আগামী ২৩ সেপ্টেম্বর সিনেমাপ্রেমী মানুষ ও সিনেমা জগতের কাছে অতি গুরুত্বপূর্ণ দিন। এদিন গোটা বিশ্বে পালিত হবে ওয়ার্ল্ড সিনেমা ডে, অর্থাৎ বিশ্ব সিনেমা দিবস। সেই উপলক্ষে সিদ্ধান্ত হয়েছে দেশের সিনেমা হলগুলিতে (মূলত মাল্টিপ্লেক্সে, যেখানে টিকিটের দাম বেশ চড়া) মাত্র ৭৫ টাকায় সিনেমা দেখানো হবে। এই উদ্যোগ যদিও ভারত প্রথম নেয়নি, নিয়েছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রই। মাত্র ৩ ডলার (ভারতীয় মুদ্রায় তাও প্রায় ২৪০ টাকা) সিনেমা দেখেন সেখানকার মানুষ। ভারতও অনুপ্রাণিত হয়েছে। এবং ঠিক করেছে আগামী ২৩ সেপ্টেম্বর, ওয়ার্ল্ড সিনেমা ডে-তে মাত্র ৭৫ টাকায় মাল্টিপ্লেক্সে সিনেমা দেখার সুযোগ করে দেবে। কারণ খুব স্পষ্ট, হলবিমুখ মানুষকে হলমুখী করা। মার্কিনিদের থেকে অনুপ্রাণিত হলেও এই পদক্ষেপকে সাধুবাদ জানিয়ে সাড়া দিয়েছেন দর্শকও। অগ্রিম বুকিংয়ে পিভিআর, আইনক্স, সিনেপলিস, কার্নিভ্যালের মতো সিনেমা হলে হুহু করে বিকোচ্ছে টিকিট। যাঁদের সিনেমা হলে চলছে, তাঁদের কেউ-কেউ দারুণ খুশি। প্রায় সিট বুক হয়ে গিয়েছে এখন থেকেই। সেই ‘খুশি’দের তালিকায় রয়েছেন বাঙালি পরিচালক কৌশিক গঙ্গোপাধ্যায়।
সম্প্রতি কৌশিক পরিচালিত ‘লক্ষ্মী ছেলে’ মুক্তি পেয়েছে সিনেমা হলে। রমরমিয়ে চলছে সেই ছবি। কিন্তু মাল্টিপ্লেক্সে টিকিটের দাম বেশি থাকে, সঙ্গে আনুসাঙ্গিক খাদ্যদ্রব্যের দামও বেশি থাকে বলে সব সময় শো হাউজ়ফুল হয় না। যেমনটা ভরে থাকে নন্দন কিংবা অন্যান্য সিঙ্গল স্ক্রিন ও সরকারী হলে।
কিন্তু বিশ্ব সিনেমা দিবস উপলক্ষ্যে মাল্টিপ্লেক্সে হুহু করে অগ্রিম বুকিং হয়েছে ‘লক্ষ্মী ছেলে’র টিকিট। এর কারণ, টিকিটের দাম মাত্র ৭৫ টাকা।
এই নিয়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় একটি পোস্ট করেছেন কৌশিক। এবং প্রশ্ন তুলেছেন মাল্টিপ্লেক্সের চড়া টিকিটের দাম নিয়েও। অনলাইন বুকিং সাইটের একটি স্ক্রিন শট শেয়ার করেছেন তিনি। সেখানে দেখা যাচ্ছে দক্ষিণ কলকাতার শপিং মল সাউট সিটির মাল্টিপ্লেক্সে ‘লক্ষ্মী ছেলের’ সিট বুকিং প্রায় শেষের পথে। সামনের কিছু সিটই কেবল খালি পড়ে। এছাড়া, হল প্রায় ভর্তি।
কৌশিক লিখেছেন, “কাল ওয়ার্ল্ড সিনেমা ডে উপলক্ষে সিনেমার সব টিকিট মাত্র ৭৫ টাকায়!সাউথ সিটির মতো আরও অনেক সিনেমা হল অ্যাডভান্সেই প্রায় হাউজফুল একদিন আগেই। টিকিটের দাম কম হলে মানুষের সিনেমা দেখার আগ্রহ ও সামর্থের একটা স্বস্তি হয়। ভাবুন প্লিজ…”
অর্থাৎ, সিনেমার টিকিটের দাম সাধ্যের মধ্যে চলে এলে দর্শকের পকেটে টান পড়বে না। তাঁরা নির্দ্বিধায় সিনেমা দেখার আনন্দ উপভোগ করতে পারেন। রেস্তর কথা চিন্তা করতে হয় না সেই মুহূর্তে।
কৌশিকের এই পোস্টে সেই চিন্তাই রয়েছে। সেই প্রশ্নও রয়েছে। পরিচালক সকলকে ভাবতে বলছেন। আর হবে নাই বা কেন, তিনি যে ‘সিনেমাওয়ালা’র মতো ছবির নির্দেশক। শহরের বুক থেকে সিঙ্গল স্ক্রিন উঠে যাওয়ার মতো বেদনাদায়ক ঘটনা নিয়ে আস্ত একটা ছবি তৈরি করেছিলেন কৌশিক। পরাণ বন্দ্যোপাধ্যায় হৃদয় নিংড়ে অভিনয় করেছিলেন তাতে।
(প্রসঙ্গত, ২০০০ সালের কথা। হায়দরাবাদের একটি মাল্টিপ্লেক্সসম সিনেমা হলে, যাঁর ছাদে স্লাইড দিয়ে গাড়ি উঠে যায়, সেখানে দেখানো হচ্ছিল ‘কভি খুশি, কভি গম’। টিকিটের দাম ছিল ২০ থেকে ৩৫ টাকা। হল ছিল ভর্তি…)