Tollygunge Fire: জেনারেটর না থাকলে লক্ষ্মীকাকিমা, হংসিনী দুষ্টের দমন করতে পারবে না, প্রযোজক সুশান্ত দাস
Susanta Das: মর্মান্তিক ঘটনাটি ইন্ডাস্ট্রির বুকে যে কতবড় ধাক্কা, তা মুম্বই থেকে খোলাখুলিভাবে জানালেন টেন্ট প্রযোজনা সংস্থার 'বস' সুশান্ত দাস।

স্নেহা সেনগুপ্ত
গতকাল, অর্থাৎ বৃহস্পতিবারের (১৩.১০.২০২২) ঘটনা। অনেক সকালে দাউদাউ করে আগুন জ্বলে ওঠে এসকে মুভিজ়ের কুঁদঘাটের যন্ত্রপাতি রাখার গোডাউনে। কুণ্ডলী পাঁকিয়ে ধোঁয়া উঠে যায় মাঝ আকাশে। ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতির আশঙ্কা। ঘটনাস্থল থেকে ছবি-ভিডিয়ো সরাসরি পোস্ট হতে থাকে সোশ্যাল মিডিয়ায়। বাংলা বিনোদন জগতের সিনেমা, সিরিয়াল, ওয়েব সিরিজ়ে নির্মাণে ক্যামেরা, লাইট, জেনারেটর, মেকআপ ভ্যান সরবরাহ করত এই এসকে-ই। সেই গোডাউনে আগুন লাগার ফলে কাজ আটকে যায় অনেক জায়গাতেই। বেশ কিছু সিরিয়ালের শুটিংও বন্ধ হয়ে যায়। এই মুহূর্তে বিভিন্ন সিরিয়ালের শুটিংয়ে ব্যবহৃত যন্ত্রাংশের একটা বড় অংশ এর-ওর থেকে ধার নিয়ে কাজ চালাতে হচ্ছে বলে ইন্ডাস্ট্রি সূত্রে খবর। মর্মান্তিক ঘটনাটি ইন্ডাস্ট্রির বুকে যে কতবড় ধাক্কা, তা মুম্বই থেকে খোলাখুলিভাবে জানালেন টেন্ট প্রযোজনা সংস্থার ‘বস’ সুশান্ত দাস।
সুশান্ত দাসের প্রযোজনায় ‘কে আপন কে পর’, ‘কৃষ্ণকলি’র মতো ধারাবাহিক তৈরি হয়েছে। এই মুহূর্তে চলছে ‘লক্ষ্মী কাকিমা’, ‘আলতা ফড়িং’-এর মতো জনপ্রিয় ধারাবাহিক। এই সমস্ত ধারাবাহিকের যন্ত্রপাতি সরবরাহ করত এসকে। কেবল তাই-ই নয়, বাংলায় যতগুলি সিরিয়াল চলছে, তার ৮০ শতাংশের জন্য ব্য়বহৃত যন্ত্রাংশই এসকে-র। টেলিভিশনের একটা বড় অংশের কাজ চলে এই সংস্থার পাঠানো জিনিসপত্রেই। গতকালের অগ্নিকাণ্ডে বেশ কিছু শুটিংয়েই সমস্যা তৈরি হয়েছে। সুশান্ত জানিয়েছেন, কিছু জায়গায় শুটিং বন্ধও হয়ে গিয়েছিল।
সুশান্ত বলেছেন, “অনেক জায়গার কাজ বন্ধ হয়েছিল গতকাল। আমাদেরও তো অনেকগুলো সিরিয়ালের কাজ চলে। এই ঘটনার পর আমাদেরও অন্য জায়গা থেকে ক্যামেরা ও অন্যান্য যন্ত্রাংশের ব্যবস্থা করতে হয়। শো তো থামালে চলবে না। ইট মাস্ট গো অন… আগুন লাগার ঘটনাটা যেহেতু অনেক সকালের, তাই ‘লক্ষ্মী কাকিমা’, ‘আলতা ফড়িং’-এর জন্য আমরা ক্যামেরা জোগাড় করতে পেরেছিলাম। এই বিপদের সময় আমাদের দিকে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিয়েছিলেন অন্যরা, যাঁদের কাছে বাড়তি একটা-দু’টো ক্যামেরা ছিল। এই পরিস্থিতিতে অন্যান্য প্রযোজনা সংস্থা, যাঁদের নিজস্ব ক্যামেরা ও যন্ত্রপাতি থাকে, তাঁরা বন্ধুত্বের হাত বাড়িয়ে দেন। যেমন নিসপাল সিংয়ের নিজস্ব ক্যামেরা আছে। সেখান থেকে আমরা যন্ত্রপাতি চেয়েছিলাম। কিন্তু যেহেতু নিসপালদের (সুরিন্দর ফিল্মস) নিজেদেরই এতগুলো শো চলছিল, সেটা পাওয়া সম্ভব হয়নি। এই সঙ্কটের পরিস্থিতিতে এগিয়ে এসে সহায়তা করেছন রাজীব মেহরার মতো কিছু ব্যক্তি (রাজীব মেহরা হলেন এক সময়ের বড়মাপের যন্ত্রপাতি সরবরাহ ব্যবসায়ী)।”
লাইট, ক্যামেরা, অ্যাকশন… এই তিনটে শব্দের প্রথম দু’টোর সঙ্গেই জড়িয়ে যন্ত্রাংশ। এই দু’টি অচল হলে ‘অ্যাকশন’ কিংবা ‘অ্যাক্টিং’-এর কোনওই অর্থই থাকে না। সুতরাং এগুলো না থাকলে অচিরেই কাজ বন্ধ। পরিকাঠামোয় আগুন ধরলে কি প্রতিমা তৈরি হয়? ঠিক যেমন ক্যামেরা, লাইট, জেনারেটর না থাকলে লক্ষ্মীকাকিমা-হংসিনীও দুষ্টের দমন করতে পারবে না, ফড়িংও কেরামতি দেখাতে পারবে না। সুশান্ত বলেন, “ক্যামেরা, লাইট, জেনারেটর না থাকলে কেউ কিছুই করতে পারবে না। ক্যামেরা চললে তবেই তো দর্শক সিরিয়াল দেখতে পারবেন পর্দায়। সেটাই তো আসল যোগসূত্র। গতকাল যা হয়েছে, তা একেবারেই প্রত্যাশিত ছিল না। খুব বাজে একটা ব্যাপার ঘটে গিয়েছে। সকালে এমন খবর পেয়ে এবং ওই দৃশ্য দেখে চ্যানেল কর্তৃপক্ষ, প্রযোজকদের সমস্যা হয়েছে খুব। টেলিকাস্ট তো কিছুতেই বন্ধ করা যাবে না। সুতরাং, সবক্ষেত্রেই অসুবিধা হয়েছে। অশোকদা, হিমাংশুরা অনেকদিন থেকেই এই ব্যবসার সঙ্গে যুক্ত আছেন। আশা করছি, পরিস্থিতি তাঁরা সামলে নিতে পারবেন।”





