বাংলাদেশের যৌনতা ভরপুর সিনেমার জন্য কলকাতার এক নম্বর নায়িকার কাছে অফার, কে তিনি?
সেই প্রতিমার যে এমন পরিণতি ঘটবে, তা স্বপ্নেও ভাবতেই পারেননি কেউই। হ্য়াঁ, মহুয়া রায়চৌধুরী। কেরিয়ারের শুরুটা তাঁর স্ট্রাগলে ভরা হলেও, পরে সাফল্যের চূড়ায় পৌঁছে ছিলেন মহুয়া। তাঁকে ঘিরে তৈরি হয়েছিল নানা গুঞ্জনও।

তাঁকে ডাকা হত টলিউডের সোনার প্রতিমা! পানের পাতার মতো মুখশ্রী হওয়ার কারণেই তাঁর রূপ ছিল সাক্ষাৎ মা দুর্গার মতো। অনেকেই তাঁকে দুগ্গা বলেও ডাকতেন। কিন্তু সেই প্রতিমার যে এমন পরিণতি ঘটবে, তা স্বপ্নেও ভাবতেই পারেননি কেউই। হ্য়াঁ, মহুয়া রায়চৌধুরী। কেরিয়ারের শুরুটা তাঁর স্ট্রাগলে ভরা হলেও, পরে সাফল্যের চূড়ায় পৌঁছে ছিলেন মহুয়া। তাঁকে ঘিরে তৈরি হয়েছিল নানা গুঞ্জনও। কখনও তৎকালীন হিট নায়কের সঙ্গে তাঁর সম্পর্কের গুঞ্জন, তো কখনও পরিচালকের সঙ্গে তাঁর ব্যক্তিগত সম্পর্ক নিয়ে জলঘোলা। এমনকী, রটে গিয়েছিল বাংলাদেশের যৌনতা ভরপুর ছবিতেও নাকি ডাক পেয়েছিলেন অনুরাগের ছোঁয়া অভিনেত্রী। এমন অফার পেয়ে কী করেছিলেন মহুয়া? এই ঘটনা কি সত্যি ? নাকি গুঞ্জন!
সময়টা সাতের দশকের মাঝামাঝি। বক্স অফিসে তখন মহুয়ার জয়জয়কার। একের পর এক হিট ছবি। তা এমন হিট নায়িকাকে ছবিতে নিতে সব পরিচালক ও প্রযোজক তটস্থ। কিন্তু মহুয়া তখন ছবি বাছাইয়ে বড্ড খুঁতখুঁতে। ঠিক সেই সময় ওপার বাংলা থেকে এক ছবির অফার পেলেন অভিনেত্রী। বাংলাদেশের ছবির অফার পেয়ে মহুয়া তো আনন্দে মেতে উঠেছিলেন। তবে চিত্রনাট্য পড়তেই বেঁকে বসলেন। মহুয়া নিয়ে লেখা বায়োগ্রাফিতে এই ঘটনার কথা বার বার উঠে এসেছে। জানা গিয়েছিল, বাংলাদেশ থেকে যে ছবির অফার পেয়েছিলেন মহুয়া, তা একেবারেই যৌনতায় ভরপুর। তাই প্রথমে রাজি হলেও, মহুয়া পরে পরিচালককে না করে দেন। মহুয়া চাননি যৌনতাকে সাফল্যের সিঁড়ি বানাতে। তাঁর কাছে ভাল চরিত্র ও অভিনয়টাই ছিল আসল। এই কারণেই সিনেপর্দায় নায়কের ঠোঁটে চুমু খাওয়ার বিষয়টিকেও খুব একটা গুরুত্ব দিতেন না মহুয়া। নানা সাক্ষাৎকারে তিনি বলতেন, রোমান্টিক দৃশ্যের জন্য আবহই যথেষ্ট, তার জন্য চুম্বনের দৃশ্যের দরকার পরে না। সুতরাং সেই মহুয়ায় যে এমন অফারে রাজি হবেন না তা জানাই ছিল।
সময়টা ১৯৮৫ সাল। জানুয়ারি মাস। বাংলাদেশ থেকে ফের নতুন আরেক ছবির অফার পেলেন মহুয়া। কিন্তু পূর্বের অভিজ্ঞতার উপর ভর করে মহুয়া প্রথমে সেই অফার নাকচ করে দেন। কিন্তু পরে যখন জানতে পারেন, সেই ছবি বাংলাদেশের নামকরা এক পরিচালকের তখন হ্য়াঁ করেছিলেন এবং নিজেকে তৈরি করছিলেন সেই ছবির জন্য। বাংলাদেশে গিয়ে শুট করতে হবে জেনে খুব খুশিই ছিলেন তিনি। কিন্তু নিয়তির খেলা।
‘বেহলার ফ্ল্যাটে অগিদগ্ধ অভিনেত্রী মহুয়া রায়চৌধুরী। হাসপাতালে মৃত্যুর সঙ্গে লড়ছেন তিনি।’ সালটা ছিল ১৯৮৫। জুলাই মাস। সংবাদপত্রের প্রথম পাতার শিরোনামই ছিল মহুয়াকে নিয়ে। মহুয়ার এই খবর পেয়ে আকাশ ভেঙে পড়েছিল টলিপাড়ায়। অনুরাগীরা তো হতবাক। এমন ‘সোনার প্রতিমা’ নায়িকার সঙ্গে এ কী ঘটল! চোখে জল মহুয়ার বন্ধুবান্ধবের। এতকিছুর মাঝেও মহুয়াকে নিয়ে টলিপাড়ায় কানাঘুষো শুরু হয়েছিল। মহুয়ার অগ্নিদগ্ধ হওয়ার ঘটনা কি দুর্ঘটনা? নাকি আত্মহত্যা? নাকি খুন করা হয়েছে তাঁকে? মৃত্যুর ৪০ বছর পরেও, মহুয়া রায়চৌধুরীকে নিয়ে রহস্য ও গুঞ্জনের শেষ নেই।

