অবশেষে ড্রাইভার-নিরাপত্তারক্ষী বিতর্কে মুখ খুললেন কাঞ্চন মল্লিক। ৬ মার্চ (বুধবার) কাঞ্চন মল্লিক-শ্রীময়ী চট্টরাজের বিয়ের রিসেপশনকে কেন্দ্র করে যে অনুষ্ঠান ছিল, তাতে ড্রাইভার এবং নিরাপত্তারক্ষীদের প্রবেশের ক্ষেত্রে ছিল ‘না’, অর্থাৎ নিষেধাজ্ঞা। ভেন্যুতে ঢোকার মুখেই বড় প্ল্যাকার্ডে লেখা ছিল: “Please! Press And Personal Securities And Drivers Are Not Allowed. Inconvenience Is Regretted”, যার বাংলা অনুবাদ করলে হয়, “প্লিজ়! সংবাদমাধ্যম, ব্যক্তিগত নিরাপত্তারক্ষী এবং গাড়ির চালকদের প্রবেশ নিষিদ্ধ…।” বিষয়টিতে প্রচণ্ড আঘাত পেয়েছেন ড্রাইভার, নিরাপত্তারক্ষীরা। TV9 বাংলার কাছে ক্ষোভ উগরে দিয়েছেন প্রসেনজিৎ চট্টোপাধ্যায়ের নিরাপত্তারক্ষী রাম সিং। কাঁপা-কাঁপা গলায় বলেছেন, “কুকুর-বিড়ালের পর্যায়ে ফেলে দেওয়া হয়েছে আমাদের।” প্ল্যাকার্ডের এই লেখাটি দেখে অভিনেত্রী শ্রীলেখা মিত্রর মনে পড়ে গিয়েছে ‘ব্রিটিশ শাসন’-এর কথা, যখন ব্রিটিশদের নির্মিত ক্লাবের বাইরে লেখা থাকত ‘INDIANS AND DOGS ARE NOT ALLOWED’ অর্থাৎ ভারতীয় এবং কুকুরের প্রবেশ নিষিদ্ধ (শ্রীলেখা তাঁর ফেসবুক পোস্টে উল্লেখ করেছেন একথা)।
অভিনেতা কাঞ্চন মল্লিক ২০২১ সালের বিধানসভা নির্বাচনে বিপুল ভোটে জিতে উত্তরপাড়ার তৃণমূল বিধায়ক হয়েছেন। ৬ মার্চ ছিল কাঞ্চন ও শ্রীময়ীর রিসেপশনের পার্টি। পার্টি আয়োজিত হয় মধ্য কলকাতার ক্যামাক স্ট্রিট অঞ্চলের ঐতিহ্যবাহী একটি গ্যালারিতে। ভেন্যুতে ঢোকার মুখেই বড় প্ল্যাকার্ডে লেখা “Please! Press And Personal Securities And Drivers Are Not Allowed. Inconvenience Is Regretted.” এই কথাটার বাংলা অনুবাদ করলে হয়, “প্লিজ়! সংবাদমাধ্যম, ব্যক্তিগত নিরাপত্তারক্ষী এবং গাড়ির চালকদের প্রবেশ নিষিদ্ধ…।” এমন অপমান করার পর TV9 বাংলাকে কী বললেন কাঞ্চন?
TV9 বাংলাকে দেওয়া কাঞ্চন মল্লিকের বিবৃতি:
“আমি কেন টার্গেট হয়েছি, জানি না। আপনারা সকলেই দেখেছেন আমার রিসেপশনের কার্ড। সেখানে কোত্থাও, কোনও জায়গায়, কোনওভাবে লেখা নেই প্রেস, ড্রাইভার, কিংবা নিরাপত্তারক্ষীরা আসতে পারবেন না। এটা আমার শিক্ষা, সহবতে লিখতেই পারি না। আপনি হয়তো জানেন, ভেন্যুর একটা ডেকোরাম থাকে। যেখানে ২০০ লোকের জায়গা হয়, সেখানে তো আমি ৪০০ লোককে জায়গা দিতে পারি না। খেয়াল করে দেখুন, সেলিব্রিটি এবং রাজনীতিকরা এলে তাঁদের সঙ্গে অনেক বাউন্সার এবং আরও অনেকে আসেন। তাতে তিনটে কথা বলে ঢোকা ভীষণ সহজ: ‘আমি প্রেস (অর্থাৎ সংবাদমাধ্যম)’, ‘আমি ড্রাইভার’, ‘আমি নিরাপত্তারক্ষী’। ভেন্যুতে আমরা বলেছিলাম, আপনারা দয়া করে বলবেন, যাঁরা-যাঁরা আসছেন আমন্ত্রিতদের সঙ্গে, তাঁরা ফার্স্ট ফ্লোরে অপেক্ষা করবেন, বাকিরা উঠে আসবেন। গেস্ট লিস্টেরও ব্যবস্থা রাখা হয়েছিল ভেন্যুতে। এবং তাঁরা (এক্ষেত্রে ভেন্যু কর্তৃপক্ষ) সেটা বুঝে কী লিখেছেন, আমি জানিই না। আমি ব্যক্তিগতভাবে কাউকে অপমান করিনি অনুষ্ঠানে। কেউ বলতে পারবেন না দূর-দূর করে তাড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। এবার যদি কেউ সেটাকে খুঁচিয়ে-খুঁচিয়ে অন্য মানে তৈরি করেন, কিছুই তো করতে পারব না। আমার কাছে কেয়ার গিভার মানুষ, ড্রাইভার মানুষ, পাইলট মানুষ, নিরাপত্তারক্ষীরা মানুষ, আমার কাছে মিডিয়ার লোকেরাও মানুষ। আমি তাঁদের নিজে থেকে উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে একেবারেই অপমান করতে চাইনি। এই সমস্ত কিছুতে আমার কোনও দায় নেই। আমি কিচ্ছু লিখতে বলিনি। তা-ও বলছি, তাতে যদি কারও খারাপ লেগে থাকে, আমি তাঁদের কাছে আন্তরিকভাবে ক্ষমাপ্রার্থী। ভেন্যুর তরফে কাজটা করা হয়েছে। সকাল থেকে সেই নিয়ে আমার সঙ্গে বাকবিতণ্ডা চলছে…” (প্রতিবেদকের সঙ্গে কাঞ্চনের কথোপকথনের সময় বৃহস্পতিবার, ৭ মার্চ দুপুর ১টা ০৬ মিনিটে)