞ্জীব, আমি সঞ্জীবকেই বেছে নিতাম।
‘বল্লভপুরের রূপকথা’য় অভিনেতা দেবরাজ আর সঙ্গীত পরিচালক দেবরাজের মধ্যে দর্শক হিসেবে হলে সিনেমা দেখতে-যাওয়া দেবরাজ কাকে এগিয়ে রাখলেন?
দর্শক হিসেবে আমি কোনও দেবরাজকেই (অভিনেতা ও সঙ্গীত পরিচালক) এগিয়ে রাখতে পারব না। তার কারণ আমি খুব খুঁতখুঁতে। অনির্বাণকে কোনওদিন জিজ্ঞেস করে দেখতে পারেন, দেবরাজের বিষয়টা ঠিক কেমন? দেখবেন ও বলবে, ‘দেবরাজের একবারে কিচ্ছু পছন্দ হয় না।’ তা-ও যদি এই প্রশ্নের উত্তর দিতেই হয়, আমি বলব: অভিনেতা হিসেবে ১০০ নম্বরের পরীক্ষায় যদি নিজেকে ৭০ দিই, তাহলে সঙ্গীত পরিচালক হিসেবে পরের ১০০-র পরীক্ষায় ৭০ নয়, আরও কম (নম্বর) দেব। কারণ আমার সত্য়িই মনে হয়েছে, গানগুলো আরও একটু ভাল হতে পারত। সেটা সুরের দিক থেকে হোক বা উপস্থাপনার দিক থেকে। তাই বলে এমন নয় যে, আমরা ইচ্ছে করে সেরাটা দিইনি। গানগুলোকে খুব সহজভাবে দর্শকের সামনে তুলে ধরার জন্য রেকর্ডিং এবং শুটিংয়ের সময় যতটা মনে হয়েছে, ঠিক ততটাই উজ়াড় করে দিয়েছি। এটা তো আমার একার সিদ্ধান্ত ছিল না, আমরা দু’জন মিউজ়িক ডিরেক্টর ছিলাম (দেবরাজ ভট্টাচার্য ও শুভদীপ গুহ), সঙ্গে অনির্বাণও ছিল। সকলের সম্মতিতেই কাজটা হয়েছে।
‘বল্লভপুরের রূপকথা’ নিয়ে মনে কোনও কিন্তু-কিন্তু ভাব কাজ করে?
এই উত্তরটা তাহলে নিজেকে কেন্দ্র করেই দিই। অভিনয় করতে গিয়ে অনেক জায়গায় মনে হয়েছে, ‘বাহ্ দারুণ করলাম’। আবার অনেক জায়গায় পর্য়দা নিজেকে দেখে মনে হয়েছে, ‘ইশশশ… এটা আরেকটু ভাল হতে পারত’। তবে সন্তুষ্ট কোনওটাতেই হইনি। সন্তুষ্ট হওয়ার অর্থ তো থেমে যাওয়া। ফলে যাই-ই করি না কেন, মনে হয় আরও ভাল হতে পারত। তবে আক্ষেপ নেই কোনও ক্ষেত্রেই।
‘বল্লভপুরের রূপকথা’কে যে দর্শক এভাবে গ্রহণ করছে, আপনি কী মনে করেন থিয়েটার আপনাদের টিমের সঙ্গে ওতপ্রোতভাবে জড়িয়ে থাকার ফলেই সেটা হল?…
সাক্ষাৎকারের পরবর্তী অংশ- https://tv9bangla.com/entertainment/tollywood/debraj-bhattacharjee-opens-up-on-nature-of-bengali-film-industry-audience-au60-688073.html