নগ্ন হয়েছেন রণবীর সিং। তাঁর উন্মুক্ত শরীর নিয়েই আপাতত চলছে জোর চর্চা। তাঁর পেশিবহুল সিক্স প্যাক, তৈলাক্ত দেহ, আর পৌরুষে কুপোকাত তামাম বিশ্ব। কেউ বলছেন ‘আগুন’ আবার কেউ বা মজে তাঁর সুঠাম গঠনে। তাঁর নগ্নতা নিয়ে সমালোচনা হাতেগোণা। ভিড় করেছে প্রশংসা। আর এখানেই এক প্রশ্ন তুলে দিয়েছেন অভিনেত্রী-সাংসদ মিমি চক্রবর্তী। মিমির প্রশ্ন, “রণবীর যদি পুরুষ না হয়ে নারী হতেন, তবে?”
ইতিহাস বলছে ন্যুড ফটোশুট নতুন নয়। ক্যামেরার সামনে নিজেকে বিবস্ত্র করেছেন বহু সেলেব। বিদেশে এর চলে বেশি হলেও ভারতেও উদাহরণ কম নেই। তবু চরিত্রের প্রয়োজন বা ব্যক্তিগত ইচ্ছেতেও নগ্ন হওয়ার সিদ্ধান্ত বারেবারেই বিদ্ধ করেছেন অভিনেত্রীদের। চলেছে তাঁদের চরিত্র নিয়ে কাঁটাছেঁড়া। তা সে টলিউডের ছত্রাক ছবির বিশেষ দৃশ্যটি হোক অথবা ‘রাম তেরি…’র মন্দাকিনী। রণবীরের নগ্নদেহের ছবি শেয়ার করে অভিনেত্রী-সাংসদ মিমি ইনস্টাগ্রামে স্টোরি পোস্ট করেছেন। লিখেছেন, “নেটমাধ্যমে রণবীরের ছবিতে আগুনে কমেন্ট। মনে প্রশ্ন জাগছে যদি রণবীর নারী হতেন তাহলেও কি এভাবেই প্রশংসা চলত নাকি করা হত ‘স্লাট শেমিং’? আমরা নারীদের উন্নতি নিয়ে কথা বলি, সমানাধিকার নিয়ে চর্চা করি। কিন্তু তা কোথায়?”
প্রসঙ্গত, নারী-স্বাধীনতা ও নারী-সুরক্ষার স্বার্থে বিভিন্ন সময়ে সামনে এসেছে সাংসদ-অভিনেত্রী মিমির নির্ভীক কার্যকলাপের কথা। টলিউডের ব্য়স্ত অভিনেত্রী তথা যাদবপুরের সাংসদ মিমি ২০২০ সালের সেপ্টেম্বর মাসে গড়িয়াহাটে প্রকাশ্য রাজপথে অশ্লীল ইঙ্গিত ও কটূক্তি করা এক ট্যাক্সিচালককে টেস্ট আইডেন্টিফিকেশন প্যারেড বা টি আই প্যারেডে শনাক্ত করতে প্রেসিডেন্সি জেলে গিয়েছিলেন। ট্যাক্সিচালকের দুর্ব্য়বহার ও শ্লীলতাহানির মামলায় পুলিশি তদন্তে সাহায্য করতে ঘটনার চারদিনের মাথায় কোর্টে গিয়ে বিচারকের কাছে জবানবন্দিও দিয়েছিলেন মিমি। টি আই প্যারেডের দিন বৃষ্টিকে অগ্রাহ্য করে তিনি আলিপুরের বিচারকের নির্দেশ মেনে হাজির হয়েছিলেন। সে দিন প্রায় এক ঘণ্টা জেলের ভিতর ছিলেন মিমি।
এহেন মিমির রণবীর-ইনস্টা স্টোরি নিয়ে এখন চতুর্দিকে আলোচনা। অনেকেই মনে করছেন তাঁর এই প্রশ্ন যথার্থ সঙ্গতও। রণবীর যদি রণবীর না হয়ে নিতান্ত দীপিকাই হতেন, তবেও কি তিনি ছাড় পেতেন নীতি-পুলিশদের হাত থেকে? প্রসঙ্গত, ‘গেহরাইয়াঁ’ ছবিতে অভিনয় করেছিলেন দীপিকা। তাঁর শেষ মুক্তিপ্রাপ্ত ছবি ওটিই। সেই ছবিতে বেশ কিছু দৃশ্যে বিকিনি পরেছিলেন তিনি। উন্মুক্ত পোশাক ছিল সঙ্গী। না, তাঁর মেদহীন শরীর আলোচনার বিষয় হয়ে ওঠেনি সেদিন, বরং তিনি বিয়ের পরও কী করে এমন ধরনের পোশাক পরতে পারেন তা নিয়ে উঠেছিল নানা প্রশ্ন। এই ‘ডাবল স্ট্যান্ডার্ড’-এর দিকেই আঙুল তুলেছেন মিমি। তুলে দিয়েছেন এমন কিছু প্রশ্ন, যার উত্তর সত্যিই অজানা।