অনীক দত্ত
সেদিন আমি একটা পোস্টে দেখলাম যে, যাদবপুরের বুক স্টল থেকে সপ্তমীর সন্ধ্যার মধ্য়ে ২ লাখেরও বেশি টাকার বই বিক্রি হয়েছে এবং বিপুল সাড়া পড়েছে। তার মধ্য়ে নানারকম গল্পও জানতে পারি। এক রিকশাচালক বৃষ্টির কারণে স্টলে দাঁড়িয়ে একটি বই নাড়াচাড়া করে পয়সা জিজ্ঞেস করে রেখে দিয়ে চলে যায়। ঘণ্টা দু’-এক বাদে কিছু রোজগার করে সেই বইটি কিনতে চেয়েছিল। তার থেকে পয়সা চাওয়া হয়নি। এগুলো শুনেই আমি বুঝেছিলাম যে, নিউটনের তৃতীয় সূত্র মেনে একটা প্রতিক্রিয়া হবে এবং সেটা হলও। সেটা আমাদের মনে করিয়ে দিল রে ব্র্যাডবেরির বিখ্যাত উপন্যাস’ ফ্যারেনহাইট ৪৫১’-এর কথা। পরবর্তীকালে এই বইয়ের উপর ভিত্তি করে ট্রুফো সিনেমা তৈরি করেছিলেন। ‘হীরক রাজার দেশে’র কথাও মনে পড়ে যায়, যেখানে বইয়ের উপর আক্রমণ হয়। নাৎসি জার্মানিতেও হয়েছিল।
তো এরও যে একটা প্রতিক্রিয়া হবে, আমি জানতাম। কারণ, আর কেউ কিছুই চুপচাপ মেনে নিচ্ছে না। ছেলেপুলেরা বেশ টেরিয়া হয়ে গিয়েছে। রুখে দাঁড়াচ্ছে। একরোখা হয়ে যাচ্ছে। ভাড়াটে গুন্ডাদের দিয়ে, যে সব ছেলেপুলেদের Power of Conviction আছে, তাঁদের মোকাবিলা করা কঠিন। এই ঘটনার পরদিন দেখলাম কমলেশ্বর মুখোপাধ্যায়, অর্থাৎ কমল, একটি ডাক দিয়েছে প্রতিবাদসভার। সেদিন আমার এক নিকট আত্মীয়া আইসিইউতে ভর্তি ছিলেন, ফলে সেই সভায় আমি অংশগ্রহণ করতে পারিনি। আমার সেই নিকট আত্মীয়া প্রয়াত হন সেদিনই। আমাকে কেওড়াতলার দিকে যেতে হয়। তার মধ্যেই জানতে পারি কমলদের তুলে নিয়ে যাওয়া হয়েছে পুলিশের ভ্যানে।
অনেকেই বলছেন, তা হলে কি তৃণমূলের ভরাডুবি আসন্ন? আমি উত্তর দিয়েছি, আসন্ন না হলেও তারা আতঙ্কিত। তা না হলে এই ধরনের ভিজ়ুয়ালস বিরোধী, মূলত সিপিআইএমকে উপহার দিত না। বিনাশ কালে বুদ্ধিনাশ বলে একটা কথা আছে না, সেটাই হয়েছে আসলে। বুদ্ধি থাকলে, তারপর তো নাশ হবে। এমনিতেই উল্টোপাল্টা কাজ করে। সেগুলো চড়ম পর্যায় অনেকগুণ বেশি বেড়ে গিয়েছে। ভুলভাল বকছে। বিরাট-বিরাট ফ্লেক্স লাগিয়েছে মহালয়ার পরদিন থেকেই। আমি তো বাড়ি থেকে বেরতেই পারছিলাম না। আমরাই তো পয়সা দিচ্ছি ওনার ক্যাম্পেইনের জন্য।