মাথা নত করে হাঁটত লোকটা, সবাই বলতো ওই যে পাতাখোরের বাবা…: অনিন্দ্য

২০০৮ সাল থেকে নেশা ছাড়তে শুরু করেন অনিন্দ্য। শুরু হয় নতুন ভাবে বাঁচার এক নিরন্তর লড়াই। সেই লড়াইয়ে পাশে ছিলেন বাবা। অনিন্দ্যর নেশা ছেড়ে নতুন অধ্যায় শুরু করেছিলেন, একই সঙ্গে অন্যদিকে শুরু হয়েছিল আরও এক 'ফেরানোর' লড়াই।

মাথা নত করে হাঁটত লোকটা, সবাই বলতো ওই যে পাতাখোরের বাবা...: অনিন্দ্য
অনিন্দ্য এবং তাঁর বাবা
Follow Us:
| Updated on: Jun 20, 2021 | 1:27 PM

গোটা বিশ্বে আজ বাবাদের দিন। সোশ্যাল মিডিয়ায় আদুরে মা শেয়ার করছে বাবার সঙ্গে মিষ্টি স্মৃতি, ছেলে লিখছে হাজার প্রতিকূলতার মধ্যে কীভাবে বাবা আগলে রেখেছিল তাঁকে…এরই মধ্যে অনিন্দ্য চট্টোপাধ্যায়ের স্মৃতি উস্কে দিচ্ছে এক বিভীষিকাময় অতীততে কথা। যে অতীত অসম্মান করেছে তাঁর বাবাকে। যে অতীতে অনিন্দ্যর সবচেয়ে পছন্দের মানুষটির গায়ে লেগে গিয়েছিল ‘পাতাখোরের বাবা’র তকমা।

অনিন্দ্য নেশা করতেন, সব রকমের নেশা। সে কথা আগেও বলেছেন বিভিন্ন সাক্ষাৎকারে। পরিবার, প্রতিবেশীর কাছে এই খবর বেশিদিন চাপা থাকেনি। সমাজের রোষ পড়েছিল তাঁর বাবা মায়ের উপর। শুনতে হয়েছিল, ‘ছেলেটাকে ঠিকমতো মানুষ করতে পারেনি…।” বাবা নেই, তিন বছর। তবু সেই সব স্মৃতির দগদগের ক্ষত অনিন্দ্যর মনে আজও স্পষ্ট।

View this post on Instagram

A post shared by Anindya Chatterjee (@achatterjee4)

বাবাকে নিয়ে যে পোস্ট তিনি শেয়ার করেছেন সোশ্যাল মিডিয়ায় তাতে অনিন্দ্য লিখেছেন, “আজকে ফাদার্স ডে । দেখতে দেখতে এই ২৫ তারিখ তিন বছর হতে চললো বাবা নেই । এই লোকটা একটা সময়ে সমাজের বুকে মাথা নত করে হাঁটত । সবাই বলতো এর ছেলে নেশা করে বা পাতাখোরের বাবা । এটাও হয়তো শুনেছে যে ছেলেকে ঠিকমতো মানুষ করতে পারেনি তাই ছেলেটা এরকম। আমার জন্যে এই মানুষ টাকে অনেক বিপর্যস্ত হতে হয়েছে বিভিন্ন পরিস্থিতিতে।”

আরও পড়ুন বাবা শুভেন্দু তাঁর অনুপ্রেরণা আজও…ফাদার্স ডে-তে ‘ভাল বাবা’ হওয়ার প্রতিশ্রুতি শাশ্বতর

২০০৮ সাল থেকে নেশা ছাড়তে শুরু করেন অনিন্দ্য। শুরু হয় নতুন ভাবে বাঁচার এক নিরন্তর লড়াই। সেই লড়াইয়ে পাশে ছিলেন বাবা। অনিন্দ্যর নেশা ছেড়ে নতুন অধ্যায় শুরু করেছিলেন, একই সঙ্গে অন্যদিকে শুরু হয়েছিল আরও এক ‘ফেরানোর’ লড়াই। তা হল সমাজের চোখে হারিয়ে যাওয়ার বাবার শ্রদ্ধা-সম্মান ফেরানোর এক অবিরাম যুদ্ধ। অনিন্দ্য পেরেছিলেন। অভিনেতা লিখছেন, “2008 সাল থেকে আমার নেশা ছেড়ে ভালো থাকার সুবাদে আসতে আসতে পরিস্থিতি ঘুরতে শুরু করে । হ্যাঁ সত্যি আমি হয়তো অনেক সুখ স্বাচ্ছন্দ্য ফিরিয়ে দিতে হয়তো পারিনি কিন্তু যেটা ফিরিয়ে দিতে পেরেছিলাম সেটা একটু সম্মান একটু শ্রদ্ধা । বুক উচিয়ে বলতে পারতো আমি অনিন্দ্যর বাবা।”

অনিন্দ্য আর তাঁর বাবার এই কাহিনীতে মুগ্ধ নেটিজেন। কুর্নিশ জানাচ্ছেন মিমি-তনুশ্রীর মতো সেলেবরাও। নেটিজেনরা একযোগে বলছেন, “এভাবেও ফিরে আসা যায়…”? উত্তর দিচ্ছেন নিজেরাই, “সত্যি ‘বাবা’ সঙ্গে ছিলেন, কী দুর্দশাই হতো তা না হলে…”।