অভিনেত্রী হিসেবে দর্শকদের কাছে পরিচিত মুখ রুক্মিণী মৈত্র। রিল-জীবন থেকে রিয়েল লাইফ… দেব-রুক্মিণীর কেমিস্ট্রি সকলের জানা। দেবের প্রযোজনা সংস্থার সূত্রেই সিলভার স্ক্রিনে ডেবিউ করেন রুক্মিণী। একের পর এক ছবিতে কাজ করে নিজেকে প্রমাণ করে চলেছেন রুক্মিণী। এরই মধ্যে বলিউডেও কাজ করে ফেলেছেন নায়িকা। তবে এবার তিনি চর্চায় উঠে এলেন ‘ব্যোমকেশ ও দুর্গরহস্য’ ছবির পোস্টার ও টিজ়ার প্রকাশের সঙ্গে সঙ্গেই।
টিজ়ারে সত্যবতীর লুক নেটিজ়েনদের পছন্দ হলেও প্রযোজক দেবের প্রথম পছন্দ অবশ্য ছিলেন না রুক্মিণী। তবে এখন দেবের মতে, ‘বিউটি উইথ ব্রেন’ রুক্মিণীকে বেশ মানিয়েছে সত্যবতী চরিত্রে। সত্যবতীর চরিত্র কেন গ্রহণ করলেন রুক্মিণী, তা জানতে চাইলে অভিনেত্রী বললেন, “সত্যবতীর মতো আইকনিক চরিত্র করা বেশ চ্যালেঞ্জিং। তা ছাড়া সত্যবতী একজন বুদ্ধিদীপ্ত মহিলা, যে ব্যোমকেশের সমস্ত গল্পে শুধু অলঙ্করণের জন্য নয়, শুধুই ঘরের কোণে থাকার জন্য নয়। সমসাময়িক সমাজ সম্পর্কেও সচেতন ছিলেন সত্যবতী।” ব্যোমকেশের রহস্যভেদে যেভাবে নিজের ছাপ রেখেছেন সত্যবতী, তাই-ই তাঁকে এই চরিত্রে অভিনয়ের প্রতি আকৃষ্ট করেছে বলে জানিয়েছেন রুক্মিণী।
এই প্রসঙ্গে রুক্মিণী বলেন, “সত্যবতীর চরিত্রে অভিনয় করার জন্য নিজেকে একটি প্রক্রিয়ার মধ্যে দিয়ে নিয়ে গিয়েছিলাম। অভিনয় নিয়ে ওয়ার্কশপ করা তো ছিলই।” তবে নায়িকার আরও সংযোজন, “আমি মেথড অ্যাক্টর নই। তবে প্রথমে চিত্রনাট্য, তারপর পরিচালকের সঙ্গে আলোচনা করেছি। তাঁর পর এই চরিত্রটির সাইকোলজিকাল স্পেসে চলে যাই। চরিত্রটি ভুল ঠিক যাই-ই করুক, সেটাকে মানতে হবে। তবেই সেই চরিত্রটি ফুটিয়ে তোলা সম্ভব বলে আমি মনে করি।” অনস্ক্রিন সত্যবতীর মতে, এই ধরনের আইকনিক চরিত্র করার সময় নানা মতামত অথবা মন্তব্য আসতে থাকবে। তাঁর কথায়, “স্রেফ রাজহাঁসের মতো জলের মধ্যে থেকে দুধটুকু নিয়ে নিতে হবে।” এই প্রসঙ্গে নায়িকা তাঁর বাবার কথা মনে রাখেন সবসময়। বললেন, “বাবা বলতেন তোমার বোধ ও বুদ্ধি কেউ নিতে পারবে না। এগুলোই মনে রাখি এবং ব্যবহার করি।”
বিনোদিনীর ভূমিকায় অভিনয় শেষ করেই সত্যবতীর চরিত্র করা কতটা চ্যালেঞ্জিং ছিল? প্রশ্নের উত্তর দিতে গিয়ে রুক্মিণী বললেন, “বিনোদিনীর চরিত্র থেকে বের হতে আমি একপ্রকার শারিরীক ও মানসিকভাবে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছিলাম। সেটা খুবই কষ্টকর ছিল। তবে সেই লম্বা প্রক্রিয়া নিয়ে পরে কথা বলব।”
সত্যবতীর চরিত্রে অভিনয় করাকে কেন্দ্র করে আবার স্বজনপোষণের কথা উঠছে ইতি-উতি। রুক্মিণী বলেছেন, “সত্যবতীর চরিত্রে দেবের প্রথম পছন্দ রুক্মিণী ছিল না। তবে ছবির পরিচালক (বিরসা দাশগুপ্ত) দেব এবং আমাকে রাজি করান। আমার উপর আমার চেয়ে বেশি আস্থা রেখেছেন ওরা। এবার যা বলার, দর্শক বলবেন।”
প্রসঙ্গত রুক্মিণী জিতের প্রযোজনায় জিতের বিপরীতে নতুন ছবির কাজ শুরু করেছেন। ছবির নাম ‘ব্যুমেরাং’। সবশেষে রুক্মিণীর কাছে প্রশ্ন, ব্যোমকেশের উপর সত্যবতীর প্রভাব যতটা লক্ষ্য করা যায়, দেবের উপরেও কি সেই রকমই প্রভাব থাকে রুক্মিণীর? উত্তরে হেসে নায়িকার জবাব, “এটা তো দেব বেশি ভাল বলতে পারবে। তবে আমরা দু’জনেই সব বিষয়ে কথা বলে থাকি। কোনও সাজেশন থাকলে সেটাও আমরা আলোচনা করি। কতটা নেওয়া হবে, সেটা তো পরের বিষয়। তবে আলোচনার মধ্যে দিয়েই আমরা দু’জনে সিদ্ধান্ত নিয়ে থাকি।”