জিতের সঙ্গে আমার বন্ধুত্ব বহুদিনের। ওর প্রথম বাংলা ছবিতে আমার সঙ্গে কাজ করতে এল। সে সময় প্রযোজক একটা ফ্রেশ ফেস খুঁজছিলেন আমার বিপরীতে। জিৎকে পছন্দ হয় ওঁদের। আজ এত বছর পর ফিরে তাকালে মনে হয় সাথী নয়, জিতের সঙ্গে আমার বন্ধুত্বের শুরুটা হয়েছিল সিনেমা শেষ হওয়ার পর।
ওর সঙ্গে প্রথম দেখা সাথীর স্ক্রিপ্ট রিডিংয়ের সময়। একসঙ্গে ডায়লগ বলা, কিছু কিছু জায়গা চেঞ্জ করা। মনে আছে বাংলায় অতবড় একটা কমার্শিয়াল ছবি হচ্ছে, তাই বিশাল সেট আপ করা হয়েছিল। সাউথে তার আগে অনেক কটা ছবি করলেও বাংলায় ওই ছিল আমার প্রথম ছবি। আই ওয়াজ ভেরি ভেরি এক্সাইটেড। শুটিং শুরু হল, একসঙ্গে সিন, নাচ-গান। তবে সত্যি কথা বলতে কি শুটিং করার সময় ওর সঙ্গে যে ভীষণ ভাল বন্ধুত্ব তৈরি হয়ে গিয়েছিল এমনটা নয়। বন্ধুত্ব শুরু হয় থিয়েটার রাউন্ডের সময়। ছবি হিট হয়েছিল, আমরা থিয়েটারে গিয়ে দর্শকের সঙ্গে কথা বলার জন্য ওই রাউন্ডটা করেছিলাম। আর ওখানেই জিতের সঙ্গে বন্ডিংয়ের শুরু। সময় পেয়েছিলাম অনেকটা। দুজন দুজনকে জানার জন্য ওটা যথেষ্ট। যখন সঙ্গী ছবিতে একসঙ্গে অভিনয় করলাম ততদিনে আমার বন্ধুত্ব উড়ান নিয়েছে।
জিতের প্রথম ছবি, আমার নয়। সেই অর্থে ও নিউকামার। কিন্তু সাথীতে ওর ডেডিকেশন আমাকে মুগ্ধ করেছিল। একটা ছোট্ট ঘটনা মনে পড়ছে, সাথীতে আমাদের প্রথম সিন ছিল, যেখানে জিৎ আমার কপালের টিপটা ঠিক করে দিচ্ছে। স্লো-মোশন শট। ছবিতে আমি এক দৃষ্টিহীনের চরিত্রে। আমার মতে গোটা ছবিতে ওই প্রথম দৃশ্যটাই সবচেয়ে পারফেক্ট ছিল। আমি বুঝে গিয়েছিলাম ও কাজের প্রতি ভীষণ প্যাশানেট। ভীষণ পরিশ্রমী। ওকে নিয়ে প্রথম ফিডব্যাক পেয়েছিলাম তুতো ভাইয়ের কাছে। সেও বলেছিল, ভীষণ ভাল অভিনয় করেছে ও।
বাংলায় অনেক ছবি করেছি, কিন্তু জিৎ আর আমার স্পেশ্যাল বন্ডিং রয়েছে। আমার হাজব্যান্ডের সঙ্গেও ওর ভীষণ ভাল সম্পর্ক। ওর স্ত্রী-মেয়ের সঙ্গেও আমার পরিবারের ভীষণ ভাল বন্ডিং। তাই কলকাতা এলেই জিতের সঙ্গে দেখা হবেই আবার ঠিক একই ভাবে জিৎ বেঙ্গালুরু গেলেও আমার সঙ্গে দেখা করবেই।
অনেক দিন পর বাংলা ছবিতে অভিনয় করছি আমি। সেই কারণেই ঘনঘন কলকাতা আসা। এ বছর সব মিলিয়ে প্ফ্যারায় ৪/৫ বার এলাম। অনেকেই জিজ্ঞাসা করেন জিৎ আর আমাকে আবার কবে বড় পর্দায় দেখা যাবে? সাথীর সিকুয়াল নিয়েও অনেকের প্রশ্ন রয়েছে। সত্যি কথা বলতে, সাথীর সিকুয়াল নিয়ে আমার আর জিতের কথা হয়েছে। আলোচনাও হয়েছে। কিন্তু এখনও ফাইনাল হয়নি কিছুই। সাথী আবারও পর্দায় আনা একটা বড় দায়িত্ব। ভাল চিত্রনাট্য দরকার। সবার ইমোশন জড়িয়ে। ও কলকাতায় আমি বেঙ্গালুরু, তাই এখনও পর্যন্ত কিছু ফাইনাল না হলেও অদূর ভবিষ্যতে এ নিয়ে সত্যিই ভাবছি আমরা। বাকিটা তো সময়ই বলবে।
আরও পড়ুন- Sherdil Shooting: ‘শেরদিল’-এর শুটিং ফ্লোর থেকে ছবি শেয়ার করলেন সৃজিত