এক সপ্তাহ পার। এসএসকেএমে ভর্তি রয়েছেন বর্ষীয়ান পরিচালক তরুণ মজুমদার। হাসপাতাল সূত্রে পাওয়া সর্বশেষ খবর অনুযায়ী, রবিবার কিছুটা হলেও প্লেটলেটের মাত্রা বেড়েছে তাঁর। শারীরিক অবস্থার সামান্য উন্নতি হলেও সঙ্কট কাটেনি এখনও। রবিবার দুপুরে এসএসকেএমের এক চিকিৎসক বলেন, “মস্তিষ্কের সামান্য সাড়া মিলেছে। ফের এদিন ডয়ালিসিস করা হয়েছে। শরীরে ক্রিয়েটিনিন এর মাত্রা পাঁচের নিচে নেমেছে। প্রায় অচেতন অবস্থায় রয়েছেন। আপাতত ভেন্টিলেশন খুলে রাখা হয়েছে। তবে যে কোনও সময় প্রয়োজন হতে পারে।”
হাসপাতাল সূত্রের খবর, শরীরে অক্সিজেনের মাত্রা স্বাভাবিক রাখতে অক্সিজেন দেওয়া হচ্ছে। ইনটিউবেটেড অবস্থায় রয়েছে প্রবীণ পরিচালক। রাখা হয়েছে টি-পিস সাপোর্টেও। আপাতত ট্রাকিওস্টমি করা হবে না বলেই খবর। তাঁর রাইলস টিউবটি খোলা হবে কিনা সে বিষয়ে সিদ্ধান্ত সোমবার নেওয়া হবে বলে জানা গিয়েছে।
হাসপাতাল সূত্রে আরও জানা গিয়েছে, শুক্রবার অতি সঙ্কটজনক হয়ে পরে পরিচালকের শারীরিক অবস্থা। প্লেটলেটের পরিমাণ কমে দাঁড়ায় ৪১ হাজারে। শনিবার তা সামান্য বেড়ে দাঁড়ায় ৫১ হাজারে। তবে স্বস্তির খবর, এই মুহূর্তে তাঁর দেহে প্লেটলেটের পরিমাণ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৮৪ হাজার। তবে এক লক্ষ না পেরনো অবধি পুরোপুরি নিশ্চিত হতে পারছেন না চিকিৎসকেরাও। নিউমোনিয়া বাসা বাঁধায় ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে পরিচালকের দুই ফুসফুস। তাতে জল জমেছে বলেও জানাচ্ছেন চিকিৎসকেরা। সব মিলিয়ে অবস্থা সঙ্কটজনক হলেও স্থিতিশীল বলেই সর্বশেষ খবর।
এর আগে জানা গিয়েছিল, পরিচালকের ড্রাউজিনেস বা তন্দ্রাচ্ছন্ন ভাবই চিকিৎসকদের উদ্বেগে রাখছে। এ দিন জানা গিয়েছে, সেই ভাব খানিক হলেও কেটেছে, তবে কিডনির সমস্যার পাশাপাশি আরও এক চিন্তার বিষয় পরিচালকের শরীরে বাসা বাঁধা আর এক রোগ সেপ্টিসেমিয়া। তারও চিকিৎসা চলছে। শারীরিক অবস্থার এই দোলাচল খতিয়ে দেখে মেডিক্যাল বোর্ডের চিকিৎসকেরা বলছেন, তরুণবাবুর শারীরিক অবস্থা স্থিতিশীল কিন্তু সঙ্কটজনক।
বাংলা সিনেমার দুনিয়ায় কিংবদন্তি পরিচালকের অবদান রয়েছে অনেকখানি। ‘পদ্মশ্রী’ সম্মানে ভূষিত হয়েছেন তিনি। তাঁর ঝুলিতে রয়েছে পাঁচটি জাতীয় পুরস্কার। ‘বালিকা বধূ’, ‘কুহেলি’, ‘শ্রীমান পৃথ্বীরাজ’, ‘ফুলেশ্বরী’, ‘দাদার কীর্তি’, ‘আপন আমার আপন’, ‘গণদেবতা’, ‘আলো’র মতো একের পর এক সুপারহিট সিনেমা তিনি দর্শকদের উপহার দিয়েছেন। বর্তমানে তাঁর বয়স ৯১ বছর। কিছু দিন আগেও এক তথ্যচিত্রের রেকির জন্য ঘুরে এসেছিলেন পুরুলিয়া। হাজির হয়েছিল অনীক দত্ত পরিচালিত ‘অপরাজিত’ দেখতেও। তাঁর সুস্থ হয়ে বাড়ির ফেরার অপেক্ষায় আট থেকে আশি।