বাড়িতে শোয়ানো উত্তমের মরদেহ, কোলে বাচ্চা নিয়ে বসে সুপ্রিয়া! মহানায়কের মৃত্যুর খবর পেয়ে কী করেছিলেন অভিনেত্রী?
মাধবীর সঙ্গে দারুণ বন্ধুত্ব ছিল উত্তম-সুপ্রিয়ার। নানা সময়ই উত্তমের ময়রাস্ট্রিটের বাড়িতে বিনা নিমন্ত্রণেই পৌঁছে যেতেন মাধবী। চলত দেদার আড্ডা। সালটা ২৪ জুলাই, ১৯৮০ ।

উত্তম কুমার ও সুপ্রিয়া চৌধুরীর সম্পর্ক নিয়ে নানা মুণির নানা কথা। কিন্তু এই দুটি মানুষকে যাঁরা খুব কাছ থেকে চিনতেন, জানতেন, তাঁদের কাছে উত্তম-সুপ্রিয়ার প্রেম সাধারণের ভাবনা থেকে ছিল অনেক উর্ধ্বে। আর তাই তো সুচিত্রা সেন হোক বা মাধবী মুখোপাধ্যায়, উত্তম-সুপ্রিয়ার রিয়েল জুটিকে সদা সম্মান করে এসেছেন তাঁর ঘনিষ্ঠরা।
মাধবীর সঙ্গে দারুণ বন্ধুত্ব ছিল উত্তম-সুপ্রিয়ার। নানা সময়ই উত্তমের ময়রাস্ট্রিটের বাড়িতে বিনা নিমন্ত্রণেই পৌঁছে যেতেন মাধবী। চলত দেদার আড্ডা। সালটা ২৪ জুলাই, ১৯৮০ । গোটা ভারতের সিনেপ্রেমী মানুষরা শোকস্তব্ধ উত্তম কুমারের প্রয়াণের খবর পেয়ে। মাধবীও ছুটে এসেছিলেন মহানায়ককে শেষবারটি দেখার জন্য। কিন্তু মৃণাল সেন মাধবীকে বললেন, তুমি বরং সুপ্রিয়ার কাছে যাও। ও একা রয়েছে বাড়িতে। এক সংবাদপত্রকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে মাধবী সেদিনের পুরো ঘটনার কথা বর্ণনা করেছিলেন।
সেদিন মাধবী যখন ময়রাস্ট্রিটের বাড়িতে পা রাখলেন, তখন দেখলেন আলুথালু বেশে সোফার উপর বসে রয়েছেন সুপ্রিয়া চৌধুরী। চোখে-মুখে শোকের ছায়া। উত্তমের মৃত্যুর খবর পাওয়ার পর থেকে যে তাঁর চোখের জল থামেনি তা স্পষ্ট মুখে। সুপ্রিয়ার কোলে একটি বাচ্চা, হয়তো কোনও আত্মীয়র হবে। বাচ্চাকে কোলে নিয়ে অপলক দরজার দিকে তাকিয়ে রয়েছেন সুপ্রিয়া। মাধবী ঘরে ঢুকতেই বলে উঠলেন, ”উত্তমকে দেখে এলে? এখানে বসো।” মাধবীকে কাছে ডাকলেন সুপ্রিয়া। সুপ্রিয়ার কাঁধে হাত রাখলেন মাধবী। অনুভব করলেন, সুপ্রিয়া যেন পাথরের মতো শক্ত হয়ে রয়েছেন। তারপর দীর্ঘক্ষণ নিস্তব্ধতা। মাধবীর সঙ্গে একটিও বাক্য খরচ করেননি সুপ্রিয়া। মাধবীও ছিলেন চুপ। এমনিভাবেই একঘণ্টা সময় পার হওয়ার পর মাধবী ফিরে এলেন, উত্তমের ভবানীপুরের বাড়িতে। যেখানে শায়িত ছিল মহানায়কের নিথর দেহ। অপলক সেই দিকেই তাকিয়ে ছিলেন মাধবী। ভবানীপুরের বাড়িতে তখন উত্তমের ঘনিষ্ঠদের ভিড়। বাড়ির বাইরে অনুরাগীরাও মহানায়ককে শেষশ্রদ্ধা জানাতে হাজির।
