AQI
Sign In

By signing in or creating an account, you agree with Associated Broadcasting Company's Terms & Conditions and Privacy Policy.

Tota Roy Chowdhury Exclusive: দীর্ঘ দিন কর্মহীন হয়ে বসে থেকেছি, টালিগঞ্জের থেকে আর কোনও কিছু প্রত্যাশাই করি না

Nepotism: আমি আগের কথা বলতে পারব না। এখন সবটা পাল্টাচ্ছে। কারণ এখন বলিউডের মতো গণতান্ত্রিক জায়গা সত্যিই বোধহয় হয় না।

Tota Roy Chowdhury Exclusive: দীর্ঘ দিন কর্মহীন হয়ে বসে থেকেছি, টালিগঞ্জের থেকে আর কোনও কিছু প্রত্যাশাই করি না
| Updated on: Jun 24, 2022 | 11:20 AM
Share
মুম্বই তাঁকে ডাকলেই যে তিনি টালিগঞ্জ ছেড়ে বলিউডে উড়ে যাবেন, তা নয়। তবে মুম্বই থেকে তাঁকে প্রায়শই ডাকছে, TV9 বাংলাকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে গতকাল এই কথাই বলেছেন সৃজিত মুখোপাধ্যায়ের ‘ফেলুদা’ টোটা রায়চৌধুরী। টেলিভিশনে অভিনীত তাঁর সুপারহিট চরিত্র রোহিত সেন থেকে বলিউডের নেপোটিজ়ম অথবা সাম্প্রতিক সোশ্যাল মিডিয়ায় স্বঘোষিত টলিউডপন্থীদের আর্তি ‘বাংলা সিনেমার পাশে দাঁড়ান’… সাক্ষাৎকারের দ্বিতীয় পর্বেও টোটা রায়চৌধুরী নির্দ্বিধ।
TV9 বাংলা: রোহিত সেন চরিত্রতার কাছে কতটা কৃতজ্ঞ আপনি?
টোটা রায়চৌধুরী : আমি সব থেকে বেশি কৃতজ্ঞ লীনা গঙ্গোপাধ্যায়ের কাছে। কারণ উনি যে চরিত্রটা লিখেছেন আমার জন্যে, চট করে এত শক্তিশালী পুরুষ চরিত্র পাওয়া টিভির পর্দায় বেশ দুষ্কর। উনি সেভাবেই লিখেছিলেন।  আমায় জায়গাও করে দিয়েছিলেন। যে দেড় থেকে পৌনে দু’বছর কাজটা করেছি, পরতে-পরতে বুঝেছি যে, উনি ধারাবাহিকের দৃশ্য-সংলাপগুলো লিখেছেনও আমার কথায় মাথায় রেখেই। সেই কারণেই সাম্প্রতিককালে করা এটা আমার ভীষণ পছন্দের চরিত্র।
TV9 বাংলা: রোহিত সেন ছাড়া আর কোনও চরিত্র মনে পড়ে?
টোটা রায়চৌধুরী : অবশ্যই, তিনটি চরিত্রের কাছে আমি ভীষণ কৃতজ্ঞ। যে তিনটি চরিত্র আমাকে মানুষের মনে জায়গা করে দিয়েছে, সেগুলি হল পরিচালক ঋতুপর্ণ ঘোষের ‘চোখের বালি’র বিহারী চরিত্র, সৃজিত মুখোপাধ্যায়ের ফেলুদা ও তৃতীয়টা আবারও সেই লীনাদির রোহিত সেন।

TV9 বাংলা: বলিউডে নেপোটিজ়ম, বহিরাগতরা সহজে জায়গা করতে পারে না—এই কথাগুলো ভীষণভাবে চর্চায়, আপনি তো বহিরাগত, সহজেই কী জায়গা মিলেছিল?
টোটা রায়চৌধুরী : আজকাল মেলে। আমি আগের কথা বলতে পারব না। এখন সবটা পাল্টাচ্ছে। কারণ এখন বলিউডের মতো গণতান্ত্রিক জায়গা সত্যিই বোধহয় হয় না। তারও একটা কারণ আছে, ওটিটি আসার পর ওখানে যে ভাল কাজ করবে, সেই-ই কাজের সুযোগ পাবে। ছবি-নির্মাতারা তাঁদের আজকাল খুঁজেও বার করে নেন। এই যে সবাই বলে না, নেপোটিজম, স্বজনপোষণ, সত্যি বলতে কি আমার কখনও কাজ করতে গিয়ে মনে হয়নি আমি একজন বহিরাগত। আমি তো এত দিন ধরে কাজ করছি, এই ব্যবহারটা সত্যিই আমি পাইনি। করণ জোহারের সঙ্গে কাজ করতে গিয়ে দেখেছি বা অন্যদের ক্ষেত্রেও দেখেছি, কাজটা যে করে তাঁকে ওঁরা যথাযথ সম্মান দিয়ে থাকেন। বললে হয়তো অনেকেই ভাববে বাড়িয়ে বলছি। আমার নিজের অভিজ্ঞতা… এত ভালবাসা, এত সম্মান আমি পেয়েছি ওঁদের থেকে যে, আমার কখনও মনেই হয়নি আমি বাইরের কেউ। সকলেই শিল্পী, এক যোগে কাজটা হচ্ছে, এটাই ওদের সব থেকে বড় গুণ।

TV9 বাংলা: এখন অনেকেই সোশ্যাল মিডিয়ায় বলছেন বাংলা সিনেমার পাশে দাঁড়ানোর কথা। তাঁরাই আবার ট্রোল করছেন—এতে কতটা ক্ষতি হচ্ছে ইন্ডাস্ট্রির?
টোটা রায়চৌধুরী : তুমি না আমায় সঠিক সময় এই প্রশ্নটা করলে। কারণ সদ্য মুক্তি পেয়েছে ‘ফেলুদা’। আমি গত কয়েকদিন প্রচুর প্রশংসা পেয়েছি, প্রচুর সমালোচনাও পেয়েছি। তবে তার সঙ্গে যা পেয়েছি, তা দেখে সত্যিই বলছি আমি অবাক। মানুষের মনে এত রাগ! এত ঘেন্না! না, আমি কিন্তু সমালোচনার বিরুদ্ধে কথা বলছি না। আমি বরাবর গঠনমূলক সমালোচনায় বিশ্বাস রাখি। আমায় ভুলগুলো কেউ ধরিয়ে দিক। আমি দিন-দিন আরও ভাল অভিনেতা হয়ে উঠব। বিশ্বাস করো, আমায় নিয়ে প্রতিটা লেখা আমি ভীষণ খুঁটিয়ে-খুঁটিয়ে পড়ি। ভীষণ যত্ন নিয়ে পড়ি। ভাবি, যদি কেউ আমায় একটা নতুন ভুল ধরিয়ে দেয় বা নতুন কোনও উপদেশ দেয়। যে দিকটা নিয়ে হয়তো আমি কখনও ভেবেই দেখিনি, আমার কাছে একটা নতুন দরজা খুলে যাবে। কিন্তু সেটা খুব কমই হয়। বদলে যেটা হয়, তা হল নোংরা ভাষায় আক্রমণ। এটা আমি শুনেছিলাম যে অন্যান্য প্রদেশে হয়, বিশেষ করে আমাদের দেশের উত্তর দিকে হয়। সেটা যে আমাদের বাঙালিদের মধ্যে এত প্রকটভাবে উপস্থিত, ‘ফেলুদা’ মুক্তি পাওয়ার পর আমি টের পেলাম। তাতে একটু হতাশই হলাম বলতে পারো। আমাদের বাংলায় এটা হচ্ছে বিশ্বাস করো, আমি জানতাম না। আমরা না একটা ভীষণ রাগী সমাজে বাস করছি। সবার মধ্যে ভীষণ রকমের টানাপোড়েন। কেউ হয়তো কাজটা দেখেইনি, অভিনেতার ওপর রাগ বা ছবি-নির্মাতার ওপর রাগ, তা থেকেই ছড়িয়ে দিচ্ছে কুৎসা। নিজে যাঁরা কিছু করতে পারছেন না, অন্যের ভালও তাঁরা দেখতে পারেন না। এটা কেন? এই প্রশ্নটা গত কয়েকদিন ধরে আমায় ভীষণভাবে ভাবাচ্ছে।
TV9 বাংলা: এখন তো আপনার পুরোদমে কামব্যাক, টলিউড থেকে কি ভাল কাজের প্রস্তাব হাতে আসছে?
টোটা রায়চৌধুরী : আমি আগেও ছিলাম, আমি এখনও আছি। তবে না, এখনও সেভাবে কেউ যোগাযোগ করেননি। হয়তো তাঁরা করবেন। আবার না-ও করতে পারেন। কারণ আমার জীবনে অনেক ভাল কাজের পরে আমি আশা করে বসে ছিলাম। কিন্তু কেউ ডাকেনি। দীর্ঘ দিন কর্মহীন হয়ে বসে থেকেছি, এটাও সত্যি। সুতরাং টালিগঞ্জ কি করবে সেটা টালিগঞ্জ-ই জানে। আমি কিন্তু টালিগঞ্জের থেকে আর কোনও কিছু প্রত্যাশাই করি না।
                                                                                                                                                                অলঙ্করণ: অভীক দেবনাথ